Thank you for trying Sticky AMP!!

চতুর্থ শ্রেণির পদে আবেদন ফি ৫৫০, চাকরিপ্রার্থীদের ক্ষোভ

রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ৫ম থেকে ২০তম গ্রেডে ১৩টি পদে জনবল নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। এসব পদে ২১ জন নেওয়া হবে। প্রার্থীদের কাছ থেকে অনলাইনে আবেদনপত্র চাওয়া হয়েছে। তবে প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণির সব পদেই আবেদন ফি সরকার নির্ধারিত ফির চেয়ে দ্বিগুণ থেকে চার গুণ বেশি চাওয়া হয়েছে। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন চাকরিপ্রার্থীরা।

বিজ্ঞপ্তিতে দেখা যায়, পঞ্চম গ্রেডের (প্রথম শ্রেণি) উপপরিচালক (হিসাব) পদে টেলিটকের সার্ভিস চার্জসহ আবেদন ফি চাওয়া হয়েছে ১ হাজার ৩২০ টাকা। নবম গ্রেডের (প্রথম শ্রেণি) পদগুলোর জন্য আবেদন ফি ধরা হয়েছে ১ হাজার ১০০ টাকা, দশম গ্রেডের (দ্বিতীয় শ্রেণি) জন্য ৮৮০ টাকা, ১১তম থেকে ১৬তম গ্রেডের (তৃতীয় শ্রেণি) জন্য ৬৬০ টাকা ও ২০তম গ্রেডের (চতুর্থ শ্রেণি) জন্য টেলিটকের সার্ভিস চার্জসহ আবেদন ফি চাওয়া হয়েছে ৫৫০ টাকা।

টাকা ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় নিয়োগ হয় না, এটা যেন নিয়ম হয়ে গেছে। এমনিতেই ছোট পদ, তারপরও এত বেশি আবেদন ফি অযৌক্তিক।
আশীষ চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা আরেকজন চাকরিপ্রার্থী

নিজেদের ইচ্ছেমতো যেন কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠান সরকারি চাকরিতে প্রার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত আবেদন ফি আদায় না করতে পারে এ জন্য গত বছরের সেপ্টেম্বরে সরকারি সব চাকরির (ক্যাডার পদ বাদে) জন্য আবেদন ফি নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অধিদপ্তর, পরিদপ্তর, দপ্তর ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের চাকরির জন্য এই ফি প্রযোজ্য হবে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছিল, ৯ম গ্রেড বা এর বেশি গ্রেডভুক্ত (নন-ক্যাডার) পদে আবেদন ফি ৬০০ টাকা, ১০ম গ্রেডের পদে আবেদন ফি ৫০০ টাকা, ১১তম থেকে ১২তম গ্রেডের জন্য ৩০০ টাকা, ১৩তম থেকে ১৬তম গ্রেডের জন্য ২০০ টাকা ও ১৭তম থেকে ২০তম গ্রেডের জন্য আবেদন ফি ১০০ টাকা।

প্রথম শ্রেণির চাকরির জন্য সরকার নির্ধারিত আবেদন ফি ৬০০ টাকা। অথচ এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন ফি চাওয়া হয়েছে দ্বিগুণের বেশি ১ হাজার ৩২০ টাকা। দ্বিতীয় শ্রেণির পদে আবেদন ৫০০ টাকার বদলে চাওয়া হয়েছে ৮৮০। তৃতীয় শ্রেণির পদেও দ্বিগুণের বেশি আবেদন ফি চাওয়া হয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি আবেদন ফি চাওয়া হয়েছে চতুর্থ শ্রেণির অফিস সহায়ক পদে। এ পদের জন্য সরকার নির্ধারিত ফি ১০০ টাকা হলেও বিশ্ববিদ্যালয়টি চতুর্থ শ্রেণির পদে আবেদন ফি চেয়েছে সরকার নির্ধারিত ফির চার গুণ বেশি।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা চাকরিপ্রার্থী মাসুম আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, সরকার সব চাকরির আবেদন ফি নির্দিষ্ট করে দিলেও অনেক প্রতিষ্ঠান মানছে না। বেকারদের প্রতি ন্যূনতম সহানুভূতি থাকলে কোনো প্রতিষ্ঠান চতুর্থ শ্রেণির পদে ৫০০ টাকা আবেদন ফি চাইতে পারে না। বিশ্ববিদ্যালয় নিয়োগ কমিটি বেকারদের কাছ থেকে বেশি টাকা আদায়ের জন্য এত বেশি ফি ধরেছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা আরেকজন চাকরিপ্রার্থী আশীষ চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, টাকা ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় নিয়োগ হয় না, এটা যেন নিয়ম হয়ে গেছে। এমনিতেই ছোট পদ, তারপরও এত বেশি আবেদন ফি অযৌক্তিক।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ ইউসুফ প্রথম আলোকে বলেন, বিজ্ঞপ্তিটি করোনার আগের। সে সময় করোনার কারণে নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়নি। এ কারণে বিজ্ঞপ্তিটি আগে যেভাবে ছিল, সেভাবেই আবার বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশ করা হয়েছে।

আবেদন ফি বেশি নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে রেজিস্ট্রার বলেন, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরির পরীক্ষা নেওয়ার মতো কোনো অবকাঠামো নেই। পরীক্ষা নিতে বিভিন্ন কেন্দ্র ভাড়া করতে হবে। এতে অনেক খরচ হয়ে যাবে। যেহেতু পরীক্ষাসংক্রান্ত ব্যয় বেশি, তাই আবেদন ফিও বেশি।’