
হাঙ্গেরি সরকার নানা বৃত্তি দেয় বিশ্বের বিভিন্ন শিক্ষার্থীদের। এমন একটি বৃত্তির কেতাবি নাম স্টাইপেন্ডিয়াম হাঙ্গেরিকাম স্কলারশিপ। এ স্কলারশিপে ২০২৬-২৭ শিক্ষাবর্ষের জন্য আবেদন আহ্বান করা হয়েছে। বাংলাদেশসহ বিশ্বের নানা দেশের শিক্ষার্থীরা এ বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন। এ স্কলারশিপের আওতায় স্নাতক, স্নাতকোত্তর এবং ডক্টরাল প্রোগ্রামে উচ্চশিক্ষার সুযোগ পাবেন শিক্ষার্থীরা। স্টাইপেন্ডিয়াম হাঙ্গেরিকামের ওয়েবসাইট থেকে আবেদন ফরম সংগ্রহ করে আবেদন করা যাবে। প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে শতাধিক শিক্ষার্থী যোগ্যতা পূরণ সাপেক্ষে এ স্কলারশিপ পাবেন।
স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও ডক্টরাল-এ বৃত্তির জন্য ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষে ৫৭ হাজার জন আবেদন করেছিলেন। এদের মধ্য থেকে সারা বিশ্বের ৪ হাজার ৫০০ শিক্ষার্থী স্টাইপেন্ডিয়াম হাঙ্গেরিকাম স্কলারশিপ পেয়েছিলেন। এবারের এ বৃত্তির জন্য আবেদন করা যাবে ২০২৬ সালের ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত। ওই দিন সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত আবেদনের সুযোগ পাবেন বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা।
হাঙ্গেরি সরকার ২০১৩ সাল থেকে স্টাইপেন্ডিয়াম হাঙ্গেরিকাম স্কলারশিপ দিয়ে আসছে। ২০১৯ সালে বাংলাদেশে চালু হয় এই স্কলারশিপ। এই স্কলারশিপের অধীন টিউশন ফি সম্পূর্ণ ফ্রি। পাশাপাশি পাওয়া যাবে স্বাস্থ্যবিমাসহ নানা সুযোগ। তবে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট, গ্র্যাজুয়েট ও ডক্টরাল—তিনটির যেকোনো একটিতে আবেদন করতে পারবেন শিক্ষার্থীরা। দেশটির ৩০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করা যাবে এ বৃত্তির আওতায়।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্যতম দেশ হাঙ্গেরি। দেশটির রাজধানী বুদাপেস্টসহ অন্য বড় শহরের মধ্যে রয়েছে দেব্রেসেন আর মিসকালো। শুধু হাঙ্গেরি নয়, ইউরোপের রাজনৈতিক, বাণিজ্যিক, সামাজিক ও যোগাযোগব্যবস্থার কেন্দ্রস্থল বুদাপেস্ট। এ ছাড়া এ দেশের অধিকাংশ জনবসতি বিখ্যাত দানিউব নদীর কূল ঘেঁষে গড়ে উঠেছে। হাঙ্গেরি সেনজেনভুক্ত দেশ হওয়ায় ইউরোপের ২৫টি দেশে ভিসা ছাড়াই ভ্রমণ করার সুযোগ রয়েছে। এ ছাড়া হাঙ্গেরির ৯৯ শতাংশ মানুষ ইংরেজি ভাষা জানে এবং এ ভাষায় কথা বলতে পারে।
হাঙ্গেরির পেকস বিশ্ববিদ্যালয় দেয় স্টাইপেন্ডিয়াম হাঙ্গেরিকাম স্কলারশিপ। এ বৃত্তির ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, প্রতিবছর পাঁচটি মহাদেশের প্রায় ৮০টি দেশের পাঁচ হাজারের বেশি বিদেশি শিক্ষার্থী এ বৃত্তি নিয়ে পড়াশোনা করছেন। এই বৃত্তির লক্ষ্যে হলো হাঙ্গেরিতে বিদেশি শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বাড়ানো এবং হাঙ্গেরির উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে শীর্ষ বিদেশি শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করতে উৎসাহিত করা।
১. আন্ডারগ্র্যাজুয়েট, মাস্টার্স অ্যান্ড ডক্টরাল প্রোগ্রামে মোট ১৪০ টি বৃত্তি প্রদান করা হবে। নিউক্লিয়ার এনার্জেটিকস-এর জন্য (আন্ডারগ্র্যাজুয়েট/মাস্টার্স/ডক্টরাল পর্যায়ে) ৩০টি বৃত্তি সংরক্ষিত থাকবে।
২. আন্ডারগ্র্যাজুয়েট ও মাস্টার্স প্রোগ্রামে ভর্তির ক্ষেত্রে ৩১ আগস্ট, ২০২৬ তারিখে ন্যূনতম বয়স ১৮ (আঠারো) হতে হবে; অর্থাৎ প্রার্থীর জন্মতারিখ ৩১ আগস্ট, ২০০৮ বা তার পূর্বে হতে হবে (ব্যতিক্রম: Dance Study Programmes)।
৩. প্রার্থীর সকল সনদপত্রের প্রথম শ্রেণির সরকারি কর্মকর্তা কর্তৃক সত্যায়িত কপি সংযুক্ত করতে হবে (সাময়িক সনদপত্র গ্রহণযোগ্য নয়)।
৪. বাংলাদেশ ব্যতীত অন্য দেশে/বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে তাদের ডিগ্রির সমমানের সার্টিফিকেটের কপি জমা দিতে হবে।
৫. হাঙ্গেরি কর্তৃপক্ষের কাছে অনলাইন আবেদন ।
৬. https://apply.stipendiumhungaricum.hu/ লিংকের মাধ্যমে আবেদন করার সর্বশেষ তারিখ ১৫ জানুয়ারি ২০২৬, ২টা (সেন্ট্রাল ইউরোপীয় টাইম) (বাংলাদেশ সময়: সন্ধ্যা ৭ টা)।
৭. বাংলাদেশ সরকারের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনলাইন আবেদন করার লিংক http://202.4.112.150:3030/ । এ অনলাইনের লিংকটি ১৫ জানুয়ারি, ২০২৬ সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।
১.
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অনলাইন লিংকের মাধ্যমে পূরণকৃত আবেদনপত্রের হার্ড কপি এবং সকল শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ, মার্কশিট ও অন্যান্য ডকুমেন্ট বাংলাদেশ সচিবালয়ের ২নং গেট সংলগ্ন অভ্যর্থনা কক্ষে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত জমা দিতে হবে। উক্ত বক্স ব্যতীত অন্য কোথাও জমা দিলে সেসব আবেদন বিবেচনা করা হবে না।
২.
খামের ওপর আবশ্যিকভাবে প্রেরক, প্রাপক (সচিব, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সচিবালয়, ঢাকা), অনলাইন আবেদনের আইডি/ ট্র্যাকিং নম্বর/ এবং প্রোগ্রামের নাম উল্লেখ করতে হবে। হার্ড কপি মন্ত্রণালয়ে জমাদানের শেষ তারিখ ১৬ জানুয়ারি ২০২৬ বিকেল ৫ টা।
৩.
প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে ভাষা (ইংলিশ) দক্ষতার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হবে।
৪.
বিশেষভাবে উল্লেখ্য, কোনো প্রার্থী একাধিক প্রোগ্রামে আবেদন করলে তাঁর আবেদন বাতিল বলে গণ্য হবে। অর্থাৎ আন্ডারগ্র্যাজুয়েট/ মাস্টার্স /ডক্টরাল যে কোনো একটি প্রোগ্রামের জন্য আবেদন করা যাবে। অসম্পূর্ণ আবেদন গ্রহণযোগ্য নয়।
১.
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনলাইন ফরমে সাবমিট বাটনে ক্লিক করার পর প্রার্থীর প্রদত্ত ইমেইল ঠিকানায় ট্র্যাকিং নম্বর ও পাসওয়ার্ড (Tracking Number ও Password) চলে যাবে। প্রার্থী ইমেইল ওপেন করে অ্যাকটিভ লিংকে ক্লিক করলে আবেদনটি অ্যাকটিভ হবে।
২.
ওয়েলকাম পেজ ফোন মেন্যুতে (Welcome page 4 Menu) অ্যাপ্লিকেশন লগইন-এ ক্লিক করে ট্র্যাকিং নম্বর ও পাসওয়ার্ড প্রদান করলে আবেদন পত্রটি এডিট অ্যাপ্লিকেশন ও প্রিন্ট প্রিভিউ (Print Preview) এর মাধ্যমে প্রয়োজনীয় এডিট ও প্রিন্ট করা যাবে। তবে Proposed Program of Study আবেদন অনুযায়ী হবে এবং তা এডিট করার সুযোগ নেই।
৩.
ই-মেইল সঙ্গে সঙ্গে না পাওয়া গেলে Spam/Junk mail-এ চেক করতে হবে।
৪.
প্রার্থীকে Percentage (%) of mark সঠিকভাবে লিখতে হবে এ ক্ষেত্রে অনলাইন আবেদনের নিচে লাল কালিতে উদাহরণ অনুসরণ করা যেতে পারে।
৫.
আবেদনপত্রের প্রিন্ট কপিসহ চাহিত সকল কাগজপত্র জমা দিতে হবে।
৬.
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনলাইন ফরম পূরণ সম্পর্কিত কোনো সমস্যার জন্য Scholar.banbeis@gmail.com -এ মেইলে যোগাযোগ করা যাবে।
সম্পূর্ণ টিউশন ফি প্রদান করবে;
ডরমিটরিতে বিনা মূল্যে আবাসনের সুবিধা;
স্বাস্থ্যবিমা সুবিধা দেবে;
স্নাতক ও স্নাতকোত্তর চলাকালে বছরে দেবে ৪৩ হাজার ৭০০ হাঙ্গেরিয়ান ফোরিন্ট;
পিএইচডির জন্য দেবে ১ লাখ ৪০ হাজার হাঙ্গেরিয়ান ফোরিন্ট।
স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি প্রোগ্রাম অফার করা হয় এ বৃত্তিতে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে: চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যবিজ্ঞান, প্রাকৃতিক বিজ্ঞান, সামাজিক বিজ্ঞান, ব্যবসা ও অর্থনীতি, কলা ও প্রকৌশল।
আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী হতে হবে;
শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ হতে হবে;
ব্যাচেলর ডিগ্রির জন্য আবেদন করতে ১২ বছরের স্কুল সার্টিফিকেট লাগবে;
স্নাতকোত্তরের জন্য স্নাতক ডিগ্রি থাকতে হবে;
পিএইচডি ডিগ্রির জন্য স্নাতকোত্তর ডিগ্রি থাকতে হবে।
পূর্ণাঙ্গ জীবনবৃত্তান্ত (সিভি);
একাডেমিক সব সনদ ও ট্রান্সক্রিপ্ট;
রিকমেন্ডেশন লেটার;
স্টেটমেন্ট অব পারপাস;
গবেষণা প্রস্তাব (স্নাতক)।