Thank you for trying Sticky AMP!!

সিনেমা ২০১৯: ঢাকার সিনেমা নিয়ে আলোচনা কমছে

ব্যবসায়িকভাবে এ বছরের একমাত্র সফল ও আলোচিত ছবি পাসওয়ার্ড–এর গানের দৃশ্যে বুবলী ও শাকিব খান। ছবি: সংগৃহীত

ঢালিউডের ছবি নিয়ে অনেক আশার বাণী শোনা যায়। তবু ছবির মানের বা ব্যবসার উন্নতি হয় না। ঢাকার সিনেমার চলতি বছরটা ভালো যায়নি। মুক্তি পাওয়া ছবির সংখ্যা সেই অর্থে বাড়েনি। বেশির ভাগ ছবিই দর্শককে স্পর্শ করতে পারেনি। মুনাফা তো দূরের কথা, বিনিয়োগের পঞ্চাশ থেকে সত্তর শতাংশ অর্থই ফেরেনি সেসব ছবি থেকে।

চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মতে, দুই–একটা ছবি ছাড়া প্রায় সব ছবিতে লোকসান হয়েছে। কোনো কোনো ছবিতে লোকসানের পরিমাণ ভয়াবহ। কারণ হিসেবে তাঁরা মনে করছেন ছবির গল্প ও নির্মাণে দুর্বলতা, পরিকল্পনাহীন কাজ ও হলের সংখ্যা কমে যাওয়াকে। এসব কারণেই ছবিগুলোর প্রতি আগ্রহ দেখায়নি দর্শক।

২০১৮ সালে মুক্তি পেয়েছে ৩৬টি ছবি। এ বছর এ পর্যন্ত মুক্তি পেয়েছে ৩৮টি। ২৭ ডিসেম্বর মায়া: দ্য লস্ট মাদার, কাঠবিড়ালী ও পঞ্চসঙ্গী নামে তিনটি ছবির মুক্তির কথা রয়েছে। প্রযোজক–পরিবেশক সমিতির হিসাব অনুযায়ী, এ বছর ৩৮টি ছবির মধ্যে পাসওয়ার্ড ছাড়া কোনো ছবির বিনিয়োগই ফেরত আসেনি। নোলক, মনের মত মানুষ পাইলাম না, সাপলুডু, যদি একদিন, ফাগুন হাওয়ায় ছবিগুলো নিয়ে দর্শকমহলে আলোচনা হয়েছে, তবে বিনিয়োগের টাকা উঠে আসার খবর পাওয়া যায়নি। প্রযোজক–পরিবেশক ও প্রেক্ষাগৃহের মালিকেরা মনে করছেন, এভাবে চলতে থাকলে যে কজন দর্শক বাংলা ছবি দেখেন, তাঁদেরও হারাতে হবে। বন্ধ হয়ে যাবে বাকি প্রেক্ষাগৃহগুলো।

প্রযোজক ও প্রদর্শক সমিতির সাবেক সভাপতি ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ বলেন, ‘সিনেমার ব্যবসা খুবই খারাপ যাচ্ছে। হলের কর্মচারীদের গত মাসের বেতন পুরোটা দিতে পারিনি। এ বছর পাসওয়ার্ড ছাড়া কোনো ছবিই ব্যবসা করতে পারেনি।’ গত বছর সুপার হিরো ও মনে রেখো নামে দুটি ছবি প্রযোজনা করে বড় অঙ্কের লোকসান গুনতে হয়েছে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান হার্টবিট প্রোডাকশনকে। ফলে এ বছর কোনো ছবিতে বিনিয়োগ করেনি তারা। প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার তাপসী ফারুক জানিয়েছেন, সরকারি হস্তক্ষেপ ছাড়া সিনেমা বাঁচানোর আর কোনো পথ খোলা নেই। তিনি বলেন, ‘সরকার যদি আগামী তিন বছর ভালো প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান বা ভালো প্রযোজকদের ছবি নির্মাণে প্রণোদনা দেয় এবং তা দিয়ে বছরে ১০ থেকে ১৫টি ভালো ছবি নির্মাণ করা যায়, তাহলেই আমাদের সিনেমা বেঁচে যাবে। চলচ্চিত্রের এই ডুবন্ত জাহাজকে একমাত্র সরকারই পারে তীরে তুলতে। তারপর প্রযোজক ও দর্শকেরা সেটাকে টেনে নিয়ে যেতে পারবেন।’

পাসওয়ার্ড ছবির প্রযোজক ছিলেন নায়ক শাকিব খান। তিনি মনে করেন, যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ঢাকায় সিনেমা তৈরি হচ্ছে না। এ কারণেই দর্শক সিনেমা নিয়ে আগ্রহ কম দেখায়। তিনি বলেন, ‘এখানে বেশির ভাগ ছবিই শুটিং ফ্লোরে তৈরি হয়। আগে টেবিলে বসে পরিকল্পনা করতে হবে, এরপর শুটিং। তা না হলে কোনোভাবেই সিনেমার এই দুর্দশা কাটবে না। বাংলাদেশের মানুষ অল্পতে খুশি থাকেন। আমাদের ছবিগুলো যদি ন্যূনতম মানেরও হতো, তবু দর্শক সেগুলো দেখতেন।’