‘তেরে নাম’ সিনেমায় ভূমিকা চাওলা। আইএমডিবি
‘তেরে নাম’ সিনেমায় ভূমিকা চাওলা। আইএমডিবি

‘তেরে নাম’ অভিনেত্রী কেন হারিয়ে গেলেন

২০০৩ সালে মুক্তি পেয়েছিল সালমান খান অভিনীত ‘তেরে নাম’। ছবিটি সুপারহিট হয়েছিল, গানগুলোও বাজিমাত করেছিল। তবে এই ছবির সঙ্গে দর্শকের মনে জায়গা করে নিয়েছিলেন এক নতুন মুখ—ভূমিকা চাওলা। সাদাসিধে এক কলেজছাত্রীর ভূমিকায় তিনি ছিলেন অনবদ্য। মনে হয়েছিল, বলিউডে এক নতুন নায়িকার যুগ শুরু হলো। কিন্তু হলো উল্টোটা—কিছুদিন পরেই যেন আড়ালে মিলিয়ে গেলেন এই প্রতিভাবান অভিনেত্রী। জন্মদিন উপলক্ষে আলো ফেলা যাক ভূমিকার ক্যারিয়ারে।

১৯৭৮ সালের ২১ আগস্ট নয়াদিল্লিতে জন্ম ভূমিকার। সেনা অফিসারের মেয়ে হওয়ায় শৈশব কেটেছে নানা শহরে। মুম্বাইয়ে আসার পর বিজ্ঞাপন আর টেলিভিশন দিয়ে শুরু হয় অভিনয়ের যাত্রা।

‘তেরে নাম’ সিনেমার দৃশ্য। আইএমডিবি

দক্ষিণে তাঁর প্রথম ছবি ‘ইউভাকুদু’ (২০০০) তাঁকে এনে দেয় ফিল্মফেয়ার পুরস্কার। এরপর ‘খুশি’, ‘ওক্কাডু’, ‘সিমহাদ্রি’র মতো ছবিতে তিনি হয়ে ওঠেন তেলুগু দর্শকের প্রিয় নায়িকা।

বলিউডে ‘তেরে নাম’ সিনেমা ভূমিকা চাওলাকে একধাক্কায় আলোচনায় আনে। দর্শকেরা ভেবেছিলেন, এবার তিনি বহুদিনের জন্য হিন্দি ছবিতে জায়গা করে নেবেন। সালমান খানের সঙ্গে তাঁর জুটি তখন আলোচনায় শীর্ষে। কিন্তু বলিউডের যাত্রা এখানেই থেমে যায়। শোনা যায়, ‘মুন্নাভাই এমবিবিএস’, ‘জব উই মেট’, এমনকি ‘বাজিরাও মস্তানি’র মতো ছবির প্রাথমিক অফার গিয়েছিল ভূমিকার কাছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এই ছবিগুলো চলে যায় অন্য নায়িকাদের হাতে, যেখানে দর্শকেরা দেখেছেন বিদ্যা বালান, কারিনা কাপুর বা দীপিকা পাড়ুকোনকে।

‘তেরে নাম’ সিনেমার দৃশ্য। আইএমডিবি

বলিউডের প্রতিযোগিতামূলক দুনিয়ায় যেখানে সঠিক সময় আর সঠিক সুযোগ ধরতে পারাই সাফল্যের চাবিকাঠি, সেখানে ভূমিকা চাওলা পিছিয়ে পড়েন।

কেন টিকতে পারলেন না
ভূমিকার হারিয়ে যাওয়ার পেছনে কয়েকটি কারণ নিয়ে আলোচনা হয়। এর মধ্য অন্যতম ইন্ডাস্ট্রির রাজনীতি। প্রযোজক-পরিচালকদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক না থাকলে বলিউডে টিকে থাকা কঠিন। ভূমিকার সেটা ছিল না, কাজের জন্য তিনি মরিয়াও ছিলেন না। তাই ধীরে ধীরে আড়ালে চলে যান এই অভিনেত্রী। ‘তেরে নাম’-এর পর তিনি প্রায় একই ধাঁচের শান্ত–সাদাসিধে চরিত্রের প্রস্তাবই বেশি পান। বহুমুখী চরিত্রে সুযোগ পাননি। এটাও তাঁর পিছিয়ে পড়ার আরেকটি কারণ। এ ছাড়া ভূমিকা যখন কাজ করেছেন, তখন বলিউডে ছিল তীব্র প্রতিযোগিতা। সেই সময়ের বলিউডে কারিনা কাপুর, প্রীতি জিনতা, রানী মুখার্জি, পরে আসা প্রিয়াঙ্কা চোপড়ারা একের পর এক সফল ছবিতে কাজ করে বাজার দখল করে ফেলেন।

যদিও বলিউডে খুব বেশি ছবি করতে পারেননি, দক্ষিণ ভারতীয় ছবিতে নিয়মিত কাজ করেছেন ভূমিকা। ‘খুশি’, ‘সিমহাদ্রি’, ‘সিলুন্নু ওরু কাধাল’-এর মতো ছবিতে সাফল্য পান। সুশান্ত সিং রাজপুতসহ আরও অনেক অভিনেতার সঙ্গে তাঁকে পরবর্তী সময়ে হিন্দি ছবির বিশেষ চরিত্রেও দেখা গেছে।

আজও যখন ‘তেরে নাম’ ছবির কথা মনে পড়ে, তখন সালমান খানের সঙ্গে ভেসে ওঠে সেই শান্ত–সাদাসিধে নায়িকার মুখ। এখন নিয়মিত কাজ না করলেও মাঝেমধ্যে বিশেষ চরিত্রে বা আঞ্চলিক ছবিতে তাঁকে পাওয়া যায়।

তথ্যসূত্র: ইন্ডিয়াডটকম