ক্রিকেটার থেকে অভিনেতা—সলিল আনকোলার জীবনের এই যাত্রাপথের আড়ালে লুকিয়ে ছিল দীর্ঘ এক অন্ধকার অধ্যায়। নব্বইয়ের দশকের শেষ দিকে ক্রিকেট ক্যারিয়ার থেমে যাওয়ার পরই তিনি ক্রমে মদের নেশায় ডুবে যান। সম্প্রতি ইউটিউবার ভিকি লালওয়ানির সঙ্গে আলাপে সলিল জানান, এই নেশা তাঁকে এমন জায়গায় নিয়ে গিয়েছিল যে একটানা ২৪ ঘণ্টা জেগে থাকলে তিনি ২৪ ঘণ্টাই মদ খেতেন। তাঁর কথায়, ‘ওটাই ছিল আমার পালানোর পথ।’
ক্রিকেট ছাড়ার পর ‘কেহতা হ্যায় দিল’, ‘কোরা কাগজ’, ‘বিকরাল অউর গবরাল’সহ বিভিন্ন ধারাবাহিকে অভিনয় করলেও ব্যক্তিজীবনে চলছিল ভয়াবহ লড়াই। ১৯৯৯ থেকে ২০১১—টানা ১২ বছর তিনি ক্রিকেট দেখা পুরোপুরি বন্ধ রেখেছিলেন, কারণ খেলা তাঁকে কষ্ট দিত।
পরিবার–বন্ধুরা চেষ্টা করলেও সলিল নিজেই মনে করেন, থামার সিদ্ধান্তটা শেষ পর্যন্ত ব্যক্তিগতই। বহুবার পুনর্বাসন কেন্দ্রে গিয়েও লাভ হয়নি। তিনি জানান, ২০১১ সালের বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল ও ফাইনাল তিনি দেখেছিলেন পুনর্বাসন কেন্দ্রে বসেই—দীর্ঘ এক যুগ পর।
মাদকাসক্তির ভয়াবহতার কথা বলতে গিয়ে সলিল বলেন, ‘অনেকে ভাবে, এটা মজা করার অভ্যাস। এটা অভ্যাস নয়, এটা একটা রোগ।’ এরপরই যোগ করেন, ‘ঈশ্বর দয়ালু না হলে আমি ২০১৪ সালেই মারা যেতাম। তিনবার আমাকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছিল। মোট ১২ বার আইসিসিইউতে ভর্তি হতে হয়েছে।’
সলিল জানান, তাঁর জীবনে পরিবর্তন আসে দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে পরিচয়ের পর। ফেসবুকে আলাপ হওয়া সেই মানুষটি একজন চিকিৎসক, যিনি তাঁর শারীরিক ও মানসিক অবস্থাটা বুঝে পাশে দাঁড়ান। সেই সমর্থনই তাঁকে অবশেষে নেশামুক্ত হতে সাহায্য করে।
এখন সলিল আবার নিয়মিত অভিনয়ে ফিরেছেন। টেলিভিশন ও চলচ্চিত্র—দুই মাধ্যমেই তিনি কাজ করছেন। সর্বশেষ তাঁকে দেখা গেছে তামিল ছবি ‘পাম্বাট্টম’–এ।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস অবলম্বনে