পারভিন ববি। আইএমডিবি
পারভিন ববি। আইএমডিবি

বলিউড ছেড়ে বিদেশে পাড়ি দিতে চেয়েছিলেন পারভিন ববি, কারণ...

মানসিক অসুস্থতার সঙ্গে দীর্ঘদিন লড়াই করেছেন পারভিন ববি। এমনকি এ সময়ে হিন্দি সিনেমা পুরোপুরি ছেড়ে দেওয়ার কথা ভেবেছিলেন তিনি। তবে ‘অমর আকবর অ্যান্থনি’ বক্স অফিসে দারুণ সফল হওয়ায় আবার ভারতে ফিরে আসেন তিনি।
কবির বেদি ও পারভিন ববির মধ্যে ছিল তুমুল প্রেম। সম্প্রতি এক আলাপচারিতায় কবির বেদি কথা বলেছেন প্রয়াত অভিনেত্রীকে নিয়ে। এই আলাপচারিতায় উঠে আসে পারভিন ববি সম্পর্কে নানা অজানা কথা। কবির বলেন, তিনি পারভিনের মানসিক স্বাস্থ্যের জটিলতা সম্পর্কে জানতে পারেন তাঁর সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানোর পর। সে সময় কবিরের সঙ্গে স্ত্রী প্রতিমা গৌরীর বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছিল। অন্যদিকে অভিনেতা ড্যানি ডেনজংপার সঙ্গে পারভিনের সম্পর্ক শেষ হয়েছিল।

সিদ্ধার্থ কাননের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে কবির বলেন, ‘তাঁর সবচেয়ে বড় ভয় ছিল, যদি ইন্ডাস্ট্রিতে কেউ জেনে ফেলে যে তাঁর মানসিক সমস্যা আছে, তাহলে কেউ আর তাঁকে কাজ দেবে না। আমি যখন লন্ডনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিই, পারভিনও আমার সঙ্গে গিয়েছিলেন। লন্ডনে আমার একটা বাড়ি ছিল, আমি চেয়েছিলাম আমাদের নতুন জীবনটা সেখান থেকেই শুরু হোক। আমি চাইছিলাম তিনি চিকিৎসা নিক, কিন্তু তিনি চাননি কোনো ডাক্তার তাঁর এই অবস্থা জানুক।’

কবির বেদি ও পারভিন ববি। এক্স থেকে

কবির আরও বলেন, পারভিন তখন ইন্ডাস্ট্রিতে যথেষ্ট সম্মান পাচ্ছিলেন না। কবিরের আন্তর্জাতিক খ্যাতি ও বিদেশে তাঁর ক্রমবর্ধমান অবস্থান পারভিনকে আরও অনিরাপদ করে তুলেছিল।

এই সাক্ষাৎকারে উঠে আসে পারভিন ববির ব্যক্তিগত জীবনের চড়াই-উতরাই, যা তাঁর ক্যারিয়ার ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর গভীর প্রভাব ফেলেছিল।
কবির জানান, পারভিন যখন ভারত ছাড়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করে ফেলেছেন তখনই  ‘অমর আকবর অ্যান্থনি’ সুপারহিট হয়। ছবির বিশাল সাফল্যের পর পারভিন আবারও সিনেমায় অভিনয় শুরু করেন।
পারভিন কি কবিরের বিদেশের জনপ্রিয়তা নিয়ে অস্বস্তিতে ছিলেন? এ প্রশ্নের জবাবে কবির বলেন, ‘হ্যাঁ, এটা ঠিক। কারণ ভারতে তখন তিনি বড় তারকা, আর আমি ইউরোপে জনপ্রিয় হয়ে উঠছিলাম। মানুষ সেখানে তাঁকে সেই সম্মান দিচ্ছিল না, যেটা তিনি ভারতে পেতেন।’

পারভিন ববি। আইএমডিবি

স্মৃতিচারণায় কবির আরও বলেন, ইউরোপ সফরের সময় ইতালির কিংবদন্তি অভিনেত্রী জিনা ললোব্রিগিদার সঙ্গে এক পার্টিতে এমনই এক ঘটনা ঘটে, যা পারভিন ও কবিরের মধ্যে দূরত্ব তৈরি করে।

‘জিনা আমাদের স্বাগত জানালেন, বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে পরিচয় করালেন। কিন্তু পার্টি চলাকালীন তিনি শুধু আমার সঙ্গেই কথা বলছিলেন, পারভিনকে সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষা করছিলেন। আমি ভেবেছিলাম ডিনারে গেলে পরিস্থিতি বদলাবে, কিন্তু তা হয়নি। জিনা আমাকে নাচের জন্য আমন্ত্রণ জানালেন, আমরা নাচলাম। আমি খুশি ছিলাম, কিন্তু পারভিন স্পষ্টই বিরক্ত ছিল।’ বলেন কবির।

অভিনেতা আরও জানান ঘটনার এখানেই শেষ হয়নি, ডিনারে বিব্রতকর ঘটনা পরিস্থিতি আরও জটিল করে তোলে। কবির বলেন, ‘এরপর ডিনারে জিনা পারভিনকে উদ্দেশ করে বলেন, “তুমি এখানে কী করছ?” পারভিন জবাব দেন, “না। আমি এখানে আমার প্রেমিকের সঙ্গে এসেছি।” সেই সময় জিনা ছিলেন সিঙ্গেল।’
ঘটনার পর পারভিন ডিনার ছেড়ে চলে যান। কবির বলেন, ‘আমি বুঝতে পারছিলাম, আমি কি থাকব, না ওর সঙ্গে যাব? শেষে আমি পারভিনের সঙ্গে বেরিয়ে আসি। কারণ, কেউ আমার প্রিয় মানুষকে অপমান করুক, সেটা আমি মেনে নিতে পারি না।’
পারভিন ববি ২০০৫ সালে ৫০ বছর বয়সে মারা যান। মৃত্যুর তিন দিন পর তাঁর নিথর দেহ আবিষ্কৃত হয়।

তথ্যসূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, নিউজ ১৮