বাবা মহেশ মাঞ্জরেকর মারাঠি ও বলিউডের খ্যাতনামা অভিনেতা ও নির্মাতা। সেই সূত্রেই মারাঠি ছবি ‘কাকস্পর্শ’–এ শিশুশিল্পী হিসেবে সাইয়ের প্রথম অভিনয়। এরপর ২০১৯ সালে বলিউড সুপারস্টার সালমান খানের বিপরীতে নায়িকা হয়ে বড় পর্দায় আত্মপ্রকাশ। ‘দাবাং ৩’ ছবিতে ‘খুশি চাউতেলা’ চরিত্রে অভিনয় করে মাত্র ১৭ বছর বয়সেই বলিউড পাড়ায় সাড়া ফেলে দেন সাই মাঞ্জরেকর। তবে সালমানের মতো তারকাকে নায়ক হিসেবে পাওয়ার পরও সাইয়ের বলিউড যাত্রা খুব একটা জমেনি। ছয় বছরের ক্যারিয়ারে হাতে গোনা কয়েকটি ছবি মাত্র। তাই ধীরে ধীরে বলিউডের পাশাপাশি দক্ষিণ ভারতীয় সিনেমাতে নিজের অবস্থান গড়ে তুলতে চাইছেন তিনি। সর্বশেষ তাঁকে তেলেগু ছবি ‘অর্জুন সন অব বিজয়ান্তি’–তে দেখা গেছে। সম্প্রতি নিজের অবস্থান ও পরিকল্পনা নিয়ে সংবাদমাধ্যমে বিবৃতি দিয়েছেন সাই।
বিবৃতিতে বলিউড ও দক্ষিণী সিনেমার পার্থক্য নিয়ে সাই বলেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে আমার বিশ্বাস, সিনেমার কোনো ভাষা নেই। কাহিনির মাধ্যমে দর্শকের সঙ্গে কীভাবে সংযোগ তৈরি হয়, সেটাই আসল বিষয়। ভাষাটা আসলে চিরন্তন।’ এখন পর্যন্ত কোনো মারাঠি ছবিতে তাঁকে নায়িকা হিসেবে দেখা যায়নি।
এ প্রসঙ্গে সাইয়ের ভাষ্য, ‘এখন আমি বলিউড ও দক্ষিণ ভারতীয় সিনেমায় কাজ করার দিকে মনোযোগী। তবে ভবিষ্যতে নিশ্চয়ই ভালো কোনো মারাঠি ছবিতে কাজ করতে চাইব। আমাকে যদি চিত্রনাট্য অনুপ্রাণিত করে আর পরিচালকের দৃষ্টিভঙ্গি আত্মবিশ্বাস জোগায়, তবে অবশ্যই কাজ করব।’
আর বলিউড ও দক্ষিণী সিনেমার অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে সাইয়ের মতামত, ‘এই দুই ইন্ডাস্ট্রির কাজের ধরন ও জাদু আলাদা। বলিউডে অসাধারণ চিন্তাভাবনা আর অনন্য কাহিনি তুলে ধরার একটা শৈলী আছে। আর দক্ষিণে দেখেছি অনুশাসন, শিল্পের প্রতি গভীর সম্মান ও আবেগ। এই দুই ইন্ডাস্ট্রি আমাকে আলাদা আলাদাভাবে গড়ে তুলেছে, আমার প্রতিভা প্রকাশের সুযোগ দিয়েছে। নিজেকে ভাগ্যবতী মনে করি যে দুই জায়গাতেই কাজ করার সুযোগ পাচ্ছি। তবে আমি ধৈর্য ধরেই ধীরে ধীরে আগাতে চাই।’
২৩ বছর বয়সী সাই জানান, ইন্ডাস্ট্রির অভিজ্ঞতা তাঁকে দ্রুত পরিণত করেছে, ‘এখানে প্রতিটি পদক্ষেপের দিকে সবার নজর থাকে। ভুল করলে ক্ষমা পাওয়া সহজ নয়। ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে বিষয়গুলো এত গুরুত্ব দিইনি। কিন্তু এখন প্রতিটি ছোট পদক্ষেপের প্রতিই আমি সতর্ক। আমি শিখেছি ধৈর্য, সংযম ও মননশীলতা বাড়াতে হয়। তাড়াহুড়া করে কিছু হয় না। সঠিক নির্বাচনই ক্যারিয়ারকে যথাযথ আকার দেয়। প্রত্যেকের পথ আলাদা, তাই আমি গতির চেয়ে গুণগত মানে বিশ্বাসী।’
বাবা মহেশ মাঞ্জরেকরই তাঁর সবচেয়ে বড় প্রেরণা। ‘আমি কখনো সহজ পথে বা বাবার নাম ভাঙিয়ে সাফল্য পাওয়ার চেষ্টা করিনি’, বলেন সাই। আরেক সাক্ষাৎকারে এ বিষয়ে বাবা মহেশ মাঞ্জরেকরও নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন, ‘সাফল্য সাইকে নিজের পরিশ্রমেই অর্জন করতে হবে। আমি কোনো ছবির জন্য ওর নাম কারও কাছে সুপারিশ করব না। তবে ওর প্রতি আমার শুভকামনা সব সময় আছে, আমি সব সময় ওর পাশে আছি।’