হোটেল পূর্বাণীতে খেতে বসেছেন, হেঁশেল থেকে গরমাগরম লুচি আর তন্দুরি চিকেন পরিবেশন করে গেলেন বেয়ারা। মনভোলানো স্বাদের তন্দুরি চিকেনের সঙ্গে একের পর এক লুচি সাবাড় করতে করতে কৌতূহল থেকে বেয়ারাকে জিজ্ঞাসা করলেন, বাবুর্চি কে? বেয়ারা বললেন, রাজীব হরি ওম ভাটিয়া; নতুন এসেছেন। ‘ওহ’ বলে লুচিতে মনোযোগ দিলেন। বহু বছর পর আপনি জানলেন, সেই লুচি আর তন্দুরি চিকেন বানিয়েছিলেন অক্ষয় কুমার!
সেই রাজীব হরি ওম ভাটিয়াই আজকের বলিউড তারকা অক্ষয় কুমার। ঢাকার পূর্বাণী হোটেল ছেড়ে মুম্বাইয়ের বাসিন্দা তিনি। এই সময়ে বলিউডের প্রভাবশালী অভিনেতাদের একজন অক্ষয়। ২০০৯ সালে ভারত সরকার তাঁকে পদ্মশ্রী সম্মাননায় ভূষিত করেছে।
শুক্রবার ৫৫ পেরিয়ে ৫৬ বছরে পা দিয়েছেন ভারতের পাঞ্জাবে জন্ম নেওয়া এ তারকা। অক্ষয় কুমার হয়ে ওঠার আগে আশির দশকে জীবিকার তাগিদে ঢাকায় এসেছিলেন রাজীব হরি ওম ভাটিয়া। বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে অক্ষয় কুমার নিজেই বলেছেন, তিনি হোটেল পূর্বাণীতে প্রায় ছয় মাস কাজ করেছেন। প্রায় এক দশক আগে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর হইচই পড়ে গিয়েছিল বাংলাদেশে।
হোটেল পূর্বাণীর ব্যবস্থাপক (বিপণন) মোহাম্মদ মাহমুদ হোসেন প্রথম আলোকে জানান, অক্ষয় কুমার চার দশক আগে হোটেল পূর্বাণীতে এসেছিলেন। হোটেলে কিচেনে ছয় মাসের মতো কাজ করেছেন। তবে অক্ষয় কুমারের কোনো নথি তাঁদের কাছে সংরক্ষিত নেই বলে জানালেন মাহমুদ, ‘প্রতি পাঁচ বছর পরপর নথিগুলো স্থানান্তরের ফলে সেগুলো আর সংরক্ষণ করা যায়নি। অক্ষয় কুমার বিষয়টি জানানোর পর আমরা অনেক খোঁজাখুঁজি করেও নথিগুলো পাইনি।’
মাহমুদ হোসেন জানান, হোটেল পূর্বাণী হোটেলের হেঁশেলে প্রধান বাবুর্চির তত্ত্বাবধানে বাবুর্চির কাজ করতেন তিনি। কেবল অক্ষয়ই নন, সেই সময়ে অনেক ভারতীয় হোটেল পূর্বাণীতে কাজ করতেন, তাঁদের কারও সঙ্গে যোগাযোগের সূত্র ধরেই এসেছিলেন তিনি। তাঁর সমসাময়িকদের এখন কেউ আর হোটেলে নেই।
শুধু ঢাকা নয়, কলকাতা, থাইল্যান্ডসহ বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে কাজ করেছেন অক্ষয় কুমার। নব্বইয়ের দশকে সিনেমায় নাম লেখানোর পর ‘খিলাড়ি’ সিনেমা দিয়ে খ্যাতি লাভ করেন তিনি। ‘টয়লেট: এক থা প্রেম কাহিনি’, ‘রুস্তম’, ‘প্যাডম্যান’সহ শতাধিক সিনেমায় অভিনয় করেছেন এ তারকা।