ছবিতে জানা-অজানা কবরী

প্রায় সাড়ে পাঁচ দশক আগে ১৯৬৪ সালে সুভাষ দত্তের ‘সুতরাং’ ছবি দিয়ে চলচ্চিত্রে পা রাখেন কবরী। তারপর একের পর এক ছবি দিয়ে জয় করতে থাকেন দর্শক হৃদয়, হয়ে ওঠেন বাংলা চলচ্চিত্রের মিষ্টি মেয়ে। অভিনয় করেছেন রাজ্জাক, ফারুক, সোহেল রানা, উজ্জ্বল, জাফর ইকবাল ও বুলবুল আহমেদের মতো অভিনেতাদের সঙ্গে। শতাধিক ছবিতে অভিনয় করা কবরী জড়িয়েছেন রাজনীতিতেও। ইতিহাস সৃষ্টি করা বহু ছবিতে অভিনয় তাঁকে নিয়ে গেছে এক ভিন্ন উচ্চতায়। এক ঈর্ষণীয় জনপ্রিয়তার শিখরে তিনি অবস্থান করছেন। পেয়েছেন একাধিকবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, মেরিল পুরস্কার, ঋষিজ পদকসহ দেশে-বিদেশের অনেক পুরস্কার। জাতীয় চলচ্চিত্রে পেয়েছেন আজীবন সম্মাননা। ছবির কাজ অসম্পূর্ণ রেখে, অনেক স্বপ্ন পূরণের আগেই ২০২১ সালের ১৭ এপ্রিল মারা যান বাংলার অন্যতম সেরা অভিনেত্রী সারাহ বেগম কবরী। আজ তাঁর মৃত্যুবার্ষিকী। তাঁকে স্মরণ করে আবারও একনজরে জেনে নেওয়া যাক তাঁর বর্ণিল জীবনের গল্প
১৯৫০ সালের ১৯ জুলাই চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে জন্ম কবরীর। আসল নাম ছিল মিনা পাল। বাবা শ্রীকৃষ্ণদাস পাল এবং মা লাবণ্য প্রভা পাল।
১৯৬৩ সালে মাত্র ১৩ বছর বয়সে নৃত্যশিল্পী হিসেবে মঞ্চে উঠেছিলেন তিনি। তারপর টেলিভিশন ও সবশেষে সিনেমায়।
চট্টগ্রামের সেই সরল-সহজ মেয়েটি ১৯৬৪ সালে মাত্র ১৪ বছর বয়সে জীবনে প্রথম ক্যামেরার সামনে অনায়াসে দাঁড়ালেন। ছবির নাম ‘সুতরাং’ আর প্রথম নায়ক সুভাষ দত্ত।
১৯৭৫ সালে নায়ক ফারুকের সঙ্গে ‘সুজন সখী’ সিনেমা ছাড়িয়ে যায় আগের সব জনপ্রিয়তাকে।
কবরী অভিনীত অন্য জনপ্রিয় ছবিগুলোর মধ্যে আছে ‘আগন্তুক’, ‘নীল আকাশের নীচে’, ‘ময়নামতি’, ‘সারেং বৌ’, ‘দেবদাস’, ‘হীরামন’, ‘চোরাবালি’, ‘পারুলের সংসার’।
কবরী প্রথমে বিয়ে করেন চিত্ত চৌধুরীকে। বিচ্ছেদের পর ১৯৭৮ সালে বিয়ে করেন সফিউদ্দীন সরোয়ারকে। ২০০৮ সালে তাঁদেরও বিচ্ছেদ হয়ে যায়। কবরী পাঁচ সন্তানের মা।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন ২০০৮ সালে। যুক্ত হয়েছেন অসংখ্য নারী অধিকার ও সমাজসেবামূলক সংগঠনের সঙ্গে।
রাজ্জাক-কবরী জুটি গত শতাব্দীর ষাট আর সত্তরের দশকে ছিল দারুণ জনপ্রিয়। এ জুটির ‘নীল আকাশের নীচে’, ‘যে আগুনে পুড়ি’, ‘দর্পচূর্ণ’, ‘স্মৃতিটুকু থাক’, ‘রংবাজ’, ‘বেঈমান’, ‘কাঁচকাটা হীরে’সহ অসংখ্য ছবি আছে, যা দর্শক-মন ছুঁয়েছে।
এই তুমি সেই তুমি ছবির শুটিং শুরুর মধ্য দিয়ে পরিচালনায় দীর্ঘ ১৪ বছরের বিরতি ভাঙলেন কবরী
শাড়ি কবরীর প্রিয় পোশাক। বিশেষ করে সোনালি, চাপা সাদা (অফহোয়াইট) রঙের সিল্ক শাড়ি। যেকোনো অনুষ্ঠান বা দাওয়াতে শাড়িই পরতেন তিনি।
তিতাস একটি নদীর নাম ছবির দৃশ্যে রোজি সামাদ ও কবরী
ফরমাল পোশাকে মিষ্টি মেয়ে
হালকা গয়না পছন্দ করতেন কবরী। কখনো কখনো পার্টি থাকলে ভারী গয়না পরতে হতো তাঁকে।
নিজেকে ফিট রাখতে নিয়মিত হাঁটতেন, ব্যায়াম করতেন। ডায়েট করতেন। চেষ্টা করতেন ভাত কম খেতে।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ঢাকার শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে ভর্তি হন। ১৩ দিনের মাথায় আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন কবরী।