
‘মেথর’, ‘বিসিএস ক্যাডার’ নাটকগুলো দিয়ে প্রশংসিত হচ্ছেন শামীম হাসান সরকার। শুধু নাটকই নয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও নানা ইস্যুতে সোচ্চার এ অভিনেতা। ক্যারিয়ার ও সাম্প্রতিক নানা বিষয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন মনজুরুল আলম
ঈদের পর কবে থেকে শুটিং শুরু করেছেন?
শামীম হাসান সরকার : একটু দ্রুতই শুটিং শুরু করেছি। ঈদের পর পর ব্রেক নেওয়ার একটি পরিকল্পনা ছিল। সেটা না হওয়ায় ঈদের ১০ দিন পরেই শুটিং শুরু করেছি। ইতিমধ্যে তিনটি কাজ শেষ করেছি। এখন নতুন নাটকের সেটে।
নাট্যাঙ্গনের বর্তমান অবস্থা কেমন?
শামীম হাসান সরকার : খুব বেশি ভালো বলব না। তুলনামূলক কাজ কম হচ্ছে। আমরা অভিনয়শিল্পী; কাজ কমে যাওয়ার মানেই সবার জন্য অবস্থাটা ভালো না। এটা আসলে দেশের প্রেক্ষাপটের কারণে। অনেক প্রযোজক লগ্নি করছেন না। প্রযোজকও এখন অনেক কম।
অভিনীত কোনো নাটকের জন্য কখনো আপনার মা-বাবাকে কেউ ফোন দিয়ে প্রশংসা করেছে?
শামীম হাসান সরকার : প্রায়ই তো মা-বাবা আমার অভিনীত নাটকের জন্য ফোন পান। তাঁরা সেটা আমাকে জানান। ভালো লাগে। এটা আমার জন্য অনেক গর্বের। তাঁরাও ছেলের অর্জনে খুশি হন। এখন মেথর নাটকটি নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। আমিও এমন প্রশংসা অনেক দিন পাইনি। এই কাজের জন্য মা-বাবা অনেক ফোন পেয়েছেন। তাঁরা আমাকে এমন কাজ বেশি করতে বলেছেন।
‘মেথর’ নাটকের শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?
শামীম হাসান সরকার : গল্পটা একটা জনগোষ্ঠীর। এ জন্য শুটিংয়ের আগে পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁদের সমস্যা, জীবনযাপন, তাঁদের হয়ে কথা বলার সুযোগ পেয়েছি। এ ছাড়া নাটকে আমার ভাষা হরিজন সম্প্রদায়ের মতো রাখা হয়েছে। মজার ব্যাপার হচ্ছে, আমি একটা ছেলের কাছে চুল কাটাতাম, সে একইভাবে কথা বলত। আমি নাটকে সেই ভাষা ও স্টাইলে কথা বলেছি। ছোট ছোট কিছু কারণে চরিত্রটি দর্শক পছন্দ করেছেন। সবাই তো চরিত্র দিয়ে বাস্তবের কাছাকাছি যেতে চান, সেই চেষ্টা ছিল।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপনাকে প্রায়ই প্রতিবাদ করতে দেখা যায়?
শামীম হাসান সরকার : অনেক ছোট থেকেই আমি প্রতিবাদী স্বভাবের। কোনো অন্যায় দেখলে সেটা নিয়ে কথা বলি। ২০১৮ সালে কথা বলেও অনেকের কাছে জবাবদিহি করতে হয়েছিল। কিন্তু আমাকে ভয় দেখিয়ে থামিয়ে রাখতে পারেনি। আগের সরকারের নানা অনিয়ম নিয়ে যেমন কথা বলেছি, তেমনি এখনো দেশে কোনো অন্যায় হলে চুপ থাকব না। পুরান ঢাকার নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনা নিয়েও চুপ থাকিনি। অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করবই। দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে আমি কথা বলি। কারণ, আমি আমজনতা, কথা বলা আমার অধিকার।
আপনাকে সবার সঙ্গেই জুটি হয়ে অভিনয় করতে দেখা যায়...
শামীম হাসান সরকার : সব সময় মনে করি, যত দিন কাজ করব, তত দিন সব অভিনয়শিল্পীর সঙ্গেই অভিনয় করব। কোনো দিন পরিচালকদের বলে দেব না, নির্দিষ্ট কারও সঙ্গে কাজ করব। এই স্বভাব আমার নেই। আমি মনে করি, যদি পাঁচজনের সঙ্গে অভিনয় করি, অভিজ্ঞতার পাল্লা ভারী হবে। শুধু একজনের সঙ্গে অভিনয় করলে সেই অভিজ্ঞতা হবে না। এখন আমি নির্মাতাদের বলেও দিই, নতুন অভিনেত্রীদের নিতে। তাঁদের সুযোগ দেওয়াটাও দরকার।
কিন্তু অনেক অভিনেত্রী তো একসময় আপনার সঙ্গে অভিনয় করতে চাননি।
শামীম হাসান সরকার : এখনো অনেকে আমার সঙ্গে অভিনয় করতে চান না। কোনো কারণ ছাড়াই চান না। আবার কেউ কেউ অভিনয় করতে চাইলেও আরেকজন নিষেধ করে। এগুলো তো শুনি। এসব নিয়ে মাথা ঘামাই না। এখানে সবার স্বাধীনতা রয়েছে। যার যে প্ল্যান, সেভাবেই ক্যারিয়ার এগিয়ে নেবে।
পরিবার নিয়ে সিনেমা দেখা হয়?
শামীম হাসান সরকার : একসঙ্গে সিনেমা দেখা হয় খুবই কম। পরিবার নিয়ে দেখার মতো সিনেমাও অনেক কম। তবে হাওয়া সিনেমার পরে পরিবারের সবাইকে নিয়ে সম্প্রতি উৎসব দেখলাম। সিনেমাটি অনেক ভালো লেগেছে। মা-বাবাও সিনেমাটি অনেক পছন্দ করেছেন। তাঁরা পরিচালককে ধন্যবাদ দিয়েছেন।
ছোট পর্দার অভিনেতা হিসেবে সিনেমা নিয়ে আপনার পরিকল্পনা কী?
শামীম হাসান সরকার : সিনেমায় আমার অভিনয় করার ইচ্ছা রয়েছে। তবে নাটক আমি কোনো দিনও ছাড়ব না। সিনেমা করলেও সারা জীবন ছোট পর্দায় কাজ করে যাব। নাটক থেকে যে ভালোবাসা পাচ্ছি, সেটাও অনেক বড়। এই ভালোবাসা আমি আজীবন পেতে চাই।