সাবিলা-নেহালের সম্পর্ক শুরু ঝগড়ায়...

সাবিলা নূরই তাঁর স্বামী নেহালকে প্রথম বলেছিলেন, ‘তোমাকে আমি পছন্দ করি। তোমাকে বিয়ে করতে চাই।’ সাবিলার মতে, ‘নেহালের সঙ্গে প্রেম করা এবং বিয়ের বিষয়টি খুব ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। দেড় বছরের মতো শুধুই বন্ধুত্বের সম্পর্ক ‍ছিল দুজনের। বন্ধুত্ব থেকে ভালো লাগা, এরপর ভালোবাসা; অতঃপর বিয়ে।’
দুজনের ভালো লাগা কীভাবে বাড়তে থাকল? এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাবিলা জানান, ‘পরিচয় হওয়ার পর থেকে দুজনের মধ্যে টুকটাক কথা হতো। পরস্পরের সঙ্গে আমরা সারা দিনের ভালো-মন্দ শেয়ার করতে থাকি। ধীরে ধীরে নেহালকে আমার ভালো লাগতে থাকে।’ তবে নেহালের বিষয়টা একটু ভিন্ন। অভিনেত্রী হিসেবে নয়, ব্যক্তিমানুষ হিসেবে সাবিলাকে চিনতে শুরু করার পর থেকে তাঁর প্রতি ভালো লাগাটা শুরু হয়। কারণ, সাবিলার মানসিকতা এবং গুণগুলো পছন্দ হয়েছিল নেহালের।

ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে ক্লোজআপ ও প্রথম আলো ডটকম আয়োজিত ‘ভালোবাসার দিনে ভালোবাসার গল্প’ সিজন-৫-এর এক স্টুডিও অনুষ্ঠানে পরস্পরের প্রতি ভালো লাগার শুরুটা জানাতে গিয়ে এমনটাই বললেন মডেল ও অভিনয়শিল্পী সাবিলা নূর এবং তাঁর স্বামী নেহাল সুনন্দ তাহের। নেহাল একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে কর্মরত।

অনুষ্ঠানের সঞ্চালক নীল হুরেজাহানকে নিজেদের সম্পর্ক ও ভালোবাসার রসায়ন প্রসঙ্গে নেহাল জানান, ‘সাবিলা ভালোকে ভালো, খারাপকে খারাপ বলতে কোনো ভণিতা বা ন্যাকামি করে না। সম্পর্কের প্রতি সৎ থাকার কারণেই নাবিলাকে আমার ভালো লাগে।’ আর সাবিলার মতে, ‘আমরা দুজন দুজনকে খুব ভালো বুঝি। আমাদের কেয়ারিং-শেয়ারিংয়ের বিষয়গুলো বেশ মজার।’

বিবাহিত জীবনের তিন বছর চার মাস পার করছেন তাঁরা। বিবাহবার্ষিকী কীভাবে উদ্‌যাপন করেন? সঞ্চালকের এই প্রশ্নের উত্তর দুজনেরই এক, ‘আমরা ঘুরতে খুব পছন্দ করি। তাই বিবাহবার্ষিকীতে দেশের বাইরে বেড়াতে যাই।’ তবে ঘোরাঘুরির জন্য সাবিলার পছন্দ পাহাড় আর নেহালের সমুদ্র। দুজনের আরও একটা বিষয়ে অমিল রয়েছে। সাবিলা সাধারণত দেশের বাইরে গেলে পাঁচ তারকা হোটেল ছাড়া থাকতে পছন্দ করেন না। আর নেহাল যেকোনো একটা হোটেল হলেই হয়। এর কারণ হিসেবে সাবিলা বলেন, ‘সারা বছর কাজের ব্যস্ততায় নিজেকে সময় দেওয়া হয় না। তাই ঘুরতে গেলে সবচেয়ে ভালো জায়গাতেই থাকতে আমি পছন্দ করি।’

দুজনের মধ্যে ঝগড়াঝাঁটি খুব একটা না হলেও মাঝেমধ্যে টুকটাক ঝামেলা হয়। সেটা কেমন? নমুনা হিসেবে সাবিলা জানান, ‘মাঝেমধ্যে নেহালকে দেখে আমার মনে হয়, তার মুড অফ। কেন মুড অফ, সেটা আমি বারবার জানতে থাকি। একপর্যায়ে নেহাল বলে, এতক্ষণ তো ঠিকই ছিলাম, বারবার জানতে চাওয়ার ফলে তখন আসলেই মুড অফ হয়ে যায়।’

অনুষ্ঠানের শুরুতেই শারীরিক অসুস্থতার পরও স্বামীসহ ভালোবাসা দিবসের অনুষ্ঠানে আসার কারণ জানান সাবিলা, ‘নেহালের সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করার সৌভাগ্য খুব একটা হয় না আমার। তাই প্রথম আলোর আমন্ত্রণ পেয়ে সুযোগটা হাতছাড়া করিনি।’ দুজনের পরিচয় কীভাবে? জানতে চান নীল হুরেজাহান। সাবিলা বলেন, ‘পরিচয় হয়েছে অভিনেতা তৌসিফ মাহবুবের সৌজন্যে। নেহাল আর তৌসিফ বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধু। তৌসিফের আমন্ত্রণে এক আড্ডায় গিয়ে পরিচয় হয় নেহালের সঙ্গে। আড্ডায় আমিই আগবাড়িয়ে নেহালের সঙ্গে পরিচিত হই। কথা বলি। কিন্তু নেহাল আমাকে খুব একটা পাত্তা দেয়নি। হা হা হা…।’

কিন্তু সাবিলার যুক্তিতে একমত নন নেহাল সুনন্দ। তিনি বলেন, ‘পাত্তা দিইনি, এটা ভুল কথা। আমি সাবিলাকে দেখে খুবই অবাক হচ্ছিলাম। আমার সামনে সাবিলা নূর, সেটা বিশ্বাস করতে পারছিলাম না।’ তারপর ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসের কমেন্টে ঝগড়া লেগেছিল সাবিলা আর নেহালের। ঝগড়া হওয়ার পর সাবিলা মনে মনে অপেক্ষা করছিলেন, নেহাল তাঁকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠাবেন। কিন্তু নেহাল সাবিলাকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠাননি। অপেক্ষায় থাকতে থাকতে নিজেই নেহালকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠান। এর পরের গল্পটা তো শুরুতেই বলা হয়েছে!