
গত রোববার বিকেলে কলকাতায় আয়োজন করা হয় কোক স্টুডিওর কনসার্ট। অর্ণব, পান্থ কানাইসহ বাংলাদেশের কোক স্টুডিওর শিল্পীরা তো ছিলেনই, কনসার্টে ছিল কলকাতার জনপ্রিয় ব্যান্ড ফসিলস। ছিলেন শঙ্কর মহাদেবনের মতো শিল্পীও। তবে কনসার্ট শেষে গানের চেয়ে বেশি আলোচনা হয় শোয়ের একটি ঘটনা নিয়ে। বাংলাদেশের গায়ক অর্ণব যখন মঞ্চে গাইছিলেন, তখন মঞ্চে হাজির হন ফসিলসের প্রধান গায়ক রূপম। দর্শকসারিতে থাকা অনেকেই তখন ‘ফসিলস’, ‘ফসিলস’ বলে চিৎকার করতে থাকেন। অর্ণব গাওয়ার সময় রূপমের মঞ্চে হাজির হওয়া—একটি বাংলাদেশি গায়কের অপমান বলে আখ্যা দেন অনেক দর্শক। বিষয়টি নিয়ে গত কয়েক দিনে পশ্চিমবঙ্গের অনেক দর্শকই রূপমের সমালোচনা করেছেন। অনেক দর্শক সমালোচনা করেছেন ফসিলসের ভক্তদেরও। নানা বিতর্কের মধ্যে কনসার্ট নিয়ে মুখ খুলেছেন অর্ণব ও রূপম।
ঘটনাটি নিয়ে সরাসরি কিছু না বললেও গতকাল নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে কলকাতার দর্শকের প্রশংসা করেছেন অর্ণব, ‘দর্শকেরা ছিল অসাধারণ। সবাইকে ভালোবাসি, কিপ রকিং। ফসিলস ফসিলস!! আমরা এখানেও একইভাবে বলি আর্টসেল আর্টসেল!!’
সেদিনের ঘটনা নিয়ে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে দীর্ঘ পোস্ট করেছেন রূপম। তিনি লিখেছেন, ‘অর্ণব এসেছিল ওর শোর পর। ফসিলস-এর ফ্যানেদের প্রশংসা করে গেল। অর্গানাইজার কোক ইন্ডিয়ার পক্ষ থেকে অর্ণব রায় এসেছিলেন। তিনিও একই কথা বললেন। আসলে গায়ক অর্ণব আমার পুরোনো বন্ধু। বহুদিনের বন্ধুত্ব। সে কারণেই আমি সামনে গিয়ে দাঁড়িয়েছিলাম। তাতেই দর্শকদের একাংশের আমাকে নিয়ে উল্লাস। আমি কারও অনুষ্ঠান চলাকালীন সামনে গিয়ে দাঁড়াই না। বাংলাদেশ থেকে এসেছিল বলেই এবং বন্ধু অর্ণব বলেই গিয়েছিলাম সম্মান জানিয়ে। পরে স্টেজ থেকেও বলেছি সে কথা।’
সেদিনের ঘটনা নিয়ন্ত্রণের বাইরে যায়নি উল্লেখ করে রূপম আরও লিখেছেন, ‘সামনে গিয়ে দাঁড়াতেই হইচই শুরু হলো বলে মাত্র একটি গান শুনেই সরে আসি ওখান থেকে। শিল্পীদের হাততালি বাজিয়ে অভিনন্দন জানাই। তরুণ ব্যান্ড হলে স্টেজে উঠে যে চিৎকার উঠেছিল তা থামিয়ে দিতাম, যেমন ইতিপূর্বে বহুবার ব-হু-বা-র করেছি। সুন্দর গাণিতিক সারল্যে আমাকে আক্রমণকারীরা কিন্তু সেসব কিছুই জানেন না। বাঃ। আপনাদের সুযোগসন্ধানী অজ্ঞানতার খুরে খুরে নমস্কার। ভাইসব—চিনি সেই দুষ্টুমিষ্টি আপনাদের এক্কেরে প্রথম থেকেই। আরও কত যে চিনব! গুড এফর্ট ওয়ানস অ্যাগেইন। অবশ্য পরিস্থিতি কখনোই হাতের বাইরে বেরয়নি। বেরোলে অন্তত তার অনুষ্ঠানের পর অর্ণব আমার কাছে এসে অডিয়েন্সের সুখ্যাতি করত না। বাংলাদেশের ব্যান্ড শিল্পীদের শ্রোতাদের সেন্টিমেন্ট—জেমস ঢুকলেই গুরু গুরু চিৎকার—এসব অজানা থাকবার কথা নয়। পাবলিক গান গাইতে না দিলে আমাকে হস্তক্ষেপ করতেই হতো। আর তা আমি করতামও।’
নিজের দীর্ঘ পোস্টে সেদিনের কনসার্ট নিয়ে লেখা এক ফেসবুক ব্যবহারকারীর পোস্ট শেয়ার করেছেন রূপম। যার বক্তব্য রূপমের বক্তব্যের সঙ্গে মিলে যায়।