নেহাল ফেরায় কাবিলার জন্য ভালো নাকি মন্দ হলো, কী বলছেন পলাশ

‘ব্যাচেলর পয়েন্টের’ এর পোস্টার
‘ব্যাচেলর পয়েন্টের’ এর পোস্টার

আসল নামটাই যেন তাঁর বদলে গেছে। ভক্তদের কাছে তিনি সাত বছর ধরে ‘কাবিলা’ নামে পরিচিত। যেখানেই যান, সবাই কাবিলা বলেই সম্বোধন করে। অনেক সময় এই অভিনেতার জিয়াউল হক পলাশ নামটিই আড়ালে পড়ে যায়। তবে পর্দার নামটিও তাঁর কাছে গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়। এটাকে দর্শকদের উপহার হিসেবে নেন ‘ব্যাচেলর পয়েন্টের’ এই কাবিলা খ্যাত অভিনেতা।

হাবু, পাশা, রোকেয়া, বোরহান চরিত্রের মধ্যে আলাদা করে সাড়া জাগিয়েছেন কাবিলা। এই ধারাবাহিক পলাশকে জনপ্রিয়তা দেওয়ার অন্যতম কারণ তাঁর ভাষা নোয়াখালী অঞ্চলের। একই সঙ্গে গল্পে ব্যাচেলরদের জীবনের নানান চিত্র তুলে ধরার কারণে, এটি দর্শক পছন্দ করেন। সিরিজগুলোতে আলাদা করে আসে পলাশের চরিত্রের পরিসর, যা দর্শক বেশির ভাগ সময়ই গ্রহণ করেন। তারপরও এই অভিনেতাকে তেমন কোনো ধারাবাহিকে দেখা যায় না। এর কারণ কী?

অভিনেতা পলাশ। ছবি: ফেসবুক থেকে

‘ব্যাচেলর পয়েন্টের’ পর পলাশকে দেখা গিয়েছিল মোস্তফা কামাল রাজের পরিচালনায় ধারাবাহিক নাটক ‘ফ্যামিলি ক্রাইসিসে’। এই নাটকে পলাশের চরিত্রের নাম ‘পারভেজ চৌধুরী’। নাটকে হঠাৎই বানিয়ে কবিতা আবৃত্তি করার জন্য তিনি জনপ্রিয় হন। কবিতা আবৃত্তি ঘিরেই এগিয়ে চলে তাঁর চরিত্র। নাটকে মনিরা মিঠু এই চরিত্রকে ভালোবেসে ডাকতেন ‘কালা জইস্যা’ নামে। সেই চরিত্রটিও দর্শকদের মধ্যে জনপ্রিয়তা পায়।

এই অভিনেতা এর আগে প্রথম আলোকে জানিয়েছিলেন, প্রায়ই তিনি ধারাবাহিকে অভিনয়ের প্রস্তাব পান। ভালো চরিত্র হলেও করার কথাও বলেছিলেন। কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে একমাত্র ‘ব্যাচেলর পয়েন্টে’ যুক্ত থাকা প্রসঙ্গে তিনি সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমি ব্যাচেলর পয়েন্ট করতে গিয়ে কিন্তু পাঁচটা অন্য ধারাবাহিক নাটকে অভিনয় করিনি। আমি কচ্ছপের গতিতে এগিয়ে যেতে চাই। আমি খরগোশ হতে চাই না।’ ক্যারিয়ার নিয়ে কখনোই তাঁর তাড়াহুড়া নাই।

অভিনেতা তৌসিফ মাহবুব। ছবি: শিল্পীর সৌজন্যে

‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’ নাটকটি পরিচালনা করেছেন কাজল আরিফিন অমি। শুরু থেকেই পলাশ এই টিমের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এই টিমের সঙ্গে তাঁর কাজের সংখ্যা সর্বাধিক। তিনি বলেন, ‘আমার টিমের বাইরে গিয়ে যে কাজটা করব, সেটাও তো রিমার্কেবল কিছু হতে হবে। অন্যথায় আমি কেন করব।’

দেশের নাট্য অঙ্গনে আঞ্চলিক ভাষায় কোনো অভিনেতা জনপ্রিয়তা পেলে একই ধারার নাটকে প্রায়ই তাঁকে দেখা যায়। সেখানে ব্যতিক্রম পলাশ। তিনি কখনোই ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’ ছাড়া অন্য কোনো নাটকে নোয়াখালী অঞ্চলের ভাষা ব্যবহার করেননি। এমনকি খুব বেশি কাজেও যুক্ত হওয়ার তাঁর কোনো ইচ্ছা নেই। যেকোনো চরিত্রে নাম লিখিয়ে তিনি টাকা আয় করার পক্ষপাতি নন। পলাশ বলেন, ‘কাজটা যদি হয় টাকা আয় করার জন্য, তাহলে টাকা আয় করার তো অনেক রাস্তা আছে। আমার কথা, কাজের কোয়ালিটি থাকতে হবে।’

‘ব্যাচেলর পয়েন্টের’ এর সংবাদ সম্মেলনে নির্মাতা কাজল আরেফিন ও শিল্পীরা। ছবি: ফেসবুক থেকে

এদিকে শুরু হতে যাচ্ছে ‘ব্যাচেলর পয়েন্টের’ নতুন কিস্তি। ধারাবাহিকে ফিরছেন নেহাল চরিত্রের অভিনেতা তৌসিফ মাহবুব; এ নিয়েও বেশ উচ্ছ্বসিত কাবিলা। তিনি বলেন, ‘কাবিলা তো সব সময়ই একটু একা একা থাকে। গল্পে ওর বন্ধুবান্ধব কেউই নাই ওর সঙ্গে। সেখানে নেহাল ফেরায় কাবিলার জন্য ভালো হয়েছে।’ ধারাবাহিকে এর আগে নেহাল চরিত্র বেশ সারা জাগিয়েছিল। নেহালের সঙ্গে দর্শকদের আলাদা বিনোদন দিত কাবিলা চরিত্র। দুই বন্ধুর খুনসুটি মাতিয়ে রাখত দর্শকদের। আবার কাবিলার প্রত্যাশা তাঁদের চরিত্রদ্বয়কে পছন্দ করবেন দর্শক। গল্পেও নতুনত্ব আসবে।

ধারাবাহিকের তৃতীয় সিজন থেকে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে সরে গিয়েছিলেন নেহাল চরিত্রের অভিনেতা তৌসিফ মাহবুব। চতুর্থ সিজনে গল্পে নেহালের কথা উল্লেখ থাকলেও তাঁকে পর্দায় দেখা যায়নি। পঞ্চম সিজনের কয়েকটি পর্ব এরই মধ্যে প্রচারিত হয়েছে, সেখানেও তৌসিফের উপস্থিতি ছিল না। এদিকে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়, পরবর্তী সিজনে দেখা যাবে নেহালকে।