আইফোনের জন্য কিডনি বেচেছিলেন ওয়াং, এখন শয্যাশায়ী
যেকোনো স্মার্টফোনের চেয়ে আইফোন নিয়েই বোধ হয় সবচেয়ে বেশি মজা করা হয়। বাজারে নতুন আইফোন এলেই ইন্টারনেটে ট্রল আর মিমের বন্যা বয়ে যায়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দেখা যায় কিডনি বিক্রি করে আইফোন কেনার কৌতুক। যার আইফোন আছে, বন্ধুরা খোঁচা দিয়ে বলে, তোর কিডনি কয়টা?
যাহোক, কিডনি-কৌতুক মোটেই নতুন নয়। যুগ যুগ না হোক, এক যুগ তো হলোই। এর শুরুটা কীভাবে, তা বলা মুশকিল। তবে ২০১১ সালে এক চীনা কিশোর আইফোন কেনার জন্য সত্যি সত্যি নিজের কিডনি বেচে দিয়েছিলেন। ওয়াং সাংকুন নামের সে কিশোরের বয়স এখন ২৫ কি ২৬।
ভাইস সাময়িকীর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১১ সালে ওয়াংয়ের বয়স ছিল ১৭। বাড়ি চীনের আনহুই প্রদেশে। একদিন তাঁর কী মনে হলো, প্রায় ৩ হাজার ২৭৩ ডলারের বিনিময়ে ডান পাশের কিডনিটি বিক্রি করে দিলেন। সে টাকা দিয়ে একটি ‘আইপ্যাড ২’ মডেলের ট্যাব এবং একটি ‘আইফোন ৪’ মডেলের স্মার্টফোন কিনেছিলেন তিনি। ওই সময় ওয়াং বলেছিলেন, ‘দুটি কিডনি দিয়ে কী হবে? একটিই যথেষ্ট।’ একটি কিডনি নিয়ে এখন বেশ বিপদেই আছেন ওয়াং সাংকুন।
অ্যাপলের তৈরি ডিভাইসের প্রতি তীব্র আকর্ষণ ছিল ওয়াংয়ের। এক অনলাইন চ্যাটরুমে মানব–অঙ্গ কালোবাজারিদের কাছ থেকে একটি বার্তা পান তিনি। বার্তায় বলা হয়েছিল, তিনি চাইলে শরীরের অঙ্গ বেচে তিন হাজার ডলারেরও বেশি আয় করতে পারেন। সে সময় আইফোন হাতে তোলার স্বপ্নে বিভোর ছিলেন ওয়াং। অফারটি পছন্দ হয়েছিল তাঁর।
এর দিন কয়েক পর দেশটির হুনান প্রদেশের এক হাসপাতালে ১৭ বছরের ওয়াংয়ের শরীরে অবৈধ অস্ত্রোপচার করা হয়। বের করে নেওয়া হয় ডান কিডনি। ব্যাপারটি অভিভাবকদের না জানিয়েই করেছিলেন ওয়াং।
পরে ওয়াংয়ের হাতে দামি আইফোন দেখে তাঁর মায়ের সন্দেহ হয়। জিজ্ঞাসা করার পর তাঁর মুখ থেকে বেরিয়ে আসে অস্ত্রোপচারের কথা। এরপর অবৈধভাবে অঙ্গ বেচাকেনার জন্য গ্রেপ্তার হয় নয়জন, পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।
অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে ওয়াংয়ের অস্ত্রোপচার করায় কয়েক মাসের মধ্যেই বাঁ কিডনিতে সংক্রমণ দেখা দেয়। অস্ত্রোপচারের পর প্রয়োজনীয় সেবা ও বিশ্রাম না পাওয়াও একটি বড় কারণ। পরে তাঁর অবস্থার এমনই অবনতি হয় যে এখন পুরোপুরি শয্যাশায়ী। নিয়মিত ডায়ালাইসিস ছাড়া জীবন বিপন্ন।
অবৈধভাবে হলেও ওয়াংয়ের কিডনি দিয়ে হয়তো কারও জীবন রক্ষা হয়েছিল, সেখানে ওয়াংয়ের নিজেরই বেঁচে থাকার জন্য অন্যের কিডনি প্রয়োজন।
আজ ১১ মার্চ, বিশ্ব কিডনি দিবস। কিডনির সুস্বাস্থ্যের ব্যাপারে আমাদের সচেতন হওয়ার দিন। তাই সময় থাকতে কিডনির যত্ন নিন। যে আইফোনের জন্য কিডনি বেচেছিলেন ওয়াং, সে আইফোন বেচলে কি তিনি কিডনি পাবেন?
Also Read: আইফোন ও কিডনিবিষয়ক এক ডজন মিম
আরও পড়ুন
-
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনা সংক্রান্ত নির্দেশনা, বন্ধ প্রাক–প্রাথমিক
-
অভ্যুত্থানে ক্ষমতা দখল, অভ্যুত্থানেই পুরো পরিবারসহ খুন হন আফগান প্রেসিডেন্ট দাউদ খান
-
মেসিতে মুগ্ধ কাউকে একাদশে রাখবেন না প্রতিপক্ষ দলের কোচ
-
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রত্ব শেষ, তবু হলে থাকছেন নেতারা
-
দ্বিতীয় দফার ভোটে বিজেপির চিন্তা আরও বাড়ল