প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নাসিম হত্যা মামলা

নয় মাসেও ধরা পড়েনি মূল আসামি সোহান

নয় মাস পেরিয়ে গেলেও প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নাসিম আহমেদ হত্যা মামলার প্রধান আসামি ইব্রাহিম সোহানকে ধরতে পারেনি পুলিশ।

পুলিশের সংগ্রহ করা ভিডিও ফুটেজে রয়েছে কারা তাঁকে খুন করেছেন। নাসিমের পরিবারের দাবি, পুলিশ আসামিদের ধরছে না। পুলিশ বলছে, গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

নাসিম বিশ্ববিদ্যালয়ের এমবিএর ছাত্র ও চট্টগ্রাম নগর ছাত্রলীগের সদস্য ছিলেন। ছাত্রলীগের রাজনীতিতে তিনি সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত ছিলেন।

 গত বুধবার নাসিম হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে নগরের লালদীঘি মাঠে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা মুখে কালো কাপড় বেঁধে অংশ নেন।

গত বছরের ২৯ মার্চ প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ (ব্যবসায় প্রশাসন) ২৩তম ব্যাচের বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠান নিয়ে বিরোধের জের ধরে খুন করা হয় নাসিম আহমেদকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়াসা ক্যাম্পাসে এ ঘটনা ঘটে।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও ছাত্রলীগের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে কে অতিথি হবেন, এ নিয়ে ছাত্রদের মধ্যে তর্ক শুরু হয়। এক পক্ষ বর্তমান মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনকে অতিথি করার দাবি জানায়, অন্য পক্ষ সাবেক মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরীকে অতিথি করতে চায়। এই বিরোধ থেকেই মারামারি ও খুনের ঘটনা ঘটে।

ঘটনার পরদিন নাসিমের বাবা আবু তাহের ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় ১৫-২০ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। আসামিদের সবাই প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। মামলাটি তদন্ত করছে চকবাজার থানার পুলিশ।

ছেলে হত্যার বিচার পাওয়া নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে আবু তাহের প্রথম আলোকে বলেন, ‘মূল আসামি ইব্রাহিম হোসেনকে পুলিশ এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি। কয়েকজন আসামি প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা করলেও পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করছে না। শুধু বলছে, ধরা হচ্ছে। এ জন্য গত বুধবার চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ কমিশনারের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছি। এ ছাড়া প্রয়োজনে মামলাটি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) হস্তান্তরের জন্য বলা হয়েছে।’

জানতে চাইলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও চকবাজার থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হুমায়ুন কবির প্রথম আলোকে বলেন, মূল আসামি সোহানসহ পলাতক বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। প্রকাশ্যে কোনো আসামি ঘোরাফেরার তথ্য নেই পুলিশের কাছে। নয় মাসে পুলিশ ১০ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। তাঁদের মধ্যে কয়েকজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন।

পুলিশ সূত্র জানায়, নাসিমকে ছুরিকাঘাত করে হত্যার দৃশ্য ধরা পড়ে ক্যাম্পাসের ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরায়। ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, ধারালো ছুরি দিয়ে নাসিমকে আঘাত করেছেন সোহান। তিনি (সোহান) নিজের পকেট থেকে ছুরি বের করে তাঁর (নাসিম) মাথায়, ঘাড়ে ও হাতে আঘাত করেন। গ্রেপ্তার হওয়া পাঁচজনের মধ্যে চারজনকেই নাসিমকে কিল-ঘুষি মারতে দেখা যায়। ক্যাম্পাসে সেদিন তিন দফায় নাসিমকে মারধর করা হয়। এতে ১৫-২০ জন অংশ নেন।