বাবার মৃত্যুর পর থেকে শবনম ফারিয়ার ‘ঈদ নেই’

ফারিয়া শবনম, ডাকনাম তৃপ্তি। তিনিই আমাদের চেনা-পরিচিত শবনম ফারিয়া। সম্প্রতি ঘুরে এলেন নেপাল থেকে। কী কী শপিং করলেন সেখান থেকে? বললেন, ‘শপিং তেমন কিছুই করিনি। পেট ভরে খেয়েছি। নেপাল থেকে তো আমি তিন কেজি ওজন বাড়িয়ে এসেছি। ওখানে থালিতে করে মজার খাবার দেয়। একটা উঁচু ছোট্ট বাটিতে দেয় ঘি। এত্ত সুন্দর ঘ্রাণ! আমি প্রতিবেলায় পুরোটা ঘি ঢেলে খেয়েছি। ওখানে আমার বড় বোনের বাসায় ছিলাম। ও বলত, ‘পুরোটা যে প্লেটে ঢেলে নিস, আশপাশে তাকা তো। আর কেউ কি পুরোটা ঢেলে নেয়? মানুষের চক্ষুলজ্জা বলে তো কিছু একটা থাকে। আমি চক্ষুলজ্জার কোনো তোয়াক্কা করিনি। পেট ভরে আর প্রাণভরে খেয়েছি। শপিংয়ের মধ্যে কিছু পেইন্টিং কিনেছি, যা টাকা ছিল সব সেখানকার স্থানীয় পেইন্টিং কিনে শেষ। আর মায়ের জন্য একটা চাদর নিয়েছি। নিজের জন্য কয়েকটা টি-শার্ট নিয়েছি।’

নেপাল থেকে বেশ কিছু স্থানীয় পেইন্টিং কিনেছেন শবনম ফারিয়া
ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে

মডেল ও অভিনেত্রী শবনম ফারিয়ার ত্বকের সৌন্দর্যের রহস্য অনেকেই জানতে চান। ভক্তদের প্রশ্নটা সুযোগ পেয়ে পৌঁছে দিলাম তাঁর কাছে। প্রশ্নটা শুনেই ফ্রিজ খুললেন। ফ্রিজের ডান পাশের তাক ভর্তি মুখে মাখার নানা প্যাক। জানালেন, যখনই সময় পান, এগুলো মেখে বসে থাকেন, কাজ করেন। তারপর ধুয়ে ফেলেন। ন্যাচারাল মেকআপের রহস্যও জানালেন।

ন্যাচারাল মেকআপের রহস্য জানালেন শবনম ফারিয়া

বললেন, ‘আমাকে কেউ মেকআপ করে দিলে সেটা সাধারণত আমার পছন্দ হয় না। ভালো লাগে না। অস্বস্তি হয়। আমি যতবার দেশের বাইরে যাই, সেখান থেকে মেকআপ কিনে আনি। ইউটিউব দেখে আমি নিজেই মেকআপের টেকনিক শিখেছি।’ এ-ই তাহলে ব্যাপার। রান্নার মতো মেকআপটাও ফারিয়ার ইউটিউব দেখেই শেখা।

নিজের নতুন বাসায় ফারিয়া, এই মেকআপ নিজেই করেছেন

ফারিয়ার বাসায় একটা ঘর রাখা কস্টিউমের জন্য। সেখানে একেকটি বড় বড় বাক্সে একেক নাটকের কস্টিউম রাখা। ফারিয়ার সংগ্রহে আছে অসংখ্য ব্যাগ। তিনি যেখানেই যান, মনভরে ব্যাগ কেনেন। বললেন, ‘আমার বলতে গেলে এই একটাই শখ। ব্যাগ কেনা।’ কস্টিউমের ঘরের একটা পাশে সব ব্যাগ রাখা। দুটি বারান্দা আছে ফারিয়ার বাসায়। সেখান থেকে চারপাশটা বেশ দেখায়। দুই বারান্দার চারপাশের প্রকৃতি জানে ফারিয়ার মনের রংবদলের খবর।

দুই বারান্দার চারপাশের প্রকৃতি জানে ফারিয়ার মনের রংবদলের খবর

ছোট ও বড় পর্দার জনপ্রিয় তারকা শবনম ফারিয়া বড্ড বাবাভক্ত। তাই তো নকশার শুটিংয়ে যখন তাঁর বাসায় গিয়েছি, ঘুরেফিরে এল বাবার প্রসঙ্গ। এবার ঈদে কী করবেন, জানতে চাইলেই বললেন, ‘বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে আমার আর ঈদ নেই। ঈদ বলতেই যে আনন্দ, আয়োজন, হুলুস্থুল একটা ব্যাপার, সেটা এখন আর হয় না। একসময় ঈদ মানেই ছিল বড় পাতিল ভর্তি খিচুড়ি, খাসির মাংস, কাবাব আর ভর্তা। বাবা সরকারি চাকরি করতেন। ঈদের দিন বাবার সহকর্মীরা আসতেন। সবাই মিলে ঈদ হতো। এখন ঈদের দিন এলেই বেশি বেশি মনে হয়, বাবা নেই। স্বাভাবিকভাবে বাড়িতেই মা আর বোনদের সঙ্গে ঈদ কাটাব।’

বাবার সঙ্গে শবনম ফারিয়া

তিন বছর বয়সে ফারিয়া জন্মদিনের উপহার হিসেবে বাবার কাছে চেয়েছিলেন ‘বাবা, আমাকে টিভিতে দেখাও’। সেটাই ছিল তাঁর চাওয়া প্রথম জন্মদিনের উপহার। ফারিয়া সবসময় চাইতেন তাঁকে যেন টিভিতে, বিজ্ঞাপনে, ম্যাগাজিনে— সবখানে দেখায়। সেই উপহার তিনি ‘দুহাত ভরে’ পেয়েছেন।আজ বাবা নেই। ঈদে তাই ফারিয়ার সবচেয়ে বেশি মনে পড়ে বাবাকে।