মনের বাক্স

.

তোমাকেই বলছি
সূর্য যেমন তার কিরণ দিয়ে পুরো পৃথিবীকে আলোকিত করে তোলে, ঠিক তেমনি যেন সৃষ্টিকর্তা মেয়েটাকে পাঠিয়েছিল আমার জীবনটাকে আলোকিত করার জন্য আশীর্বাদ হিসেবে। অনেক মিষ্টি ও সুন্দর একটা মেয়ে। প্রথম দেখাতেই ভালো লেগে যায় মেয়েটাকে। আর তারপর থেকে মনের অজান্তেই ভালোবেসে ফেলি। তারপর থেকে সব ঠিকঠাক চলছিল। তুমি তো সবই জানো, তোমার সঙ্গে একটু কথা বলার জন্য আমি অপেক্ষা করতাম। তোমার সঙ্গে কথা বলার প্রতিটা মুহূর্ত ছিল আমার কাছে অতি মূল্যবান সম্পদ। তোমাকে নিয়ে যেই আমি একটু একটু করে রঙিন স্বপ্নের জাল বুনতে শুরু করলাম। আর ঠিক সেই সময় সামান্য একটা ভুলে এভাবে আমাকে একা করে চলে যাবে, আমি ভাবতেও পারিনি। এখন জানো, পৃথিবীটাকেই না আমার কাছে রংহীন মনে হয়। কারণ, তুমিই তো ছিলে আমার জীবনের রং। আর এখন তুমি নেই। জানি আমার এ লেখা তুমি হয়তো পড়বে না। তবু কেন জানি আজ চিৎকার করে বলতে ইচ্ছা করছে, অনেক অনেক বেশি ভালোবাসি তোমায়। জানো, তোমার একটা ছবি এখনো আমার কাছে আছে। আমি রোজ ঘুম থেকে উঠে যখন তোমার ছবিটা দেখি, আমি যেন আবার নতুন করে তোমার প্রেমে পড়ি। কাছ থেকে তো তোমাকে আর ভালোবাসতে পারলাম না, না হয় দূর থেকেই ভালোবেসে যাব।
এস এম নাজমুল হাসান
ঝিনাইগাতী, শেরপুর
বাবা কত দিন দেখিনা তোমাকে
জীবনের আয়েশের প্রয়োজনে যার যতটুকু প্রয়োজন, সবকিছু পূরণ করে তুমি চলে গেলে না-ফেরার দেশে। তোমার ন্যায়নিষ্ঠ অক্লান্ত পরিশ্রমে নিজেকে সবটুকু নিংড়ে দিয়ে দিলে আমাদের। নিজেকে দেওয়ার মতো কোনো অবশিষ্ট ছিল না তোমার। আজ বুঝি তোমার অভাব। বাবা, তোমার জন্য খুব কষ্ট হয়। এত কষ্ট হয় যে চোখ থেকে নিমেষেই পানি ঝরে যায়। যেখানেই থাকো বাবা, ভালো থাকো।
এ এফ এম আসাদ-উদ-দৌলা
নগরকান্দা, ফরিদপুর।

 তোমারই অপেক্ষায়

মাঝে মাঝে না, প্রায়ই তোমাকে খুব কষ্ট দিই। কারণ তোমাকে অনেক ভালোবাসি বলে নীরবে নিজেও অনেক কষ্ট পাই। তোমাকে মিস করব বলে। তোমাকে যখন মিস করি, তখন পৃথিবীকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করি। হয়তো এড়িয়ে চলা হয়ে ওঠে না।

সব সম্পর্ক রক্ষা করে চলতে হয়। সবাইকে বোঝাতে হয়, আমি ভালো আছি। কিন্তু আমি তো জানি, কোথায় আমার অসম্পূর্ণতা।

সবাই থাকার পরেও মনের গহিনে থাকে এক চাপা কষ্ট। এই কষ্টের রং কেমন তা জানি না। তবে স্বাদটা একেবারেই বর্ণহীন, বিস্বাদ। কারণ তখন আমার সব অনুভূতিজুড়ে শুধুই তুমি।

আর সেই তুমিই রয়েছ অনেক দূরে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

আমার গল্প বলা বিকেলগুলো

মধ্য নভেম্বরের শীতে কাঁপতে কাঁপতে আড়াই বছর পর আমি সেদিন বাড়ির কলতলায় দাঁড়িয়ে সকাল দেখলাম। কলতলার পাশে একটা পচা ডোবা ছিল। আড়িয়াল খাঁ নদীর বালু ঢেলে তার কালো জল শুষে নেওয়া হয়েছে গত গ্রীষ্মে। কলতলার পাশে ডোবার জলে দীর্ঘ ছায়া ফেলা প্রকাণ্ড একটা শিরীষ গাছ ছিল, যার হাত পাঁচেক লম্বা শিকড়ে বসে আমি, পাঁচ কি ছয়জন নিয়মিত শ্রোতাকে উপেন্দ্রকিশোর রায়ের গল্প পড়ে শোনাতাম। হ্যানসেল গ্রেটেলের গল্প বলতে বলতে কোনো কোনোদিন বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নেমেছে, ঝাপসা হয়েছে তলস্তয়ের কিশোর গল্পের সরল অনুবাদের পাতা। এবার গিয়ে শুনেছি, আমি যাদের বলেছি সুকুমার রায়ের রম্যগল্প, তাদের একজন দুই মাইল হেঁটে গ্রামের একমাত্র সরকারি কলেজে যায়, মাধ্যমিকের পাঠ চুকানোর অপেক্ষায় আছে দু-চারজন। তাদের মুখ থেকে মুছে গেছে কৈশোরের আভা, বয়সের দাবি মেনে কণ্ঠস্বরে এসেছে ভারিক্কি ভাব। সেই অদ্ভুত সুন্দর সকাল ছাপিয়ে আমার কেন জানি গল্পবলা বিকেলগুলোর কথাই মনে পড়ছিল বারবার। শুকিয়ে যাওয়া গাছের একটা গুঁড়িতে বসে বিড়বিড় করে বলছিলাম যেন—

বুড়িয়ে গেছে সময়, ফুরিয়ে গেছে আমার গল্পবলা বিকেলগুলো।

মো. ওমর সানী আকন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

বড় বেশি ভালোবাসত

বড় বেশিই আশ্চর্য হলাম আমি, কেন জানি আমার বারবার বাবার কথা মনে পড়েছে। হঠাৎ বেলা আড়াইটায় ফোন বেজে উঠল। সংবাদ এল, বাবা আজ (৩০ নভেম্বর ২০১৬) বেলা দুইটায় মারা গেছেন। শুনেই অবাক ও আশ্চর্য হলাম আমি। জানেন, বাবা আমাকে অনেক ভালোবাসতেন। কখনো আমার কোনো কষ্ট সহ্য করতে পারতেন না। কিন্তু দুঃখের বিষয়, পৃথিবী থেকে বিদায় নেওয়ার সময় তিনি আমাকেই শেষ দেখাটা দেখতে পারলেন না।

বাবা, আমি তোমাকেই বলছি...তুমি আমাকে ক্ষমা করে দিও। আর আশা করি, আল্লাহ তোমাকে পরকালে বেহেস্তবাসী করুন।

মো. মিজানুর রহমান

কেরানীর হাট, মীরপাড়া, রংপুর।

লেখা পাঠানোর ঠিকানা

অধুনা, প্রথম আলো, সিএ ভবন, ১০০ কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।

ই-মেইল: adhuna@prothom-alo.info ফেসবুক: facebook.com/adhuna.PA.

খামের ওপর ও ই-মেইলের subject-এ লিখুন ‘মনের বাক্স’