কান পেতে থাকি মৃতদের ধারাভাষ্যে
মরে যাই গোপনে ও মরছি প্রকাশ্যে।
বারবার মরে কারা, কই যায়? যাকগে
মৃত্যু তো লেখা আছে নানা দুর্ভাগ্যে!
: মারা যাই বারবার? কন কী হে? ক্যামনে?
: সময় কি আছে হাতে? জেনে নিন, অ্যামনে—
আমি মরি দিনে আর তুমি মরো রাতে
ওরা মরে অচেনা ও অদৃশ্য হাতে।
সারা দিন কেন মিছে ‘খাইখাই’ কহো রে
খেয়ে খেয়ে মরে যাই ভেজালের বহরে।
শিশুদের মন মরে ভারী ব্যাগ বইতে
ছোট বলে পারছে না, গুছিয়ে তা কইতে।
কেউ মরে গোল্ডেন জিপিএ না পাওয়াতে
শিশুপ্রাণ মেরে ফেলে টায়ারের হাওয়াতে।
কেউ মরে অবহেলা পেয়ে রোজ পেষণে
শিক্ষাজীবন মরে জট লেগে সেশনে।
কর্ম তো খালি নাই, আছে শুধু কিচ্ছা
মরে তাই শিক্ষিত বেকারের ইচ্ছা।
তোষামোদে ভেসে যান অফিসের বস, রোজ
নিজে মরে, অন্যকে মারে, কেউ নেয় খোঁজ?
অন্যায়ে প্রতিবাদ? বোধ নেই কারও হায়
নিজেই কি মরছি না বিবেকের তাড়নায়?
মরিবার শত পথ, বলব না, না গুনে
কেউ মরে ললনার রূপের ওই আগুনে।
প্রেম মরে লোভে পড়ে, ভালোবাসা আসে না
প্রেমিক বা প্রেমিকার মড়া জলে ভাসে না।
নাগরিক আমি মরি, কী যে করি—ধুচ্ছাই
সরকারি কাজে যাব? ‘ঘুষ চাই, ঘুষ চাই’।
প্রতিদিন মরে যাই সন্ধ্যা ও সকালে
পাবলিক ট্রান্সপোর্টসংকটে, অকালে।
চিকুনগুনিয়া হলো প্রতি ঘরে? ঘরে না—
এডিসের কামড়ে কি কেউ মরে? মরে না।
রাস্তায় বাসে-ট্রাকে, কেউ মরে বাইকে
ফেসবুকে মারি তাকে কমেন্টে-লাইকে।
বীর মরে একবারই, ছুরি-ঘা বা গুলিতে
ভোটাররা মরে নেতাদের ফাঁকা বুলিতে।
কথা দিয়ে ‘জনতাকে রাখা হবে স্বর্গে’
জিতে গেলে নেতা বলে—দূরে গিয়ে মর গে!
মানিব্যাগে মানি নেই, এ কেমন সাজা রে
বাড়ির কর্তা মরে পণ্যের বাজারে।
ভাবি খুব দিই ডুব, এর থেকে সরে যাই
সিরিয়াল দেখে বলি—‘মরে যাই, মরে যাই’!
মরা ছাড়া গতি নাই, সময়ের ঘড়িতে
লেখা আছে—‘জন্মিলে হইবেই মরিতে’।