‘পরের কারণে স্বার্থ দিয়া বলি, এ জীবন মন সকলই দাও/ তার মতো সুখ কোথাও কি আছে? আপনার কথা ভুলিয়া যাও...’—কবি কামিনী রায় এ কথা বললেও অনেকেই কিন্তু কেবল নিজের সুখের পেছনেই অবিরত ছুটে বেড়ায়। সুখ বলতে তারা অর্থবিত্ত আর বৈভবকেই বোঝে। দিন-রাত আরও বেশি ভোগ্যবস্তুর সন্ধান করতে করতেই সব সময় কেটে যায় তাদের। ফলে তারা না পারে নিজের জন্য সময় ব্যয় করতে, না পারে কাছের মানুষদের সময় দিতে। এ ধরনের জীবনাচরণ মানুষকে বরং অসুখীই করে বলে মত দিয়েছেন মনোবিজ্ঞানীরা। তাঁদের পরামর্শ হলো, সুখী হতে চাইলে আপনাকে ইতিবাচক মানসিকতা লালন করতে হবে। সুখী হওয়ার পাশাপাশি ভালো মানুষ হওয়ার চেষ্টা থাকা জরুরি। জীবন যাপনের ধরন সুখের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে।
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা যায়, মানুষের প্রধান প্রধান মানসিক চাহিদার মধ্যে রয়েছে প্রতিযোগিতা, স্বকীয়তা, ইতিবাচক সম্পর্ক, আত্মস্বীকৃতি ও ব্যক্তিগত প্রবৃদ্ধি প্রভৃতি। অর্থ কিংবা খ্যাতির পেছনে দৌড়ানোর চেয়ে নিজস্ব প্রতিভার চর্চা ও সম্পর্কের দিকে নজর দিলে মানুষের সুখী হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। একই সঙ্গে নিজের প্রতি আস্থাও রাখতে হবে। তবেই আপনি নিজেকে সুখী ভাবতে পারবেন!
ভোগবাদী এই সমাজে অপেক্ষাকৃত কম কাজ ও সীমিত ভোগ করা যেমন পরিবেশের জন্য ভালো, তেমনি ভালো মানুষ হওয়ার জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক স্টেট ইউনিভার্সিটির অধিভুক্ত এম্পায়ার স্টেট কলেজের মারিয়াম ট্যাটজেল মনে করেন, মানুষের চাহিদার যেহেতু কোনো শেষ নেই, সে বেশি বেশি ভোগ করে, বেশি জায়গা দখল করে, জ্বালানি বেশি ব্যবহার করে। ফলে পরিবেশে কার্বনের পরিমাণ বাড়ে। একজন মানুষ কী চায় এবং তার কী আছে—এ দুটির মধ্যে যে পার্থক্য সেটিই মূলত অশান্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই যত কম বস্তুবাদী বা ভোগবাদী হওয়া যায়, সুখী হওয়ার সম্ভাবনাও তত বাড়ে।
সূত্র: খালিজ টাইমস