গোল্ডেন রেশিও অনুসারে যেভাবে বিশ্বের সেরা সুন্দরী হলেন জোডি কোমার

বিখ্যাত চিত্রকর্ম মোনালিসার সঙ্গে পেপসি বা টুইটারের লোগোর মিল কোথায়? উত্তরটা জানা না থাকলে প্রশ্নটাকে মনে হবে গোলমেলে। কোথায় মোনালিসা আর কোথায় পেপসি! তবে জানা থাকলে উত্তরটা দিতে কিন্তু ৫ সেকেন্ডও লাগবে না, সেটা হচ্ছে— গোল্ডেন রেশিও।

গোল্ডেন রেশিও মেনে তৈরি চিত্রকর্ম মোনালিসা ও পেপসির লোগো
গোল্ডেন রেশিও মেনে তৈরি চিত্রকর্ম মোনালিসা ও পেপসির লোগো

মোনালিসাকে আঁকতে গিয়ে ভিঞ্চি যেমন এই অনুপাত মেনে চলেছেন, একইভাবে টুইটার বা পেপসির লোগোও তৈরি হয়েছে গোল্ডেন রেশিও মেনে।

অভিনেত্রী জোডি কোমার হয়েছেন পৃথিবীর সেরা চেহারার নারী

এই গোল্ডেন রেশিও মেনেই ব্রিটিশ অভিনেত্রী জোডি কোমারকে পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর চেহারার নারী ঘোষণা করেছেন যুক্তরাজ্যের ফেমাস হার্লে স্ট্রিটের কসমেটিক সার্জন জুলিয়ান ডি সিলভা। ২৯ বছর বয়সী তারকা জোডির চেহারা গাণিতিকভাবে নিরীক্ষা করে এই রায় দিয়েছেন সিলভা। ‘গঠনগতভাবে নিখুঁত চেহারা’ খুঁজে বের করার এই বৈজ্ঞানিক উপায়কে বলা হয় গোল্ডেন রেশিও অব বিউটি ফি। যে পরীক্ষায় লিভারপুলে জন্ম নেওয়া জোডির চেহারা ৯৪.৫২ শতাংশ নম্বর পেয়ে সেরা হয়েছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এই গোল্ডেন রেশিও জিনিসটা আসলে কী?

গোল্ডেন রেশিও

গোল্ডেন রেশিও এমন একটি পরিমাপক, যা ইউরোপীয় রেনেসাঁর যুগে শিল্পী ও স্থপতিরা তাঁদের শিল্পকর্ম তৈরির পরিকল্পনায় ব্যবহার করতেন। বেশ কয়েক বছর ধরে বিজ্ঞানীরা সুন্দর চেহারা বাছাই করার ক্ষেত্রে এই পরিমাপকটির ব্যবহার শুরু করেন।

গোল্ডেন রেশিওর মাপজোখ

এই কাজে কয়েক ধরনের মাপজোখ করা হয়; নেওয়া হয় মুখের দৈর্ঘ্য এবং প্রস্থের মাপ, তারপর দৈর্ঘ্যকে প্রস্থ দিয়ে ভাগ করা হয়। গোল্ডেন রেশিওতে অনুপাত হওয়া উচিত ১ দশমিক ৬ হারে। যার অর্থ মুখটি লম্বায় হবে চওড়ার চেয়ে দেড় গুণের বেশি।

মুখের তিনটি অংশও পরিমাপ করা হয়, হেয়ারলাইন থেকে চোখের মাঝখান, চোখের মাঝখান থেকে নাকের নিচ এবং নাকের নিচ থেকে চিবুকের নিচ পর্যন্ত। মাপার পর তিনটি জায়গা সমান হলে তাকে সুন্দর হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়।

একজন ব্যক্তির মুখের অনুপাত ১ দশমিক ৬১৮-এর যত কাছাকাছি হবে, চেহারার দিক থেকে তিনি তত বেশি নিখুঁত। জোডি কমার জিতেছেন, কারণ শারীরিক দিক দিয়ে তাঁর চেহারা সবচেয়ে নিখুঁত। ঠোঁট আর নাকের অবস্থানের দিক থেকে তাঁর স্কোর ৯৮ দশমিক ৭। এর অর্থ হলো শারীরিকভাবে এগুলো নিখুঁত হওয়ার জন্য মাত্র ১ দশমিক ৩ শতাংশ স্কোর কম। ঠোঁটের আকৃতি আর চোখের অবস্থানের জন্যও সর্বোচ্চ স্কোর পেয়েছেন তিনি। ভ্রুর জন্য সবচেয়ে কম নম্বর পেয়েছেন তিনি, ৮৮ শতাংশ।

সেরা ১০ মুখ

গোল্ডেন রেশিও মেনে পৃথিবীর সেরা দশ নারী

গোল্ডেন রেশিও অনুসারে, জুলিয়ান ডি সিলভার করা সেরা ১০ সুন্দর মুখের তালিকার ২ নম্বরে আছেন মার্কিন অভিনেত্রী ও গায়িকা জেন্ডায়া। তাঁর পয়েন্ট ৯৪ দশমিক ৩৭। ৯৪ দশমিক ৩৫ শতাংশ নম্বর পেয়ে ৩ নম্বরে আছেন সুপার মডেল বেলা হাদিদ। ৯২. দশমিক ৪৪ নম্বর নিয়ে চারে আছেন মার্কিন গায়িকা বিয়ন্সে। ৫ নম্বরে আছেন গায়িকা আরিয়ানা গ্রান্ডে, তাঁর নম্বর ৯১ দশমিক ৮১। ৯১ দশমিক ৬৪ নম্বর নিয়ে পরের স্থানে আছেন গায়িকা টেইলর সুইফট, তারপরই ৯১ দশমিক ৩৯ নম্বর পেয়ে আছেন ব্রিটিশ মডেল জোডেন ডান, তালিকায় ৯১ দশমিক ২৮ নম্বর পেয়ে আছেন মডেল কিম কার্ডাশিয়ানও। একমাত্র ভারতীয় হিসেবে এই তালিকায় ৯ নম্বরে আছেন বলিউড অভিনেত্রী দীপিকা পাড়ুকোন। কিমের চেয়ে দশমিক ০৬ নম্বরে পিছিয়ে থাকা দীপিকার চেহারা গোল্ডেন রেশিও অনুসারে ৯১ দশমিক ২২ শতাংশ নিখুঁত। তালিকার ১০ নম্বর নামটি দক্ষিণ কোরিয়ার এক মডেলের। হো ইয়ং চং নামের এই মডেল অভিনেত্রী হিসেবে বিশ্বব্যাপী পরিচিতি পেয়েছেন নেটফ্লিক্সের জনপ্রিয় সিরিজ স্কুইড গেমসে অভিনয় করে। ৮৯ দশমিক ৬৩ শতাংশ পারফেক্ট চেহারা হো ইয়ংয়ের।

সূত্র: আইটিভি, মেট্রো, ইন্ডিয়া টুডে ও ডেইলি মেইল