জগিং–পরবর্তী খাবার সম্পর্কে সচেতন থাকা গুরুত্বপূর্ণ
জগিং–পরবর্তী খাবার সম্পর্কে সচেতন থাকা গুরুত্বপূর্ণ

জগিংয়ের পর কী খাবেন, কী এড়িয়ে যাবেন?

সকালের জগিং শরীর ও মন সতেজ রাখার এক দারুণ অভ্যাস। কিন্তু ব্যায়ামের আসল উপকারিতা পেতে গেলে ‘পোস্ট-ওয়ার্কআউট ডায়েট’ বা জগিং–পরবর্তী খাবার সম্পর্কে সচেতন থাকা গুরুত্বপূর্ণ। জগিংয়ের পর কী খাচ্ছেন বা খাচ্ছেন না, তার ওপর নির্ভর করে আপনার পেশি কত দ্রুত পুনরুজ্জীবিত হবে এবং আপনার শরীরের শক্তি কতটা দীর্ঘস্থায়ী হবে। সঠিক খাবার বেছে না নিলে উল্টো ক্লান্তি বা দুর্বলতা দেখা দিতে পারে।

কেন সঠিক খাবার জরুরি

জগিংয়ের সময় আমাদের পেশিগুলো শক্তি হিসেবে সঞ্চিত গ্লাইকোজেন ব্যবহার করে। এ ছাড়া পেশি টিস্যুতে সামান্য ভাঙন ধরে। তাই জগিং শেষ করার ৩০ মিনিট থেকে ১ ঘণ্টার মধ্যে এমন খাবার খাওয়া জরুরি, যা দুটি প্রধান উদ্দেশ্য পূরণ করবে—

১. গ্লাইকোজেন পুনরুদ্ধার

দ্রুত হজম হবে, এমন হালকা কার্বোহাইড্রেট–জাতীয় কিছু খেয়ে শরীরের হারানো শক্তি ফিরিয়ে আনা।

২. পেশি মেরামত

প্রোটিন গ্রহণ করে পেশির ক্ষতি মেরামত করা এবং পেশি গঠনে সহায়তা করা।

জগিংয়ের পর কী খাবেন

সকালে জগিংয়ের পর বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সহজলভ্য কিছু উপকারী খাবার নিচে দেওয়া হলো—

কার্বোহাইড্রেট (শক্তির জন্য)

পাকা কলা: এটি দ্রুত শক্তি দেয় এবং পটাশিয়ামের ঘাটতি পূরণ করে।

ওটস বা সুজি: দুধ বা দইয়ের সঙ্গে মিশিয়ে খেলে এটি ধীরে ধীরে শক্তি সরবরাহ করে।

রুটি বা টোস্ট: অল্প জ্যাম, মধু কিংবা বাড়িতে বানানো তরকারি দিয়ে খেতে পারেন।

অল্প জ্যাম, মধু দিয়ে রুটি বা টোস্ট খেতে পারেন

প্রোটিন (পেশি মেরামতের জন্য)

ডিম: সেদ্ধ বা অমলেট প্রোটিনের চমৎকার উৎস।

টক দই (চিনি ছাড়া): দইয়ের সঙ্গে ফল মিশিয়ে খেলে কার্বোহাইড্রেট ও প্রোটিনের মিশ্রণ পাওয়া যায়।

ডাল বা ছোলা সেদ্ধ: স্বাস্থ্যকর উদ্ভিজ্জ প্রোটিন সরবরাহ করে।

পানি ও ইলেকট্রোলাইট

জগিংয়ের পর প্রথম কাজটি হলো পর্যাপ্ত পানি খাওয়া। সাধারণ পানির পাশাপাশি অর্ধেক গ্লাস (১০০ মিলিলিটার) ডাবের পানি বা সামান্য লবণের শরবত কিংবা খাবার স্যালাইন খেলেও শরীরের হারানো ইলেকট্রোলাইট পুনরুদ্ধার হতে পারে।

যা খাবেন না বা এড়িয়ে চলবেন

অতিরিক্ত ফ্যাটযুক্ত খাবার
ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, পরোটা বা বেশি তেলযুক্ত ভাজাপোড়া খাবার এড়িয়ে চলুন। ফ্যাট হজম প্রক্রিয়াকে ধীর করে দেয়, যা গ্লাইকোজেন পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করে।


অতিরিক্ত চিনিযুক্ত পানীয়
প্রক্রিয়াজাত ফলের রস বা কোমল পানীয় খেলে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়লেও এটি দ্রুত কমে যায় এবং কোনো পুষ্টি সরবরাহ করে না।

চিনিযুক্ত পানীয় এড়িয়ে যান

ইলেকট্রোলাইট পানীয়
কোনো অবস্থাতেই ইলেকট্রোলাইট পানীয় খাওয়া যাবে না; কারণ, এতে কোন উপাদান কী পরিমাণে আছে, তা স্বাস্থ্যসম্মত কি না, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরীক্ষা করা কিংবা লাইসেন্স আছে কি না, তা আমরা বেশির ভাগই জানি না। তবে স্বাস্থ্যসম্মত হলে অবশ্যই খাওয়া যেতে পারে।

ফাইবার-সমৃদ্ধ খাবার
যদিও ফাইবার স্বাস্থ্যের জন্য ভালো, তবে জগিংয়ের ঠিক পরই অতিরিক্ত ফাইবারযুক্ত খাবার (যেমন বেশি পরিমাণে কাঁচা সবজি) হজমের সমস্যা করতে পারে।

সূত্র: হেলথ লাইন, জনস হপকিনস মেডিসিন, রানারস ডায়েট