পাশ্চাত্যে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে কর্টিসল ককটেল। বলা হচ্ছে, এটি এমন এক পানীয়, যা চাপের সঙ্গে সম্পর্কিত কর্টিসল হরমোনের মাত্রা কমাতে পারে। তাই কেউ এই পানীয় খেলে উজ্জীবিত হয়ে ওঠেন। আরও ধারণা করা হচ্ছে, চাপ কমাতে সহায়ক বলে ওজন কমাতেও কাজে আসবে এই পানীয়। আদতেই কি এই পানীয়র এত গুণ?
এটি মূলত ডাবের পানি, কমলার রস ও লবণের মিশ্রণ। অন্য কিছু উপাদানও যোগ করা যেতে পারে এতে। ডাবের পানিতে আছে পটাশিয়াম। কমলার রসে পাওয়া যায় ভিটামিন সি। আর লবণ হলো সোডিয়াম। পুষ্টি উপাদান বিবেচনায় এটি নিঃসন্দেহে দারুণ এক পানীয়। বাজারে তো ‘হেলদি ড্রিংক’ হিসেবে বিক্রি হচ্ছেই, বাড়িতেও বেশ আগ্রহের সঙ্গে তৈরি করা হচ্ছে এই পানীয়। তবে এই পানীয় মানবদেহে কর্টিসল হরমোনের মাত্রা কমাতে পারে, এমন কোনো প্রমাণ পাননি পাশ্চাত্যের গবেষকেরা। কর্টিসল ককটেলের ভালোমন্দ নানা দিক সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক স্কয়ার হাসপাতাল লিমিটেডের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী কনসালট্যান্ট ডা. তাসনোভা মাহিনের কাছ থেকে।
কর্টিসল ককটেলের মতো পানীয় থেকে ভিটামিন সি ছাড়াও নানা ধরনের খনিজ উপাদান পাওয়া যায়। সুস্বাদু এই পানীয় আপনার দেহের পানির চাহিদা মেটাবে। ফলে আপনি থাকবেন সতেজ। অন্যান্য পুষ্টি উপাদানের কারণেও উদ্দীপিত হয়ে উঠবেন। আপনার চুল ও ত্বক থাকবে প্রাণবন্ত।
কর্টিসল ককটেলে এমন কোনো উপাদান নেই, যা ওজন কমাতে বা মেদ ঝরাতে সাহায্য করবে। পানীয়টির মাধ্যমে সত্যিকার অর্থে কর্টিসল হরমোনের মাত্রা কমানো সম্ভব হলে ওজন কমানোর সম্ভাবনা সৃষ্টি হতো। কিন্তু তা সম্ভব নয়। তাই বুঝতেই পারছেন, ওজন কমাতে এর কোনো ভূমিকা নেই। তবে এ কথা ঠিক যে চিনি মেশানো পানীয়র পরিবর্তে আপনি কর্টিসল ককটেলের মতো কোনো স্বাস্থ্যকর পানীয় খেলে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হবে।
একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির জন্য এমন লবণ দেওয়া পানীয় নিয়মিত গ্রহণ না করাই ভালো। অতিরিক্ত লবণ গ্রহণ করলে উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ে। তবে অতিরিক্ত ঘাম হলে অবশ্য এই পানীয় খাওয়া ভালো। কিন্তু যাঁদের ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদ্রোগ, কিডনির রোগ কিংবা লিভার বৈকল্যের মতো কোনো রোগ আছে (যেটির কারণে বাড়তি লবণ গ্রহণ করা ঝুঁকিপূর্ণ), তাঁদের জন্য এ পানীয় নিরাপদ নয়।