মানুষের সঙ্গে মানুষের বন্ধুত্বপূর্ণ, গভীর সম্পর্কের কোনো বিকল্প নেই
মানুষের সঙ্গে মানুষের বন্ধুত্বপূর্ণ, গভীর সম্পর্কের কোনো বিকল্প নেই

যে ৫ উপায়ে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আপনি হবেন আরও সুখী

অনেকেরই বয়স বাড়া নিয়ে কপালে দুশ্চিন্তার বলিরেখা পড়ে। অনেকেই ভাবেন, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হয়তো বেঁচে থাকার উদ্দেশ্যগুলো ফিকে হয়ে আসে। কিন্তু আপনি কেন তা হতে দেবেন? কীভাবে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আরও সুখী হবেন, সে বিষয়ে ‘টাইম’ সাময়িকীতে পরামর্শ দেন মার্কিন জেরিয়াট্রিশিয়ান বা বার্ধক্যবিশেষজ্ঞ ও লেখক ডা. কেরি বার্নাইট। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কীভাবে আপনি আরও সুখী, আত্মতৃপ্ত আর পরিপূর্ণ হতে পারেন, তেমনই ৫টি উপায় বাতলে দিয়েছেন এই চিকিৎসক ও মনোবিদ।

১. জিইয়ে রাখুন কৌতূহল

বয়স যতই বাড়ুক না কেন, ভেতরের শিশুটাকে বাঁচিয়ে রাখা আপনার দায়িত্ব। একটা কৌতূহলী মনের কাছে প্রতিটি দিন একেকটা চমক। ডা. কেরি বার্নাইট বলেন, ‘কৌতূহলী মন থাকলে বাকিটা খুবই সহজ।

আপনি প্রতিনিয়ত নতুন কিছু শিখতে চাইবেন। নিজের আত্মিক উন্নতির দিকে মন দেবেন। আর নতুন কিছু শেখার আনন্দের সঙ্গে আর অন্য কিছুরই তুলনা চলে না।’

২. মানুষে মানুষে যোগাযোগ

ডা. কেরি বার্নাইট বলেন, ‘আমার সামনে যখন একজন বিষণ্ন, হতাশ বৃদ্ধ মানুষ এসে বসেন, তখন তাঁর কাছে জানতে চাই, আজ কার কার সঙ্গে কথা হলো? কী কথা হলো? মেয়েকে বা নাতিকে টেক্সট করেছিলেন? তাঁর চোখ জ্বলজ্বল করে ওঠে। তিনি আগ্রহ নিয়ে বলতে থাকেন।’

আদতে মানুষের সঙ্গে মানুষের বন্ধুত্বপূর্ণ, গভীর সম্পর্কের কোনো বিকল্প নেই।

৩. শিশুদের সঙ্গে সময় কাটান

কে না জানেন, শিশুদের সঙ্গে সময় কাটানো খুবই ‘থেরাপিউটিক’। আর সেটা যদি হয় নিজের নাতিপুতি, তাহলে তো কথাই নেই! আপনি তাদের সঙ্গে গল্প করুন, সময় কাটান, তাদের কথা শুনুন, তাদের স্পর্শ করুন।

তাদের আপনার সময়ের গল্প, অভিজ্ঞতার কথা বলুন। গবেষণায় দেখা গেছে, শিশুদের সঙ্গে সপ্তাহে তিন দিন অন্তত ২ ঘণ্টা করে সময় কাটানোর ফলে আলঝেইমার্স ডিজিজসহ বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন মস্তিষ্কের রোগের আশঙ্কা ৫৪ শতাংশ পর্যন্ত কমে। শারীরিকভাবে কর্মক্ষম ও মানসিকভাবে চনমনে থাকাও সহজ হয়।

শিশুদের সঙ্গে সময় কাটানো খুবই ‘থেরাপিউটিক’

৪. বদলে যাওয়া পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিন

অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে অত্যন্ত দ্রুতগতিতে বদলে যাচ্ছে পৃথিবী। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অনেকে অতীতে বাস করতে শুরু করেন। আর এতেই একজন ব্যক্তি ক্রমেই ‘অপ্রাসঙ্গিক’ হয়ে পড়েন।

তাঁর সঙ্গে বর্তমানের কেউ খাপ খাওয়াতে পারে না। ক্রমেই তিনি হয়ে ওঠেন অন্যের ‘বোঝা’। আর ঠিক এ কারণেই সময়ের সঙ্গে, পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার কোনো বিকল্প নেই। তাই আপনার বয়স যতই হোক না কেন, বর্তমানে বাঁচুন।

৫. অন্যকে কিছু একটা দিন

প্রতিদিন আপনি অন্যকে কিছু দেওয়ার চেষ্টা করুন। নিজের জন্য তো বাঁচবেনই, অন্যের জন্যও বাঁচুন। প্রতিদিন কিছু না কিছু দেওয়ার চেষ্টা করুন। আপনি কাউকে কাজে সাহায্য করতে পারেন, পরামর্শ দিতে পারেন, বস্তুগত কিছুও দিতে পারেন।

ঘরের কোনো একটা দায়িত্ব নিতে পারেন। বাজার করতে পারেন। অন্যের স্বপ্নপূরণে সহায়তা করতে পারেন। কেবল পাশে থাকা, টুকটাক গল্প করা বা দুঃসময়ে দুটো নরম কথা, সান্ত্বনা অথবা এসবের কিছুই না, অন্যের কথা মন দিয়ে শুনুন।

এটিই হতে পারে আরেকজনের জন্য অনেক বড় কিছু। একজন ‘গিভিং’ ব্যক্তিত্ব হোন। তাতে আপনার গুরুত্ব কখনোই কমবে না। আপনিও মানসিকভাবে পরিতৃপ্ত থাকবেন।

সূত্র: টাইম