কেন ভেঙেছিল ব্র্যাড পিট ও জেনিফার অ্যানিস্টোনের সম্পর্ক

নব্বইয়ের দশকের শেষ দিকে হলিউডের বাতাসে কান পাতলে শোনা যেত জেনিফার অ্যানিস্টোন ও ব্র্যাড পিটের প্রেমকাহিনি। সেই প্রেমের খবর বিশ্বের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে পড়তে সময় লাগেনি। এই জুটির ফ্যান-ফলোয়ারও ছিল পৃথিবীব্যাপী। সেসব এখন অতীত। তবে অনেকের কাছেই এই জুটির সেই প্রেমের রোমাঞ্চ এখনো রয়ে গেছে হৃদয়ের গভীরে। ছবি দেখতে দেখতে জেনে নেওয়া যাক বিস্তারিত।

ব্র্যাড পিট ও জেনিফার অ্যানিস্টোনের প্রথম দেখা ১৯৯৪ সালে। তবে তাঁরা ডেট করতে শুরু করেন ১৯৯৮ সাল থেকে।
কেন ভেঙেছিল ব্র্যাড পিট ও জেনিফার অ্যানিস্টোনের সম্পর্ক
১৯৯৯ সালের এমি অ্যাওয়ার্ডের লালগালিচায় এই দুজন যুগল হিসেবে দেখা দেন, যা রীতিমতো সাড়া ফেলে দেয়। জেনিফারের ঝলমলে সিকুইনের গাউনটি সে সময় বিশ্ব ফ্যাশনকে দারুণভাবে প্রভাবিত করেছিল।
২০০০ সালের জুলাই মাসে তাঁরা যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার মালিবু সাগরপাড়ে হইচই ফেলে দিয়ে বিয়ে করেন।
২০০০ সালের সেপ্টেম্বরে তাঁরা বিবাহিত জুটি হিসেবে প্রথম জনসমক্ষে দেখা দেন। সেদিন জেনিফারের পরনে ছিল খুবই মিনিমালিস্টিক কাঁধখোলা একরঙা লাল গাউন।
২০০১ সালের নভেম্বরে জেনিফার অভিনীত তুমুল জনপ্রিয় সিরিজ ‘ফ্রেন্ডস’-এর থ্যাংকস গিভিং এপিসোডে অতিথি হিসেবে দেখা দেন ব্র্যাড পিট। সেটিই জেনিফার ও পিটের প্রথম পর্দা ভাগ করে নেওয়া।
২০০৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে জেনিফার অ্যানিস্টোন ‘গার্ডিয়ান’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানান, তিনি ব্র্যাড পিটের সন্তানের মা হতে চান। কিছু শারীরিক জটিলতার কারণে তাঁরা আইভিএফ বা ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশনের সহায়তা নেওয়ার কথা ভাবছেন।
২০০৫ সালের জানুয়ারিতে জেনিফার ও ব্র্যাড দুজনই বিচ্ছেদের ঘোষণা দেন। কেননা তত দিনে ব্র্যাড পিট ও অ্যাঞ্জেলিনা জোলির প্রেম রীতিমতো ওপেন সিক্রেট। ২০০৪ সালে ‘মিস্টার অ্যান্ড মিসেস স্মিথ’ সিনেমার শুটিং করতে গিয়ে প্রেম হয় পিট ও জোলির।
২০০৫ সালের অক্টোবরে কাগজে-কলমে বিচ্ছেদ চূড়ান্ত হয় জেনিফার অ্যানিস্টোন ও ব্র্যাড পিটের। ২০০৭ সালে বিচ্ছেদের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে ‘পিপল ম্যাগাজিন’কে অ্যানিস্টোন বলেন, ‘ব্র্যাডের সঙ্গে আমার সংসার টেকেনি, এর মানে এই নয় যে সেটা সফল বিয়ে ছিল না। আমাদের বিবাহিত জীবন সুন্দর ছিল। আমরা অনেক ভালো সময় কাটিয়েছি। আমি কাউকে দোষ দিই না। ওর (পিটের) জন্য আমার শুভকামনা।’
বিচ্ছেদের পর জেনিফার অ্যানিস্টোন পুরোপুরি ভেঙে পড়েছিলেন। ‘দ্য এলেন ডিজেনারেস শো’য়ে বলেন, ‘আমার সব স্বপ্ন শেষ হয়ে গেল। সে সময় আমি (পিটের সন্তানের) মা হওয়ার জন্য চেষ্টা করছিলাম। যে যা বলত, তা-ই করতাম। চীনা হারবাল চা খাওয়া থেকে নিজের ডিম্বাণু সংরক্ষণ—সব। আমি এমনিতেই (মা হতে না পারার জন্য) চূড়ান্ত হতাশায় ভুগছিলাম। এমন সময়…আমি আমার জীবনের সবচেয়ে কঠিন অধ্যায়ে ঢুকে পড়লাম।’
বিবাহিত সম্পর্কে থেকে প্রতারণার পরও কখনো ব্র্যাড পিট সম্পর্কে প্রকাশ্যে কোনো নেতিবাচক মন্তব্য করেননি জেনিফার অ্যানিস্টোন।
অ্যাঞ্জেলিনা জোলির সঙ্গে ব্র্যাড পিটের বিচ্ছেদের পর এবং জাস্টিন থেরক্সের সঙ্গে জেনিফার অ্যানিস্টোনের বিচ্ছেদের পর নতুন করে আলোচনায় আসে পিট ও জেনিফারের সম্পর্ক।
২০২০ সালে স্ক্রিন অ্যাক্টরস গিল্ড অ্যাওয়ার্ডের লালগালিচায় জেনিফার ও ব্র্যাডের এমন কিছু মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দী হয়, যা তাঁদের পুনরায় সম্পর্কে ফেরার গুজবকে উসকে দেয়।
সেবার পিট ও জেনিফার দুজনই পুরস্কার জেতেন। অ্যানিস্টোনের পুরস্কার ঘোষণার সময় পিটকে নার্ভাস দেখাচ্ছিল। পিট মঞ্চের বাইরের বড় পর্দায় অ্যানিস্টোনের পুরস্কার নেওয়া দেখেন এবং হাততালি দেন।
২০২২ সালে ‘এনবিসি’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ব্র্যাড পিটের সঙ্গে নিজের সম্পর্কের বিষয়ে বলেন জেনিফার অ্যানিস্টোন, ‘একসময় আমাদের সম্পর্ক ছিল গভীর ভালোবাসার, সম্মান আর বন্ধুত্বের। ভালোবাসা না থাকলেও সম্মান ও বন্ধুত্ব আছে, আর সেটা থাকবে।’
১৯৯৮ সালের এই ছবি নাহয় ব্র্যাড পিট ও জেনিফার অ্যানিস্টোনের ভালোবাসার নীরব সাক্ষী হয়েই থাক!