জয়া আহসান প্রথম নিজের শাড়িটি পেয়েছিলেন কবে

আজকাল অনেকে মায়ের বিয়ের শাড়ি পরেন নিজের বিয়েতে। তবে অভিনেত্রী জয়া আহসান পরলেন ভিন্ন কারণে। পশ্চিমবঙ্গের সংবাদমাধ্যম ‘আনন্দবাজার ডটকম’–এর এক ফটোশুটে পরলেন তাঁর মায়ের বিয়ের শাড়ি। হ্যান্ডলুম ডে উপলক্ষে এই ফটোশুটের ছবি প্রকাশিত হয় গত ৭ আগস্ট। আজ ২২ অক্টোবর সেই ফটোশুটের কয়েকটি ছবি জয়া আহসান তাঁর ফেসবুক পেজে শেয়ার করেছেন। সঙ্গে শাড়ি দুটি নিয়ে লিখেছেন ছোটবেলার কিছু স্মৃতি। এখানে জয়ার প্রকাশিত ছবিগুলোর সঙ্গে সেই ফটোশুটের কিছু ছবি দেওয়া হলো।

জয়া লিখেছেন, ‘এই ছবিগুলোতে যে দুটি শাড়ি দেখা যাচ্ছে, সেগুলোর বয়স ৪৫ বছর; আসলে এগুলো আমার মায়ের বিয়ের শাড়ি। একটি বিয়ের, একটি বউভাতের। বাবা কিনে নিয়ে গিয়েছিলেন কলকাতা থেকেই। সোনার সুতায় কাজ করা এক চিরন্তন রূপকথা, এখনো ঠিক যেন নতুন নতুন বিবাহের গন্ধে ভরপুর।’
ছবি: জয়া আহসানের ফেসবুক পেজ থেকে
এরপর লিখেছেন, ‘এই দুটি শাড়ি নিয়ে সেই কিশোরী বেলা থেকে আমরা দুই বোন কী কাড়াকাড়িটাই–না করেছি! বিবাদ হোক বা খুনসুটি, যা–ই বলি না কেন, সেটি হতো কে কোনটা নেবে তা নিয়ে! আমি বলতাম, নীলটা আমার; বোনের পছন্দ ছিল টুকটুকে লালটা! কখনো কখনো কিশোরী–খেয়ালে পছন্দ যে ওলট–পালট হতো না তা নয়; পরে বুঝেছি, এই দুটি শাড়িই আমাদের কাছে অমূল্য সম্পদের মতো, আর তাতেই এত টান।’
জয়া বলেছেন, ‘মৌসুমী ভৌমিকের গানের সেই যে মরমি লাইনটা, “কিছু ফেলতে পারি না”, আমার হয়েছে সেই অবস্থা। সবকিছুর ওপরেই স্নেহ, একটা অদ্ভুত মায়া। আমার মায়ের যত পুরাতন শাড়ি, মায়ের বিয়ের শাড়ি, আমার জন্মের আগে মায়ের স্বাদ ভক্ষণের শাড়ি—সব রয়ে গেছে আমার কাছে। আলমারির যত্নে, ন্যাপথলিনের রূপকথায় আত্মকথার ইতিহাস। আর আমার মাতৃতান্ত্রিক শ্রদ্ধাজ্ঞাপন মাত্র। এবার হঠাৎ সুযোগ হলো এই দুটি শাড়ি পরার…সুন্দর করে স্টাইলিং করে ছবিগুলো তুললাম…আশা করি সবার পছন্দ হবে এই ফটোশুট।’
আনন্দবাজার ডটকমের ফটোশুটে শাড়ি দুটিকে ড্রেপিং করে একসঙ্গে পরানো হয়েছে। তার সঙ্গে সাবেকি ধাঁচের সোনার গয়না হিসেবে কয়েক লহরের সীতাহার আর হাঁসুলির নকশায় গড়া একটি হার পরানো হয়। সীতাহারের সঙ্গে মিলিয়ে বড় কানের দুল আর দুই হাতে মোটা ও চিকন একগোছা বালা।
জয়ার খোঁপায় ব্যবহার করা হয়েছে সোনার কাঁটা। জয়ার মেকআপ করেন কলকাতার মেকআপ আর্টিস্ট নূর আলম। পুরোনো শাড়ির সঙ্গে জয়ার সাজ নিয়ে আনন্দবাজার ডটকমকে নূর আলম বলেন, ‘যেহেতু জমকালো শাড়ি, তাই রূপটান হালকা। বড় টিপ, নুড লিপস্টিক, ছিমছাম মেকআপ আর সোনার সাবেকি গয়না। এতেই সাজালাম জয়াকে।’
এই ফটোশুটে জয়া আহসানের সহশিল্পী ছিলেন কলকাতার অভিনেত্রী সোনালি বসু। সম্প্রতি প্রকাশিত অনিরুদ্ধ রায় চৌধুরীর ‘ডিয়ার মা’ সিনেমায় এই দুই অভিনেত্রী একসঙ্গে কাজ করেছেন। ফটোশুটের লোকেশনও ছিল সোনালি বসুর বাড়ি।
যন্ত্রের বদলে হাতে বোনা শাড়ি পরতেই ভালোবাসেন জয়া আহসান। প্রথম নিজের শাড়ি পেয়েছিলেন সপ্তম শ্রেণিতে পড়াকালে। দাদির কাছ থেকে সেই শাড়ি পেয়েই বুঝেছিলেন, ‘বড় হয়ে যাচ্ছি’। জয়া আহসান ও সোনালির এই ফটোশুটে ছবিগুলো তুলেছেন আলোকচিত্রী তথাগত ঘোষ।