
শিক্ষার্থীদের ভাষাগত ও যোগাযোগের দক্ষতা উন্নয়নের জন্য ২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) ল্যাঙ্গুয়েজ ক্লাব। বেশির ভাগ কার্যক্রম ইংরেজি ভাষাকেন্দ্রিক হলেও জার্মান ও জাপানি ভাষা নিয়েও কাজ করেন ক্লাবের সদস্যরা।
বাকৃবি ল্যাঙ্গুয়েজ ক্লাব দুই বছর ধরে ন্যাশনাল ল্যাঙ্গুয়েজ ফেস্ট ও ইন্টার ফ্যাকাল্টি ল্যাঙ্গুয়েজ লিগ নামের দুটি প্রতিযোগিতা করছে। গত বছর ন্যাশনাল ল্যাঙ্গুয়েজ ফেস্টের দুই দিনের আয়োজনে ১৫টি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২৮০–এর বেশি শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছেন। বাংলা ও ইংরেজি ছাড়া অন্যান্য ভাষাও এই প্রতিযোগিতায় প্রাধান্য পায়।
ইন্টার ফ্যাকাল্টি ল্যাঙ্গুয়েজ লিগে অংশ নেয় কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদ। এই প্রতিযোগিতায় শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ অনুষদের প্রতিনিধিত্ব করেন। তবে ক্লাবের মূল আকর্ষণ—প্রেজেন্টেশন ডে ও লার্নিং ডে। প্রেজেন্টেশন ডেতে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন বিষয় ইংরেজিতে উপস্থাপন করেন। কয়েক মাস ধরে চলা এ আয়োজনের সেরাদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় একটি ‘ফাইনাল প্রেজেন্টেশন’। এসবের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা একদিকে যেমন ইংরেজিতে দক্ষ হয়ে ওঠেন, তেমনি পাবলিক স্পিকিং অর্থাৎ অনেকের সামনে নিজের ভাবনা উপস্থাপনের জড়তাও কেটে যায়।
ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মাহাবুব বলেন, ‘প্রতিযোগিতাগুলোর কারণে শিক্ষার্থীরা ইংরেজি শেখার পাশাপাশি নিজেদের সক্ষমতা যাচাই করতে পারে। সে অনুযায়ী ভবিষ্যতের জন্য নিজেদের তৈরি করে নেয় তারা। নিজের কথাই বলি। আগে ইংরেজিতে ফ্রি হ্যান্ডে কিছু লিখতে ভয় পেতাম। এই ভয় কাটিয়ে উঠতে পেরেছি ক্লাবে যুক্ত হয়ে। তা ছাড়া আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতিবছর শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে দেশের বাইরে যায়। তাদের জন্যও এসব প্রতিযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।’
ইংরেজি ভাষাকে শিক্ষার্থীদের কাছে আনন্দদায়ক করে তুলতে বিভিন্ন খেলাধুলা ও আলোচনার আয়োজন করা হয়। পাশাপাশি ভাষা শিক্ষা ও যোগাযোগের দক্ষতা বাড়াতে প্রযুক্তির সাহায্য নেন তাঁরা। যেমন অনলাইনে বিভিন্ন অধিবেশন আয়োজন, ‘ওয়ার্ড অব দ্য ডে’ নামের অনলাইন গ্রুপে বিভিন্ন বিষয় ভাগাভাগি করে নেওয়া ইত্যাদি। এককথায় ইংরেজি ভাষা শিখতে ও তা শিক্ষার্থীদের কাছে সহজবোধ্য করে তুলতে বৈচিত্র্যপূর্ণ সব কার্যক্রম গ্রহণ করা হয় ক্লাবের পক্ষ থেকে।
প্রতিটি সেশনের পর ক্লাবের নতুন সদস্যের কাছে মতামত (ফিডব্যাক) চাওয়া হয়। কোথাও বুঝতে অসুবিধা হয়েছে কি না, কোনো উন্নতির সুযোগ আছে কি না, কী করলে আরও ভালো হয়...নানা পরামর্শ দেন শিক্ষার্থীরা। ফলে নতুনের পাশাপাশি পুরোনো সদস্যরাও উপকৃত হন। এতে বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ গড়ে ওঠে।
মোস্তফা মাহাবুব বলেন, ‘ইংরেজি আর সব ভাষার মতোই। নিয়মিত একটা নির্দিষ্ট সময় ইংরেজিতে কিছু লেখা এবং একটা ফ্রেন্ডস গ্রুপ গঠন করে সমসাময়িক কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করলে ভয় কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। তবে একটা ভাষায় দক্ষতা অর্জন করতে যেহেতু দীর্ঘ সময় প্রয়োজন, তাই অনেকে উদ্যম হারিয়ে ফেলে। সব বাধা অতিক্রম করেই লেগে থাকতে হবে।’