Thank you for trying Sticky AMP!!

কেঁচো সার উৎপাদন

মানুষের রোগজ্বালা ক্রমে বাড়ছে। এর একটা কারণ হলো দৈনন্দিন জীবনে আমরা যেসব খাবার খাচ্ছি, তার চাষে অতিরিক্ত রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহৃত হচ্ছে। অজান্তেই এসব রাসায়নিক শরীরে ঢুকে যাচ্ছে। তার প্রভাবে কিডনি বিকল হওয়া থেকে শুরু করে ক্যানসারের মতো দুরারোগ্য ব্যাধিও হচ্ছে। 

এই সমস্যার সহজ সমাধান জৈব পদ্ধতিতে চাষ। জৈব পদ্ধতিতে বানানো কেঁচো সারের ব্যবহার বাড়ানো গেলে রাসায়নিক সার ও কীটনাশকমুক্ত ও পরিবেশবান্ধব কৃষিব্যবস্থা গড়ে উঠতে পারে। এতে চাষের খরচের পাশাপাশি স্বাস্থ্যহানির ঝুঁকিও কমে যাবে। 

আশার কথা, রাসায়নিক সারের বিকল্প হিসেবে জৈব সার, বিশেষ করে কেঁচো সার ব্যবহারে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে। এমন অনেক ভোক্তা আছেন, যাঁরা যদি নিশ্চিত হতে পারেন অমুক কৃষিপণ্য উৎপাদনে রাসায়নিক সার ব্যবহৃত হয়নি, তাহলে বাজারদরের চেয়ে বেশি দাম দিতেও তাঁরা কুণ্ঠিত হন না। এই দিক বিবেচনায় নিয়ে অনেকেই কেঁচো সারের মতো পরিবেশবান্ধব সার উৎপাদনে ঝুঁকেছেন এবং আর্থিকভাবে সচ্ছলতা পেয়েছেন। 

এ ক্ষেত্রে কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের শংকুচাইল ছবিরপাড়া এলাকার বাসিন্দা মো. সেলিম ও তাঁর স্ত্রী নাজমা বেগম অনুসরণীয় ভূমিকা রাখছেন। প্রথম আলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই দম্পতি কেঁচো সার বিক্রি করে পরিবারে সচ্ছলতা ফিরিয়ে এনেছেন। জানা যাচ্ছে, প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর ২০১১ সালে কেঁচো সার উৎপাদন শুরু করেছিলেন। সব মিলিয়ে তিন লাখ টাকা খাটিয়ে বাড়িতেই এই সার উৎপাদনের ‘কারখানা’ গড়ে তুলেছিলেন। 

কেঁচো সার উৎপাদন সহজ। প্রথমে কাঁচা গোবর সংগ্রহ করে শেডের নিচে স্তূপ করতে হয়। এক মাস স্তূপ করে রাখার পর গোবরে পচন ধরে। এরপর সংরক্ষণ করা কেঁচো সেই পচা গোবরে ছেড়ে দেওয়া হয়। পচা গোবর খেয়ে কেঁচো মল ত্যাগ করে। ওই মলই মূলত সার। গোবরে ২১ দিন কেঁচো রাখার
পর জৈব সার তৈরি হয়। পরে ওই সার মোড়কজাত করে বিক্রি করা হয়। মো. সেলিম ও নাজমা বেগম এই প্রক্রিয়া অনুসরণ করে কেঁচো সার উৎপাদন করে আসছেন। এখন তাঁর তিনটি শেডে ২৫ থেকে ৩০ লাখ কেঁচো আছে। প্রতিটি কেঁচো এক টাকায় বিক্রি করা হয়। যাঁরা কেঁচো সার উৎপাদন করতে চান তাঁরা এসব কেঁচো কিনে নিয়ে যান। এ ছাড়া সেলিম এক কেজি কেঁচো সার বিক্রি করেন ১৫ টাকায়। 

সেলিম ও নাজমার এই উদ্যোগ মডেল হিসেবে তুলে ধরে সারা দেশের কৃষি খামারি ও কৃষকদেরও জৈব সার ব্যবহারে উৎসাহিত করা যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে সরকারের পক্ষ থেকে কৃষকদের মধ্যে ব্যাপকভিত্তিক প্রচার চালানো যেতে পারে।