র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সূত্রে বাংলাদেশে তৎপর নারী পাচারকারীদের এক ভয়ংকর চক্রের সন্ধান পাওয়া গেল, যারা প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে নারীদের মধ্যপ্রাচ্যে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করে দিচ্ছে সিরিয়ায়, যে দেশটিতে ভয়াবহ যুদ্ধ চলছে। এই আন্তর্জাতিক নারী পাচারকারী চক্র অবিলম্বে নির্মূল করার লক্ষ্যে প্রবল অভিযান শুরু করা জরুরি।
গত বৃহস্পতিবার প্রথম আলোয় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে র্যাব ও সিরিয়া থেকে ফিরে আসা তিন নারীর বক্তব্য থেকে জানা গেল, চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে বাংলাদেশ থেকে নারীদের সিরিয়া নিয়ে গিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে যৌনদাসী ও গৃহকর্মী হিসেবে। অন্তত ৪৩ জন নারীকে ইতিমধ্যে পাচার করা হয়েছে বলে র্যাব জানিয়েছে। আর সিরিয়া-প্রত্যাগত তিন ভুক্তভোগী নারীর ভাষ্য, যুদ্ধকবলিত সিরিয়ার বিভিন্ন শহরে অন্তত কয়েক শ বাংলাদেশি নারীকে যৌনকর্মী হিসেবে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে, তাঁরা সেখানে সীমাহীন অত্যাচার-নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। আমাদের আশঙ্কা, এই সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। কেননা, বাংলাদেশে চাকরির উদ্দেশে৵ বিদেশে যেতে আগ্রহী নারীর সংখ্যা প্রচুর এবং চাকরি দেওয়ার নামে নারী পাচারে তৎপর চক্র ও দালালের সংখ্যা অসংখ্য।
সিরিয়ায় নারী পাচার, যৌন ও গৃহকর্মী হিসেবে বিক্রিযুদ্ধকবলিত সিরিয়ায় যুদ্ধরত বিভিন্ন গোষ্ঠীর যোদ্ধাদের নারীদের যৌনদাসী হিসেবে ব্যবহার করার খবর আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে অনেক পাওয়া গেছে। কিন্তু জানা ছিল না যে আমাদের দেশের নারীদেরও অমন দুর্ভাগ্যজনক পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হয়েছে। আরও দুর্ভাগ্যের বিষয়, আমাদের দেশের নারীদের সিরিয়ায় নিয়ে বিক্রি করছে, তাঁদের সম্ভ্রম ও খোদ জীবনকেই বিপন্ন করছে এ দেশেরই কিছু মানুষ। তাদের সাধারণ নারী পাচারকারী বললে যথেষ্ট হয় না, বলতে হয় ভয়ংকর অপরাধী। এই অপরাধীদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের একান্ত দায়িত্ব।
নারী-শিশু পাচারকারী চক্রগুলো এ দেশে বহু বছর ধরে তৎপর। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সীমান্তরক্ষী বাহিনী ও ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করলে এটা কীভাবে সম্ভব? এই সংস্থাগুলোর কি জবাবদিহি নেই?
সিরিয়াসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে চাকরি দেওয়ার নামে নারী পাচার বন্ধ করতে অবিলম্বে অভিযান শুরু করা হোক।