Thank you for trying Sticky AMP!!

সিলেটে মেয়রের ওপর হামলা

সম্পাদকীয়

গত বুধবার দুপুরে সিলেট নগরের কেন্দ্রস্থল চৌহাট্টায় মেয়র আরিফুল হক, ১১ জন কাউন্সিলরসহ সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপর যে সশস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে, আমরা এর নিন্দা জানাই। দিনদুপুরে এমন দুর্বৃত্তপনা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। হামলাকারীদের পেছনে যে ক্ষমতাসীন রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট লোকজনের প্রত্যক্ষ মদদ ছিল, তা স্পষ্ট। ফয়সল আহমদ (ফাহাদ) নামে যে ব্যক্তি শটগান উঁচিয়ে মেয়র ও কাউন্সিলরদের ধাওয়া করেছিলেন, তিনি সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক।

মেয়র ও তাঁর লোকজনের ওপর হামলাটি চালিয়েছিল পরিবহনশ্রমিকদের একটি অংশ। কারণ, সিটি করপোরেশন চৌহাট্টায় গিয়েছিল মাইক্রোবাস ও প্রাইভেট কারের অবৈধ স্ট্যান্ড উচ্ছেদ করতে। সিলেট নগরীর কেন্দ্রস্থল যানজটমুক্ত করতে সিটি করপোরেশন গত বছরের শেষে যে উদ্যোগ নিয়েছে, এটা ছিল তারই অংশ। বছরের শুরুতে সিটি করপোরেশন ও ট্রাফিক পুলিশ চৌহাট্টা-জিন্দাবাজার-বন্দরবাজর সড়কে রিকশা চলাচল বন্ধ করে দেয় এবং অবৈধ পার্কিংয়ের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে। তার আগে ওই এলাকার ফুটপাত থেকে হকারদের সরিয়ে নিয়ে অন্যত্র পুনর্বাসন করা হয়। ফলে নগরটির কেন্দ্রীয় ওই এলাকার বিশৃঙ্খলা কমে যায়, সড়কে যানবাহন চলাচলের কাজটি আগের তুলনায় সহজ হয়ে আসে। কিন্তু মাইক্রোবাস ও প্রাইভেট কারের স্ট্যান্ড, যা চৌহাট্টা এলাকায় থাকার কোনো যুক্তি নেই এবং সে কারণে অনুমোদনও নেই, তা সেখান থেকে সরে যাচ্ছিল না বলে কিছু বিশৃঙ্খলা থেকেই যাচ্ছিল।

চৌহাট্টা এলাকার প্রায় আধা কিলোমিটার জায়গাজুড়ে প্রাইভেট কার ও মাইক্রোবাস পার্ক করে রেখে ভাড়ায় খাটানো হয়; এটাকেই বলা হচ্ছে ‘প্রাইভেট কার ও মাইক্রোবাসের স্ট্যান্ড’। কিন্তু কার্যত এটা অবৈধ পার্কিং। এ অবৈধ পার্কিং একটি সংঘবদ্ধ রূপ ধারণ করেছে, যা নিয়ন্ত্রণ করে আসছে ‘কার-মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়ন’। কিন্তু একটি কায়েমি স্বার্থবাদী গোষ্ঠীর অবৈধ কর্মকাণ্ডের কারণে নগরের কেন্দ্রস্থলের শৃঙ্খলা ফেরানোর উদ্যোগ বাধাগ্রস্ত হবে—এটা সিলেটবাসীর কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। তাঁরা নগরের বাসযোগ্যতা, শৃঙ্খলা, সৌন্দর্য বাড়ানোর উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন।

সুতরাং চৌহাট্টা এলাকা থেকে প্রাইভেট কার ও মাইক্রোবাসের তথাকথিত স্ট্যান্ডকে সরে যেতে হবে। সড়কপথে জনপরিবহনের যানবাহনের জন্য সিলেট নগরে তিনটি কেন্দ্রীয় টার্মিনাল আছে, সেগুলোতে তাদের জায়গা দেওয়া যেতে পারে। আর সিটি করপোরেশনের এ উদ্যোগকে বাধাগ্রস্ত করার সহিংস পথ ছাড়তে হবে। স্বেচ্ছাসেবক লীগের অবৈধ শটগানধারী নেতাকে গ্রেপ্তার করার পর পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করেছে। তাঁর বিচার ও শাস্তি হওয়া উচিত।