Thank you for trying Sticky AMP!!

সম্পাদকীয়

কুড়িগ্রামের মাঠটিকে এবার রেহাই দিন

নতুন প্রজন্ম নিয়ে অভিভাবকদের উৎকণ্ঠার শেষ নেই। একদিকে শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে নানা সমালোচনা, অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের সুষ্ঠু বিকাশে প্রযুক্তিপণ্যের হানা। এসব থেকে একচিলতে আশার আলো দেখাতে পারত খেলার মাঠ বা অবাধ জনপরিসর। যেখানে শিশু–কিশোরেরা খেলবে, দৌড়াবে এবং সেই সঙ্গে শারীরিক ও মানসিক শক্তি নিয়ে বেড়ে উঠবে। কিন্তু সেই সুযোগ কই এখন? মাঠগুলো দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। যা–ও কিছু মাঠ দেখা যায়, সেগুলোতেও নানাভাবে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে রাখা হয়।

কুড়িগ্রামের উলিপুরে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নামের একটি খেলার মাঠ আছে। স্থানীয় কিশোর–তরুণদের ক্রীড়াচর্চা ও অনুশীলনের বড় ভরসাস্থল এটি। কিন্তু দুঃখজনক হচ্ছে প্রায় আট মাস ধরে খেলার মাঠটিতে খেলা বন্ধ। এটি কী করে সম্ভব? এ দীর্ঘ সময় ধরে যদি খেলাই বন্ধ থাকে, সেটির কী করে আর স্টেডিয়াম থাকে? খেলার মাঠের চরিত্রও কীভাবে সেখানে টিকে থাকে?

প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, গত বছরের জুনে মিনি স্টেডিয়ামে হস্ত-কুটিরশিল্প ও পণ্য মেলা আয়োজনের উদ্যোগ নেয় উপজেলা পরিষদ। আট মাস খেলার মাঠ দখলে রেখে গত ১৯ জানুয়ারি মেলা শুরু হয়। ১২ ফেব্রুয়ারি মেলা শেষ হলেও এখন পর্যন্ত মাঠ থেকে মেলার সামগ্রী সরানো হয়নি। এতে খেলোয়াড়দের অনুশীলনে ব্যাঘাত ঘটছে।

প্রায় দুই বছর আগে স্থানীয় খেলোয়াড়দের অনুশীলন ও উপজেলা পর্যায়ে খেলাধুলা পরিচালনার জন্য ৪২ লাখ টাকা ব্যয়ে উলিপুর উপজেলা পরিষদ গেটের সামনে এই মিনি স্টেডিয়াম নতুন করে সাজানো হয়। গত বছর মিনি স্টেডিয়াম মাঠ উপজেলা প্রশাসন মেলার জন্য দখলে নেয়। এত টাকা খরচ করে খেলার মাঠটি উন্নয়ন করা হলো, সেটিকেই কেন মেলার জন্য বরাদ্দ দেওয়া হবে? উপজেলা প্রশাসন কী করে সেটি করতে পারল?

আরও দুঃখজনক হচ্ছে, মেলা না করেই মাসের পর মাস মাঠটিকে দখলে রাখা। জানা যাচ্ছে, উপজেলা পরিষদ ও তৎকালীন স্থানীয় সংসদ সদস্যের বিরোধের কারণে এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা যেখানে এলাকার ক্রীড়াচর্চাকে উৎসাহিত করবেন, সেখানে বরং তাঁরা প্রতিবন্ধকতাই তৈরি করেন। কথা হচ্ছে, দুই পক্ষের বিরোধ মেটাতে উপজেলা প্রশাসনের কি কোনো করণীয় ছিল না? উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ মাঠের সভাপতি, এখানে তিনি তাঁর ভূমিকা কতটা পালন করতে পেরেছেন, সেটিই প্রশ্ন। উলিপুরের এ খেলার মাঠে কোনো ধরনের মেলা বা সার্কাস নয়। বিষয়টি নিশ্চিত করতে আশা করি তিনি আন্তরিক হবেন।