চিঠিপত্র

শিক্ষা উপকরণের উচ্চমূল্যে দিশেহারা শিক্ষার্থীরা

মুদ্রাস্ফীতির প্রভাব বিশ্বের বিভিন্ন দেশসহ বাংলাদেশেও ব্যাপকভাবে পড়ছে। যার ফলে দ্রব্যমূল্যের দাম দ্বিগুণ বা তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। জ্বালানি থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় সকল দ্রব্যেরই মূল্য দফায় দফায় বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাদ পড়েনি শিক্ষা উপকরণও। শিক্ষার্থীদের বই-খাতা, কলমসহ আরও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দাম অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে। এসবের অতিরিক্ত মূল্যবৃদ্ধি শিক্ষার্থীদের শিক্ষা সামগ্রী কিনতে অপারগ করে তুলছে।

আগে ২০ টাকার খাতা যা এখন ৪০ টাকা জ্যামিতি বক্স ১৩০ টাকা, ২২০ টাকার সাদা কাগজ এখন ৪৮০ টাকা। এ ছাড়াও পাঠ্য সহায়ক বইয়ের দাম শিক্ষার্থীদের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থীর পক্ষে নিজের খরচ এবং বইপত্র কেনার খরচ জোগাড় করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। ফলস্বরূপ বই কেনার প্রতি আগ্রহ শিক্ষার্থীরা খুব দ্রুত হারিয়ে ফেলবে।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ২০-২১ শিক্ষাবর্ষের এক ছাত্র জানান, ‘আমাদের বিভাগ যেহেতু বাংলা, এর জন্য আমাদের অনেক বেশি উপন্যাস, নাটক, কাব্যগ্রন্থ এসব বই কেনার প্রয়োজন হয়। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে বইয়ের দাম এতটাই বৃদ্ধি পেয়েছে যে, আমরা কোনো সমালোচনা বই তো দূরের কথা, পাঠ্যবইই ক্রয় করতে কষ্ট হচ্ছে। এর ফলে আমাদের বই ক্রয়ের যে আগ্রহ এটাও দিন দিন কমতে বসেছে। আর কাগজ, কলম যা কিনা নিত্যপ্রয়োজনীয় তাতেও বেশ খানিকটা হিসাব আমাদের কষতে হচ্ছে।’

‘সবার জন্য শিক্ষা’ কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন বাংলাদেশ সরকার। কিন্তু শিক্ষা উপকরণের উচ্চমূল্যে দেশ হারাতে পারে অনেক মেধাবী শিক্ষার্থীকে। যারা হয়তো বই খাতা কেনার চেয়ে রিকশা চালানো বা পরিবারের জন্য উপার্জন করা সহজ এমন কোনো কাজে যেতে বাধ্য হবে। এর ফলে দেশ হারাবে তার উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ। তাই ‘সবার জন্য শিক্ষা’ কর্মসূচি যাতে বাধাগ্রস্ত না হয় সেই বিবেচনায় সরকারের দায়িত্বশীলদের শিক্ষা সামগ্রীর বাজার শক্ত হাতে মনিটরিং করা আবশ্যক। এ ছাড়াও সমাজের বিভিন্ন সমাজকল্যাণ মূলক সংস্থাগুলোকে বিনামূল্যে শিক্ষা উপকরণ প্রদান করে অসহায় শিক্ষার্থীদের নির্মাণাধীন ভবিষ্যতের পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ জানাচ্ছি।

ফারহানা ইবাদ রিয়া
শিক্ষার্থী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়।
ই-মেইল: farhana.ebad07@gmail.com