চিঠিপত্র

জলাবদ্ধতা

পুরান ও নতুন—রাজধানী ঢাকার দুই অংশেই বর্ষা এলে নেমে আসে নানা দুর্ভোগ। এর মধ্যে সবচেয়ে প্রকট সমস্যা হলো জলাবদ্ধতা। মাত্র আধা ঘণ্টার বৃষ্টিতেই ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো পানিতে তলিয়ে যায়। মিরপুর, মোহাম্মদপুর, মালিবাগ, শ্যামলী, বাড্ডা, যাত্রাবাড়ী, রামপুরা, ধানমন্ডি—এসব এলাকায় এমন দৃশ্য এখন নিয়মিত।

ঢাকার নাজুক ড্রেনেজ ব্যবস্থা, অপরিকল্পিত সড়ক নির্মাণ এবং পানিপ্রবাহের স্বাভাবিক পথ দখল হয়ে যাওয়াই এই সমস্যাকে দিন দিন দীর্ঘস্থায়ী করে তুলছে। স্কুলগামী শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে অফিসগামী কর্মজীবীরা সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির শিকার হন।

জলজটে আটকে থাকা যানবাহনের কারণে সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজট, অপচয় হয় মূল্যবান কর্মঘণ্টার। আবার অনেক সময় পানিতে ডুবে থাকা গর্ত কিংবা উঁচু-নিচু সড়কের কারণে ঘটে দুর্ঘটনাও। বয়স্ক মানুষ ও শিশুরা এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে থাকেন।

জলাবদ্ধতা শুধু সাময়িক অসুবিধা নয়, এটি স্বাস্থ্যঝুঁকিও বাড়িয়ে তুলছে। ড্রেনের দূষিত পানি রাস্তায় মিশে গিয়ে সৃষ্টি করছে জীবাণুবাহী পরিবেশ। ফলে সর্দি-কাশি, জ্বর, চর্মরোগসহ নানাবিধ পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেক মানুষ। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য পর্যাপ্ত ড্রেন নির্মাণের পাশাপাশি শহরের প্রাকৃতিক জলাধার পুনরুদ্ধার, খাল দখলমুক্ত করা এবং বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের ব্যবস্থা নিতে হবে। সেই সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি ও পরিকল্পিত পানি নিষ্কাশনব্যবস্থা ছাড়া এই সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়।

মালিহা মেহনাজ

শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ঢাকা