এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের সর্বশেষ অবস্থা জানান এ জেড এম জাহিদ হোসেন। ২৯ নভেম্বর
এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের সর্বশেষ অবস্থা জানান এ জেড এম জাহিদ হোসেন। ২৯ নভেম্বর

মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শ পেলে খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত: ডা. জাহিদ হোসেন

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শ পেলেই তাঁকে বিদেশে পাঠানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য এ জেড এম জাহিদ হোসেন। তিনি বলেছেন, বিএনপির চেয়ারপারসনের চিকিৎসায় দেশ ও বিদেশের চিকিৎসকদের সমন্বয়ে সব ধরনের চেষ্টা তাঁরা করছেন।

আজ শনিবার রাত ৯টার দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের সর্বশেষ অবস্থা জানান জাহিদ হোসেন।

চিকিৎসার জন্য বিএনপির চেয়ারপারসনকে বিদেশে নেওয়ার প্রসঙ্গে জাহিদ হোসেন বলেন, ‘যত তাড়াতাড়ি সম্ভব...এই মেডিকেল বোর্ড যখনই ওনাকে (খালেদা জিয়া) দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে পরামর্শ দেবে, আপনাদের (গণমাধ্যম) মাধ্যমে সবাইকে জানাব।’

এই চিকিৎসক বলেন, ‘চিকিৎসা দেওয়ার দায়িত্ব হসপিটালের, চিকিৎসাকর্মীর, স্বাস্থ্যকর্মী যাঁরা আছেন,...সারা পৃথিবীর সবচেয়ে ভালো যে চিকিৎসা ব্যবস্থা করা প্রয়োজন, সেটি ওনার (খালেদা জিয়া) এখানে করার আয়োজন করা হয়েছে।’

বিএনপির চেয়ারপারসনের স্বাস্থ্যের সর্বশেষ অবস্থার বিষয়ে এই চিকিৎসক বলেন, ‘ওনার অবস্থা গত তিন দিন...একই পর্যায়ে আছে।’

এর আগে বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, অসুস্থ খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার সব ব্যবস্থা করে রাখা হয়েছে। তবে এখন তাঁর শারীরিক অবস্থা সেই ধকল সামলানোর মতো নয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, বর্তমানে বিদেশে নেওয়ার মতো শারীরিক অবস্থায় খালেদা জিয়া নেই। শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল হলে চিন্তা করে দেখা হবে, বিদেশে নেওয়া সম্ভব কি না?

খালেদা জিয়া ফুসফুসে সংক্রমণ থেকে শ্বাসকষ্ট নিয়ে ২৩ নভেম্বর হাসপাতালে ভর্তি হন। এরপর দেখা দেয় নিউমোনিয়া। এর সঙ্গে রয়েছে কিডনি, লিভার, আর্থ্রাইটিস ও ডায়াবেটিসের পুরোনো সমস্যা। ফলে পরিস্থিতি এমন—একটি রোগের চিকিৎসা দিতে গেলে আরেকটির ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। তিনি বর্তমানে হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) চিকিৎসাধীন। এমন পরিস্থিতিতে গতকাল শুক্রবার খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থাকে ‘অত্যন্ত সংকটময়’ বলে উল্লেখ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নিয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ড প্রতিদিন বৈঠক করে চিকিৎসা দিচ্ছে।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দুই মামলায় খালেদা জিয়াকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। দুই বছরের বেশি সময় তিনি কারাবন্দী ছিলেন। ২০২০ সালের ২৫ মার্চ তৎকালীন সরকার নির্বাহী আদেশে তাঁর সাজা স্থগিত করে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি দেয়। এরপর ছয় মাস পরপর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর সাজা স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ বাড়াচ্ছিল সরকার। যদিও চিকিৎসার জন্য তাঁকে বিদেশ যেতে দেওয়া হয়নি। গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর খালেদা জিয়া মুক্তি পান। গত ৮ জানুয়ারি চিকিৎসার জন্য তিনি যুক্তরাজ্যে যান। চার মাস পর ৬ মে তিনি দেশে ফেরেন। এরপর একাধিকবার শারীরিক নানা জটিলতায় তাঁকে হাসপাতালে যেতে হয়েছে।