
শতাধিক পণ্যে বাড়ানো কর–শুল্ক প্রত্যাহার এবং সংক্ষুব্ধ ‘আদিবাসী’ ছাত্র-জনতার কর্মসূচিতে হামলার প্রতিবাদে সমাবেশ করেছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। বুধবার বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে বাম জোটের নেতারা বলেন, শেখ হাসিনা সরকার ব্যবসায়ীদের অবাধ লুটপাটের সুযোগ করে দিয়েছিল। লুটপাটের দায় সামাল দিতে ক্রমাগত জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়েছে। এর বিরুদ্ধেই জনগণ অভ্যুত্থান করেছে। অথচ এখন দেখা যাচ্ছে, শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও তাঁর অর্থনীতি বহাল আছে। সেই ধারাবাহিকতায় শতাধিক পণ্যে কর-শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। অবিলম্বে তা বাতিল করতে হবে। সংস্কার ও নির্বাচনের পথরেখা ঘোষণা করতে হবে। গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করতে চাইলে জনগণ আবারও রাজপথে নেমে আসবে।
অন্তর্বর্তী সরকার গণ–অভ্যুত্থানে শহীদদের তালিকা ও আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসার সুব্যবস্থা করতে পারেনি অভিযোগ করে বাম নেতারা বলেন, গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়েছে। এ অভ্যুত্থানে প্রায় দুই হাজার মানুষ শহীদ হয়েছেন। হাজার হাজার মানুষ আহত হয়েছেন। অনেকে চোখ হারিয়েছেন, অনেকে পঙ্গু হয়েছেন। অন্তর্বর্তী সরকার পাঁচ মাসেও শহীদদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা করতে পারেনি। আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসার সুব্যবস্থা করতে পারেনি। আহত ব্যক্তিরা চিকিৎসার দাবিতে রাস্তায় আন্দোলন পর্যন্ত করছেন, অথচ সরকারের টনক নড়ছে না।
এ সময় বাম জোটের নেতারা দুপুরে রাজধানীর মতিঝিলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) সামনে সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতার কর্মসূচিতে ‘স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি’ নামের একটি সংগঠনের নেতা–কর্মীদের হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। তাঁরা বলেন, অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচার করতে হবে।
সমাবেশ থেকে জোটের নেতারা রাষ্ট্র সংস্কার ও নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট পথরেখা ঘোষণা, জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার, আন্দোলনে নিহত ব্যক্তিদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ ও আহত ব্যক্তিদের পুনর্বাসনের দাবি জানান।
বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ–মার্ক্সবাদী) ও বাম জোটের সমন্বয়ক মাসুদ রানার সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) কেন্দ্রীয় সম্পাদক কাজী রুহুল আমীন, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু ও বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নজরুল ইসলাম।
সমাবেশ সঞ্চালনা করেন বাসদের (মার্ক্সবাদী) কেন্দ্রীয় নির্বাহী ফোরামের সদস্য রাশেদ শাহরিয়ার। আরও উপস্থিত ছিলেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন (প্রিন্স), বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ, বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আব্দুস সাত্তার প্রমুখ।