
ঘড়ির কাঁটা সকাল ৯টা ছোঁয়ার ১০ মিনিট আগে ল্যান্ডরোভার ব্র্যান্ডের ডিফেন্ডার মডেলের গাড়িতে করে লন্ডনের পার্ক লেনের ডরচেস্টার হোটেলের সামনে পৌঁছান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সাদা শার্টের ওপর ডোরাকাটা হালকা নীল রঙের স্যুট পরা তারেক রহমান গাড়ি থেকে নামতেই তাঁকে স্বাগত জানান প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমসহ অন্য সফরসঙ্গী ও হাইকমিশনের কর্মকর্তারা। সবার সঙ্গে করমর্দন করে হোটেলের সামনে সমবেত নেতা–কর্মীদের উদ্দেশে হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানিয়ে হোটেলে প্রবেশ করেন তারেক রহমান। এ সময় তাঁর সঙ্গে হোটেলে প্রবেশ করেন এক দিন আগে ঢাকা থেকে আসা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও তারেক রহমানের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবির।
তারেক রহমান হোটেলে প্রবেশের আগেই বৈঠক কক্ষে অপেক্ষা করছিলেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তারেক রহমান হোটেলে প্রবেশ করতেই বৈঠক কক্ষের বাইরে এসে তারেক রহমানকে স্বাগত জানিয়ে বৈঠক কক্ষে নিয়ে যান তিনি। দুই নেতা তখন হাস্যোজ্জ্বল চেহারায় করমর্দন করেন। এ সময় তারেক রহমানের হাত মুহাম্মদ ইউনূসের দুই হাতে মুষ্টিবদ্ধ ছিল। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ছিলেন খলিলুর রহমান ও শফিকুল আলম। অন্যদিকে তারেক রহমানের সঙ্গে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও হুমায়ুন কবির ছিলেন। সবার মধ্যে কুশল বিনিময়ের পর অধ্যাপক ইউনূস ও তারেক রহমান একান্ত বৈঠকে বসেন।
ভেতরে যখন বৈঠক চলছিল, হোটেলের বাইরে তখন নানা জল্পনাকল্পনা চলছিল। কফির কাপে চুমুক দিয়ে উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মী ও বিএনপির নেতা–কর্মীরা নিজেদের মতো করে ধারণা করছিলেন অধ্যাপক ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠকে কী কী বিষয়ে আলাপ চলছে। কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মী ডরচেস্টার হোটেলের বাইরের পরিস্থিতি সরাসরি সম্প্রচার করছিলেন। মাঝেমধ্যে ভেতর থেকে আসা বিভিন্ন তথ্য তাঁরা দর্শকদের জানাচ্ছিলেন।
ঘড়ির কাঁটায় যখন ১০টা ৩০ মিনিট তখন তারেক রহমানকে বহনকারী গাড়িটি পার্কিং থেকে এসে দাঁড়াল হোটেলের সামনে। বুঝতে বাকি রইল না বৈঠক শেষ এবং এখনই বের হচ্ছেন তারেক রহমান। দেড় ঘণ্টার বৈঠক শেষে অত্যন্ত হাস্যোজ্জ্বল চেহারায় হোটেল থেকে বেরিয়ে আসেন তারেক রহমান ও তাঁর দলের সদস্যরা। স্লোগানরত উপস্থিত নেতা–কর্মীদের ও গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশে হাত নেড়ে সকাল ১০টা ৩৫ মিনিটে হোটেল ত্যাগ করেন তারেক রহমান।
এরপর বেলা ১১টায় হোটেলের বলরুমে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ বৈঠক নিয়ে যৌথ বিবৃতি তুলে ধরেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। খলিলুর রহমানের লিখিত যৌথ বিবৃতিটি পড়ে শোনান। তাতে বলা হয়, সব প্রস্তুতি শেষ করা গেলে ২০২৬ সালে পবিত্র রমজান মাস শুরু হওয়ার আগের সপ্তাহেও (ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে) নির্বাচন আয়োজন করা যেতে পারে।