জামায়াতে ইসলামীর লোগো
জামায়াতে ইসলামীর লোগো

গোপালগঞ্জে সংঘর্ষ নিয়ে জামায়াতের বিবৃতি

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যকর তৎপরতা লক্ষ করা যায়নি, এটা উদ্বেগজনক

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশ ঘিরে হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যকর তৎপরতা দেখা যায়নি বলে এক বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে জামায়াতে ইসলামী। এ নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে দলটি।

আজ বুধবার সকাল থেকে গোপালগঞ্জে দফায় দফায় হামলা ও দুপুরে সংঘর্ষের পর বিকেলে গণমাধ্যমে বিবৃতি পাঠান জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘১৬ জুলাই (বুধবার) গোপালগঞ্জ জেলায় এনসিপির পূর্বঘোষিত “মার্চ টু গোপালগঞ্জ” কর্মসূচিতে পতিত আওয়ামী ফ্যাসিবাদের সন্ত্রাসী দোসররা হামলা চালিয়েছে। এনসিপির নেতৃবৃন্দ স্বাভাবিক নিয়মে প্রশাসনের সঙ্গে পূর্ব থেকেই আলাপ–আলোচনা করে তাঁদের কর্মসূচি বাস্তবায়নে সহায়তা চেয়েছেন। যেকোনো রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি বাস্তবায়নে সহযোগিতা করা প্রশাসনের দায়িত্ব। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যকর তৎপরতা লক্ষ করা যায়নি। এটি উদ্বেগজনক।’

গোপালগঞ্জ বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন কোনো জেলা নয় উল্লেখ করে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল লিখেছেন, ‘এটি বাংলাদেশেরই অংশ। সরকারকে গোপালগঞ্জসহ বাংলাদেশের সর্বত্র আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করার ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে হবে।’

মিয়া গোলাম পরওয়ার বিবৃতিতে আরও বলেন, ‘গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী শাসনের পতন হয়েছে। কিন্তু দেশ এখনো ফ্যাসিবাদমুক্ত হয়নি। তারা দেশকে আবারও অস্থিতিশীল করার লক্ষ্যে অপতৎপরতা চালাচ্ছে। তারই অংশ হিসেবে আজ গোপালগঞ্জে এনসিপির পূর্বঘোষিত “মার্চ টু গোপালগঞ্জ” কর্মসূচিতে পতিত আওয়ামী ফ্যাসিবাদের সন্ত্রাসী দোসররা হামলা চালিয়েছে। তারা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে, ভাঙচুর চালিয়েছে।’

বিবৃতিতে মিয়া গোলাম পরওয়ার আরও বলেন, ‘আওয়ামী দুর্বৃত্তরা ইউএনওসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গাড়ি ভাঙচুর করে তাতে অগ্নিসংযোগ করেছে। এই সন্ত্রাসী ঘটনায় পুলিশের কয়েকজন সদস্য আহত হয়েছেন। তাঁদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি এবং আওয়ামী দুর্বৃত্তদের এই সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’

আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোসরদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তি দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জামায়াতের নেতা মিয়া গোলাম পরওয়ার।

আজ গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশের আগে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সদর উপজেলার উলপুর-দুর্গাপুর সড়কের খাটিয়াগড় চরপাড়ায় পুলিশের গাড়িতে হামলা ও আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ওই এলাকা পরিদর্শনে গেলে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এম রাকিবুল হাসানের গাড়িতে হামলা করা হয়।

পরে বেলা পৌনে ২টার দিকে শহরের পৌর পার্কে এনসিপির সমাবেশস্থলে প্রথমবার হামলা করেন নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরা। পরে সমাবেশ শেষ করে এনসিপির নেতারা বের হলে তাঁদের গাড়ি ঘিরে দ্বিতীয় দফায় হামলা করেন আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরা। তখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন।