Thank you for trying Sticky AMP!!

দরুদ শরিফ

দরুদ শরিফ পড়ার ফজিলত

দরুদ শব্দের অর্থ

দরুদ ফারসি শব্দ। এর অর্থ শুভকামনা বা কল্যাণ প্রার্থনা। ধর্মের পরিভাষায় দরুদ বলতে বোঝায় ‘আস সালাত আলান নবী’, অর্থাৎ নবীজি (সা.)–এর জন্য শুভকামনা। হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর নাম উচ্চারণের সময় সর্বদা ‘সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ (অর্থ: আল্লাহর শান্তি বর্ষিত হোক তাঁর ওপর) বলা হয়। এটি একটি দরুদ।

আল্লাহর কাছে ইবাদত-বন্দেগি গ্রহণযোগ্য করতে পরম ভক্তি ও ভালোবাসাভরা অন্তরে নিবিষ্টভাবে নবী করিম (সা.)-এর ওপর বেশি বেশি দরুদ পাঠ করা একটি নেক আমল। দোয়া কবুলের জন্য মহানবী (সা.)-এর ওপর দরুদ পাঠ করা অত্যন্ত জরুরি। দরুদ শরিফ পাঠ করলে আল্লাহর দরবারে ইবাদতের বিনিময় সুনিশ্চিত হয়। দরুদ পড়া এমন এক ইবাদত, যা আল্লাহ অবশ্যই কবুল করেন।

পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ ও তাঁর ফেরেশতারা ও নবীর জন্য দোয়া করেন। হে বিশ্বাসীগণ, তোমরাও নবীর জন্য দোয়া করো ও পূর্ণ শান্তি কামনা করো।’ (সুরা আহজাব, আয়াত: ৫৬)

Also Read: সুরা লোকমানের উপদেশগুলো

দরুদ শরিফ পড়ার ফজিলত অপরিসীম
নামাজে দরুদ পড়ার নিয়ম

দুরুদ শরীফ

হজরত কাব ইবনে ওজারা (রা.) বলেছেন, ‘একদিন আমরা রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করলাম, হে আল্লাহর রাসুল! আপনার ওপর আমরা কীভাবে দরুদ পড়ব?

তিনি বললেন, বলো, আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদিন ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদ কামা সাল্লাইতা আলা ইবরাহিমা ওয়া আলা আলি ইবরাহিম ইন্নাকা হামিদুম মাজিদ; আল্লাহুম্মা বারিক আলা মুহাম্মাদিন ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদ কামা বারাকতা আলা ইবরাহিমা ওয়া আলা আলি ইবরাহিম ইন্নাকা হামিদুম মাজিদ।

অর্থাৎ, ‘হে আল্লাহ! তুমি মুহাম্মদ (সা.) এবং তাঁর বংশধরদের ওপর এই রূপ রহমত নাজিল করো, যেমনটি করেছিলে ইব্রাহিম ও তাঁর বংশধরদের ওপর। নিশ্চয়ই তুমি প্রশংসনীয় ও সম্মানীয়। হে আল্লাহ! তুমি মুহাম্মদ (সা.) এবং তাঁর বংশধরদের ওপর বরকত নাজিল করো, যেমন বরকত নাজিল করেছিলে ইব্রাহিম ও তাঁর বংশধরদের ওপর। নিশ্চয়ই তুমি প্রশংসনীয় ও সম্মানীয়’ (বুখারি, মুসলিম ও মিশকাত)।

Also Read: সুলায়মান (আ.) আল্লাহর কাছে যে দোয়া করেছিলেন

দরুদ শরিফ পড়ার ফজিলত

দরুদ শরিফ পড়ার ফজিলত অপরিসীম। একদিন এক লোক রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সামনে নামাজ পড়ে দোয়া করল, ‘হে আল্লাহ! তুমি আমার গুনাহ মাফ করো এবং আমার ওপর রহম করো!’ তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) তাকে বললেন, ‘ওহে মুসল্লি! তুমি খুব তাড়াহুড়া করেছ। শোনো, যখন তুমি নামাজ পড়বে, তখন প্রথমে আল্লাহর যথাযোগ্য প্রশংসা করবে, তারপর আমার ওপর দরুদ পাঠ করবে এবং (সবশেষে নিজের জন্য) দোয়া করবে।’ (তিরমিজি, আবু দাউদ, নাসায়ি ও মিশকাত)

ভক্তির সঙ্গে দরুদ শরিফ পড়লে বান্দার গুনাহ মাফ করা হয়। দরুদ পাঠের অশেষ সওয়াব সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আমার ওপর মাত্র একবার দরুদ পাঠ করে, আল্লাহ তার ওপর ১০ বার রহমত নাজিল করেন এবং কমপক্ষে তার ১০টি গুনাহ মাফ করেন। তার আমলনামায় ১০টি সওয়াব লিপিবদ্ধ করেন এবং আল্লাহর দরবারে তাঁর মর্যাদা ১০ গুণ বৃদ্ধি করে দেওয়া হয়।’ (নাসায়ি)

Also Read: মুসা (আ.)–এর কাছে মেয়ে বিয়ে দিলেন যে নবী

রাসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেছেন, ‘সেই ব্যক্তির নাক মাটিতে ঘেঁষে যাক, যার কাছে আমার নাম উচ্চারিত হয় অথচ সে আমার ওপর দরুদ পড়ে না।’ (তিরমিজি)

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘কিয়ামতের দিন সেই ব্যক্তি আমার সবচেয়ে নিকটবর্তী হবে, যে ব্যক্তি আমার ওপর সবচেয়ে বেশি দরুদ পড়ে।’ (তিরমিজি)

দৈনন্দিন জীবনে দরুদ শরিফ পাঠ করলে আল্লাহর দরবারে মানুষের দোয়া কবুল হয়। হাদিস শরিফে আছে, ‘কোনো দোয়াই আল্লাহর দরবারে কবুল হয় না, যতক্ষণ সে দোয়ার আগে ও পরে নবী করিম (সা.)-এর ওপর দরুদ পড়া না হয়।’

হাদিসে আরও আছে, ‘যে ব্যক্তি নবী করিম (সা.)-এর পবিত্র নাম শোনার পর তাঁর ওপর দরুদ পড়ে না, সে ব্যক্তি সবচেয়ে বড় কৃপণ। তার ধ্বংসের জন্য জিবরাইল (আ.) দোয়া করেন।’

হজরত ওমর ফারুক (রা.) বলেন, ‘দোয়া ততক্ষণ পর্যন্ত আসমান ও জমিনের মধ্যখানে আটকে থাকে, ওপরে ওঠে না, যতক্ষণ পর্যন্ত নবী করিম (সা.)-এর ওপর দরুদ না পড়ে।’ (তিরমিজি ও মিশকাত)

Also Read: কঠিন বিপদে আল্লাহর কাছে দোয়া