মঞ্জুরুল ইসলাম ও জাহানারা আলম
মঞ্জুরুল ইসলাম ও জাহানারা আলম

জাহানারার অভিযোগ নিয়ে কী বলছেন মঞ্জুরুল

বাংলাদেশ নারী দলের সাবেক নির্বাচক ও ম্যানেজার মঞ্জুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তুলেছেন ক্রিকেটার জাহানারা আলম। একটি ইউটিউব চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি অভিযোগ করেন, মঞ্জুরুল নারী দলের ক্রিকেটারদের ‘মন্দ স্পর্শ’ করতেন। তাঁর কাছে স্বাস্থ্য–সংক্রান্ত একান্ত ব্যক্তিগত তথ্য জানতে চাইতেন বলেও অভিযোগ ছিল জাহানারার।

শুধু মঞ্জুরুলের বিরুদ্ধেই নয়, জাহানারা আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে তাঁর ক্যারিয়ার ‘ধ্বংস করে দেওয়ার’ অভিযোগও তুলেছেন। বিশেষ করে ২০২১ সাল থেকে পরের দেড় বছর পর্যন্ত, সব ঘটনা বিসিবি ও নারী উইংয়ের উচ্চপর্যায়ে জানিয়েও বিশেষ কোনো প্রতিকার পাননি বলে জানিয়েছেন জাতীয় নারী দলের সাবেক এই অলরাউন্ডার।

১৯৯৯ থেকে ২০০৪ পর্যন্ত জাতীয় পুরুষ ক্রিকেট দলের হয়ে ১৭টি টেস্ট ও ৩৪টি ওয়ানডে খেলেছেন মঞ্জুরুল। অবসরের পর সাবেক এই বাঁহাতি পেসার বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) অধীনে বিভিন্ন দলের কোচিং ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে ছিলেন। ২০২০ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত ছিলেন জাতীয় নারী ক্রিকেট দলের নির্বাচকের দায়িত্বে। একই সময়ে বিভিন্ন সিরিজে দলের ম্যানেজার হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।

মঞ্জুরুল ইসলাম (সর্ব ডানে) এখন চীনে কোচিং করাচ্ছেন

সাবেক এই পেসার এখন কাজ করছেন চীনে নারী ক্রিকেট দলের প্রধান কোচ হিসেবে। আজ মুঠোফোনে তিনি প্রথম আলোর কাছে দাবি করেছেন, জাহানারার সব অভিযোগই ভিত্তিহীন ও মিথ্যা। দেশে এসে তদন্ত কমিটির মুখোমুখি হতেও প্রস্তুত আছেন বলে জানিয়েছেন মঞ্জুরুল।

ইউটিউব চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জাহানারা দাবি করেছেন, মঞ্জুরুল তাঁর কাছে নারী স্বাস্থ্য–সংক্রান্ত একান্ত ব্যক্তিগত তথ্য সম্পর্কে জানতে চাইতেন, যেটা সাধারণত দলের ফিজিওর জানার কথা। 

এ বিষয়ে মঞ্জুরুল বলছেন, ম্যানেজার হিসেবে দলের সঙ্গে থাকা ফিজিওর মাধ্যমেই এসব তথ্য তিনি পেতেন। তবে কখনো সরাসরি কোনো খেলোয়াড়কে এসব বিষয়ে নিজে জিজ্ঞেস করেননি।

এসব বিষয়ে কখনো জাহানারাকে জিজ্ঞেস করেছেন কি না জানতে চাইলে মঞ্জুরুল বলেন, ‘একদমই না। কোথায় বলেছি, কবে বলেছি? এটার প্রমাণটা কোথায়! অন্য সতীর্থদের সঙ্গে তো শেয়ার করবে (তেমন হলে)? তাঁরা বলুক!’

জাহানারা অভিযোগ করেছেন, মঞ্জুরুল ইসলাম প্রায়ই খেলোয়াড়দের উৎসাহ দেওয়ার নামে শারীরিকভাবে স্পর্শ করতেন, এমনকি আলিঙ্গন বা বুকে টেনে ধরতেন।

নারী ক্রিকেটারদের এভাবে মন্দ স্পর্শ করার অভিযোগটিও অস্বীকার করেছেন মঞ্জুরুল। এ বিষয়ে রাষ্ট্রীয় অথবা বিসিবির যেকোনো তদন্তের মুখোমুখি হতে তৈরি আছেন বলে জানিয়ে জাতীয় দলের সাবেক এই পেসার বলেন, ‘আমি যেকোনো সময় বাংলাদেশে এসে বসতে তৈরি আছি। যখন বলবে, তখনই আসব। আমাকে তদন্ত কমিটি যা বলবে, তা–ই করব।’

জাহানারা এখন অস্ট্রেলিয়ায় আছেন

সাক্ষাৎকারে জাহানারা দাবি করেছেন, ২০২২ সালে বিসিবিতে একটি চিঠি দিয়ে প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরীকে সবকিছু জানিয়েছেন। তবে মঞ্জুরুলের দাবি, তাঁকে বোর্ডের পক্ষ থেকে যৌন হয়রানি করার বিষয়ে কখনোই কিছু বলা হয়নি।

তাঁর বিরুদ্ধেই কেন অভিযোগ উঠল জানতে চাইলে মঞ্জুরুল বলেন, ‘এটা আমি জানি না। আমার মূল সমস্যা ছিল নিয়মশৃঙ্খলা আর আইনকানুন। এসব বিষয়ে আমি কঠোর ছিলাম। খাওয়ার ব্যাপারে কঠোর থাকতাম। বাইরের কিছু খেলে ওদেরই ক্ষতি। এটা যদি খারাপ কাজ হয়, এটার জন্য যদি শাস্তি হয়, আমার কোনো সমস্যা নেই।’