সাকিব আল হাসান ও শন উইলিয়ামস
সাকিব আল হাসান ও শন উইলিয়ামস

১৮ বছর ২৭৯ দিন—সাকিবকে টপকে টি–টোয়েন্টির দীর্ঘতম ক্যারিয়ার এখন উইলিয়ামসের

হারারেতে গতকাল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথমটিতে খেলেছে জিম্বাবুয়ে। এ ম্যাচ দিয়েই অবসর ভেঙে আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টিতে ফিরেছেন সাকিবের মতোই ৩৮ বছর বয়সী বাঁহাতি অলরাউন্ডার উইলিয়ামস।

২৮ নভেম্বর ২০০৬—এই দিনে একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টিতে যাত্রা শুরু হয়েছিল বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ের। সেদিন খুলনায় অনুষ্ঠিত ম্যাচটিতে যে মুখোমুখি হয়েছিল এই দুই দল। সাকিব আল হাসান ও শন উইলিয়ামসেরও দেশের জার্সিতে টি–টোয়েন্টি অভিষেক সেই ম্যাচ দিয়ে।

অভিষেকের ১৮ বছর ২৭৯ দিন পর সাকিব ও উইলিয়ামস আবারও একসঙ্গে আলোচনায়। সাকিবকে টপকে আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টিতে সবচেয়ে দীর্ঘ ক্যারিয়ারের মালিক যে এখন উইলিয়ামস!

২০০৬ সালের ২৮ নভেম্বর নিজেদের প্রথম টি–টোয়েন্টি খেলে বাংলাদেশ–জিম্বাবুয়ে। এ দিন সাকিব ও উইলিয়ামসেরও দেশের জার্সিতে টি–টোয়েন্টিতে অভিষেক হয়

হারারেতে গতকাল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথমটিতে খেলেছে জিম্বাবুয়ে। এ ম্যাচ দিয়েই অবসর ভেঙে আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টিতে ফিরেছেন সাকিবের মতোই ৩৮ বছর বয়সী বাঁহাতি অলরাউন্ডার উইলিয়ামস। এর মধ্য দিয়ে সাকিবকে ছাড়িয়ে গেছেন তিনি।

সাকিব বাংলাদেশের হয়ে শেষ টি–টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন সেন্ট ভিনসেন্টে, গত বছরের ২৪ জুন টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। অনেকের ধারণা ছিল, একসময়ের বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার হয়তো দেশের হয়ে টি–টোয়েন্টিতে খেলা চালিয়ে যাবেন।

কিন্তু গত বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর ভারতের বিপক্ষে কানপুর টেস্টে খেলতে নামার আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে সাকিব জানিয়ে দেন, এই সংস্করণে বাংলাদেশের হয়ে ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচটা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেই খেলে ফেলেছেন।

এই ঘোষণার পরও সাকিবের ১৭ বছর ২০৯ দিনের ক্যারিয়ারই ছিল আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টিতে দীর্ঘতম। কারণ, শন উইলিয়ামস গত বছরের ১২ মে মিরপুরে বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজের শেষ টি–টোয়েন্টি খেলার পর এই সংস্করণ থেকে অবসরের ঘোষণা দেন। তখন জিম্বাবুয়ের হয়ে উইলিয়ামসের টি–টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ব্যাপ্তি ছিল ১৭ বছর ১৬৪ দিন। কিন্তু অবসর ভেঙে ১ বছর ১১৫ দিন পর উইলিয়ামস আবার জিম্বাবুয়ের হয়ে খেলতে নামাতেই পেছনে পড়ে গেছেন সাকিব।

আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টিতে দীর্ঘতম ক্যারিয়ারের তালিকায় তিনে থাকা নামটাও একজন বাংলাদেশির—মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। বাংলাদেশের সাবেক এই অধিনায়কের ক্যারিয়ার ১৭ বছর ৪১ দিনের। মাহমুদউল্লাহও গত বছর ভারত সফরে টি–টোয়েন্টি সিরিজ খেলে এই সংস্করণকে বিদায় বলে দেন। শীর্ষ পাঁচের শেষ দুজন কেনিয়ার অধিনায়ক রাকেপ প্যাটেল (১৬ বছর ৩৫৭ দিন) ও স্কটল্যান্ডের অধিনায়ক রিচি বেরিংটন (১৬ বছর ৩৪৩ দিন)।

মজার ব্যাপার হলো, উইলিয়ামসের পাশাপাশি তাঁর সতীর্থ ব্রেন্ডন টেলরেরও সাকিবকে টপকে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আইসিসির দেওয়া সাড়ে তিন বছরের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে অবসর ভেঙে ফেরা টেলর কাল চোটের কারণে খেলতে পারেননি। ৩৯ বছর বয়সী এই উইকেটকিপার–ব্যাটসম্যানেরও আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টিতে অভিষেক হয়েছিল খুলনায় বাংলাদেশ–জিম্বাবুয়ের সেই ম্যাচ দিয়ে।

ব্রেন্ডন টেলরের আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টি ক্যারিয়ারও দীর্ঘতম হয়ে যেতে পারে

তবে আগামী শনিবার শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচে খেলতে পারলে উইলিয়ামসের সঙ্গে টেলরের ১৮ বছর ২৮২ দিন ব্যাপ্তির ক্যারিয়ারই হবে আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টিতে দীর্ঘতম।

একটা জায়গায় টেলরই অবশ্য সবার ওপরে। বর্তমানে খেলছেন বা এখনো অবসরের ঘোষণা দেননি—এমন খেলোয়াড়দের মধ্যে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সবচেয়ে লম্বা ক্যারিয়ার টেলরের (২১ বছর ১৩৩ দিন)।

বর্তমান টেস্ট ক্রিকেটারদের মধ্যেও টেলরের ক্যারিয়ার দীর্ঘতম (২১ বছর ৯৫ দিন)। গত ৭ আগস্ট নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বুলাওয়ে টেস্টে খেলতে নেমে তিনি বাংলাদেশের মুশফিকুর রহিমকে টপকে যান। মুশফিকের টেস্ট ক্যারিয়ারের ব্যাপ্তি ২০ বছর ৩৩ দিন।

উইলফ্রেড রোডসের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার ৩০ বছর ৩১৫ দিনের

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দীর্ঘতম ক্যারিয়ারের মালিক উইলফ্রেড রোডস (৩০ বছর ৩১৫ দিন)। তবে ইংল্যান্ডের প্রয়াত এই ক্রিকেটারের ক্যারিয়ার এতটা দীর্ঘ হয়েছিল প্রথম বিশ্বযুদ্ধের কারণে।