
মাঠের বাইরে কথার লড়াই চলে। থাকে নানা ঘটনাপ্রবাহও। অথচ মাঠে তেমন কোনো লড়াই-ই হয় না। ভারত–পাকিস্তান ম্যাচ মানে এখন গল্পটা এমনই। এবারের এশিয়া কাপে দুই দলের মুখোমুখি হওয়াই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল গত মে মাসে দুই দেশের মধ্যে রাজনৈতিক উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ায়।
গত রোববার গ্রুপ পর্বের ম্যাচটা শেষ হতেই শুরু হয় নতুন বিতর্ক। ম্যাচের পর পাকিস্তানের ক্রিকেটারদের সঙ্গে হাত মেলাননি ভারতের ক্রিকেটাররা। ভারতের অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব তখন জানান, সিদ্ধান্তটা তাঁরা নিয়েছেন সরকার ও বোর্ডের সঙ্গে আলোচনা করে। এই ঘটনার জের ধরে ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফটকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি করে পাকিস্তান—তিনি ক্ষমা চাওয়ার পর সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে এক ঘণ্টা পর ম্যাচ খেলতে নামে সালমান আগার দল।
এসবই মাঠের বাইরের ঘটনা। এসবের ভিড়ে মাঠের খেলায় মনোযোগ ধরে রাখাটা নিশ্চয়ই কঠিন হয় ক্রিকেটারদের জন্যও? দুবাইয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ সামনে রেখে শুক্রবার রাতে সংবাদ সম্মেলনে ভারতের অধিনায়ক সূর্যকুমারকে করা হয়েছিল প্রশ্নটি। উত্তরে সহজ এক মন্ত্রের কথা বলেছেন সূর্য, ‘রুমের দরজা বন্ধ করে দাও, মুঠোফোন বন্ধ রাখো আর ঘুমাও (হাসি)।’
কিন্তু কাজটা যে কঠিন সেটাও বলেছেন সূর্য, ‘এটা বলা সহজ। কিন্তু কখনো কখনো করা কঠিন। কারণ, আপনি বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করেন, রাতে খেতে যান, আশপাশে অনেক মানুষের সঙ্গেও দেখা হয়। তবে বিষয়টি আপনার ওপর, আপনি কী শুনে বা মাথায় রেখে অনুশীলন বা ম্যাচে যেতে চান।’
এ নিয়ে সতীর্থদের একটা বার্তাও দিয়ে রেখেছেন বলে জানিয়েছেন সূর্য, ‘আমি ছেলেদের পরিষ্কার বলে দিয়েছি—যদি তোমরা এই টুর্নামেন্টে এবং আগামীতেও ভালো করতে চাও, তাহলে আমাদের বাইরের অনেক কিছু থেকেই দূরে থাকতে হবে। আমি বলছি না সব বন্ধ করে দিতে হবে—কিছু জিনিস নেওয়া যায় যেটা ভালো। কেউ একটা ভালো পরামর্শও দিতে পারে, যেটা ম্যাচে ও মাঠে সাহায্য করতে পারে।’
ক্রিকেটে ভারত–পাকিস্তান লড়াই এখন অনেকটাই পানসে। গ্রুপ পর্বের ম্যাচে ভারত ৭ উইকেটে জয় পায় পাকিস্তানের বিপক্ষে। দুই দলের মধ্যে হওয়া শেষ পাঁচটি ম্যাচও জিতেছে ভারত। অথচ একসময় ভারত–পাকিস্তান মুখোমুখি হওয়া মানে মাঠেও থাকত তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঝাঁঝ।
এখন কি আর পাকিস্তানকে হারিয়ে এই শতকের শুরুর দিকের মতো আনন্দটা আর আছে? উত্তরে শুরুতে একটু মজাই করেছেন ভারতের অধিনায়ক সূর্য, ‘ওই সময় তো আমি খেলিনি, তাই বলতে পারব না।’
সূর্য এরপর সিরিয়াস উত্তরও দিলেন, ‘দ্বৈরথের কথা বললে, জানি না কিসের কথা বলছেন আপনারা। আমার কেবল মাঠে যাওয়ার পর মনে হয় স্টেডিয়াম ভরা আছে। যখন তা দেখি, তখন সবাইকে বলি চলো ভাই, বিনোদনের সময় চলে এসেছে, এতগুলো মানুষ এসেছে, সবাইকে বিনোদন দিতে হবে। চলো ভালো ব্র্যান্ডের ক্রিকেট খেলি। আমরা এত কিছু আসলে ভাবি না। তিন ম্যাচ খেলেছি কেবল, তিন ম্যাচই জেতায় একই রকম মজা পেয়েছি।’