সঞ্জয় মাঞ্জরেকার যথার্থই বলেছেন। ওল্ড ট্রাফোর্ড টেস্টের পর ভারতের সাবেক ক্রিকেটার ও ক্রিকেট বিশ্লেষক মাঞ্জরেকার বলেছিলেন, ভারত রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলিকে মিস করেছে, কিন্তু তাদের রানকে নয়। এবারের ‘অ্যান্ডারসন-টেন্ডুলকার ট্রফি’তে শেষবারের মতো কাল ভারত ব্যাটিং করার পর খোদ রোহিত-কোহলি–ভক্তও এ কথা স্বীকার করতে বাধ্য হবেন। পরিসংখ্যানও কিন্তু এমনটাই বলছে।
অ্যান্ডারসন-টেন্ডুলকার ট্রফির ৫ টেস্ট মিলিয়ে ভারত ১০ ইনিংসে করেছে মোট ৩৮০৯ রান, যা একটি টেস্ট সিরিজে কোনো দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এক সিরিজে সবচেয়ে বেশি রানের রেকর্ডটা অস্ট্রেলিয়ার।
১৯৮৯ সালের অ্যাশেজে অ্যালান বোর্ডারের দল করেছিল ৩৮৭৭ রান। তবে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সেই সিরিজটি ছিল ৬ টেস্টের। অর্থাৎ চলমান সিরিজে আর একটি ম্যাচ খেলার সুযোগ পেলে অস্ট্রেলিয়ার রেকর্ড ভেঙে দিতে পারত ভারত। বছরের মাঝামাঝিতে অবসর নেওয়া রোহিত ও কোহলিকে ভারত যে একদমই মিস করছে না, তা বুঝতে আর কী লাগে?
রোহিত থাকলে তিনি খেলতেন ওপেনিংয়ে। সে ক্ষেত্রে লোকেশ রাহুলকে খেলতে হতো মিডল অর্ডারে। অথচ ওপেনিংয়ে সুযোগ পেয়ে কী দারুণ ব্যাটিংই না করেছেন রাহুল!
৫ ম্যাচে করেছেন ৫৩২ রান, সেঞ্চুরি দুটি, ফিফটি দুটি। ইংল্যান্ডের মাটিতে খেলা ১৪ ইনিংসে রোহিতের সেঞ্চুরিই ছিল একটি। পুরো ২০২৪ সালে ২৬ ইনিংসেই রোহিতের রান মোটে ৬১৯, গড় ছিল ২৫–এর নিচে।
কোহলি থাকলে ব্যাটিং করতেন গিলের জায়গায়, ৪ নম্বরে। কোহলি নিজেও সেরা ছন্দে ছিলেন না। ২০২৪ সালে ১৯ ইনিংসে রান করেছেন ৪১৭। তাঁর গড়টাও ২৫–এর কম, ২৪.৫২। চলতি বছর রোহিত টেস্ট খেলেছেন একটি, রান করেছেন ২৩।
অথচ ৪ নম্বর জায়গা পেয়ে রেকর্ড আর কীর্তির এক সিরিজ কেটেছে গিলের। গিলের ৭৫৪ রান কোনো সফরকারী অধিনায়কের টেস্ট সিরিজে সর্বাধিক রানের রেকর্ড। প্রথম অধিনায়ক হিসেবে এক সিরিজে চারটি সেঞ্চুরিও করেছেন গিল। অধিনায়ক হিসেবে এক সিরিজে এর চেয়ে বেশি রান আছে শুধু ডন ব্র্যাডম্যানের, ৮১০।
রোহিত-কোহলির অবর্তমানে যেন সবাই নিজের দায়িত্ব বুঝে নিয়েছেন। রবীন্দ্র জাদেজাও করেছেন ৫১৬ রান, যা টেস্ট ক্রিকেটে নম্বর ৬ বা তার নিচে ব্যাট করতে নেমে কোনো ব্যাটসম্যানের পঞ্চম সর্বোচ্চ। এটি একই সঙ্গে ভারতের জন্যও নম্বর ৬ বা তার নিচে ব্যাট করতে নেমে কোনো ব্যাটসম্যানের সর্বোচ্চ রান। সবমিলিয়ে দল হিসেবেও যথেষ্ট ধারাবাহিক ছিল ভারত। এই সিরিজে আটবার ইনিংসে ৩৫০–এর বেশি রান করেছে ভারত, যা সর্বোচ্চ।