
আজ রাজধানীর একটি হোটেলে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় এমনটাই বলেছেন এবারের বয়সভিত্তিক সাফের সেরা খেলোয়াড় মোসাম্মৎ সাগরিকা।
ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল রাঙ্গাটুঙ্গী গ্রামের মেয়ে মোসাম্মৎ সাগরিকা। তাঁর বাবা লিটন আলী থাকেন গ্রামেই।
সদ্য শেষ হওয়া সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে মেয়ের খেলা দেখতে ঢাকায় আসতে চেয়েছিলেন লিটন আলী। কিন্তু ঢাকায় থাকার জায়গা না থাকায় আর আসা হয়নি। আজ রাজধানীর একটি হোটেলে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় এমনটাই বলেছেন এবারের বয়সভিত্তিক সাফের এই সেরা খেলোয়াড়।
মেয়ে ফুটবল খেলুক—কখনোই চাইতেন না লিটন আলী। কিন্তু ফুটবলের প্রতি সাগরিকার ভালো লাগার কাছেই শেষ পর্যন্ত হার মানেন তাঁর বাবা। রাঙ্গাটুঙ্গীর সাগরিকা এখন দেশের অন্যতম সেরা ফরোয়ার্ড।
শুধু দেশ কেন, সোমবার নেপালকে হারিয়ে সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপ জেতার পর নেপালের সহকারী কোচ কিরণ কাড়কি সাগরিকাকে দক্ষিণ এশিয়ার সেরা ফরোয়ার্ড বলেছেন। তাঁর স্বপ্ন এখন অনেক বড়।
কিন্তু সংবাদ সম্মেলনে বাবার প্রসঙ্গ আসতেই সাগরিকা বললেন, ‘আমার বাবা আসতে চেয়েছিল খেলা দেখতে। কিন্তু ঢাকায় কোনো থাকার জায়গা নেই, তাই বাবা আসতে পারেনি। তিনটা ম্যাচ খেলতে পারিনি, তারপরও সেরা খেলোয়াড় হতে পেরেছি, তাতেই বাবা অনেক খুশি।’
সাফ জেতার পর এবার এএফসি অনূর্ধ্ব-২০ নারী এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে ভালো করতে চায় মেয়েরা। ২ আগস্ট শুরু হবে সেই বাছাই। ‘এইচ’ গ্রুপে থাকা বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ ৬ আগস্ট লাওসের সঙ্গে। বাকি দুই প্রতিপক্ষ দক্ষিণ কোরিয়া ও পূর্ব তিমুর।
আট গ্রুপে থাকা ৩৩ দলের মধ্যে সেরা ৮ দল সরাসরি যাবে ২০২৬ সালে থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠেয় এশিয়ান কাপে। ভালো পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপে দ্বিতীয় হতে পারলেও মিলবে আরেকটি সুযোগ। দ্বিতীয় হওয়াদের মধ্যে সেরা তিন দল পাবে এশিয়ান কাপে খেলার টিকিট।
এই সুযোগ কাজে লাগাতে চান সাগরিকা, ‘আমরা এএফসির জন্য অনেকটাই প্রস্তুত আছি। সামনে যে কদিন সময় পাব, নিজেদের আরও ভালো করে তৈরি করব। সেখানে আরও ভালো পারফর্ম করতে হবে। যেহেতু তাদের সম্পর্কে জানা নেই, কোচ যেভাবে নির্দেশনা দেবেন, সেভাবে খেলার চেষ্টা করব।’
সাগরিকা এক নন, সদ্য শেষ হওয়া সাফে আলো ছড়ানো নবীরণ খাতুন ও শান্তি মার্ডিরও চোখ এশিয়ান বাছাইয়ে। যদিও বাছাইয়ে বাংলাদেশের অতীত রেকর্ড মোটেও সুখকর নয়। এশিয়ান কাপে জায়গা পাওয়া দূরের কথা, এখন পর্যন্ত বাছাইয়ে ১২ ম্যাচে দুটি জয় পেয়েছে বাংলাদেশ।
তবে নবীরণ চান অতীতকে ছাড়িয়ে যেতে, ‘আমি সিনিয়র টিমে খেলেছি, মিয়ানমারে বড়রা যেভাবে খেলে এশিয়ান কাপে জায়গা করে নিয়েছে, আমরাও চাই তাদের মতো এশিয়ান কাপে জায়গা করে নিতে।’
এবারের সাফে ২ গোল করা ফরোয়ার্ড পূজা দাসও বললেন জয়ের ধারাবাহিকতা ধরে রাখার কথা, ‘চেষ্টা করব প্রতিটা ম্যাচে সেরাটা দেওয়ার। আসলে প্রতিটি ম্যাচই আলাদা একটা চ্যালেঞ্জ। আমরা চাইব ম্যাচ বাই ম্যাচ এগোতে।’
আর ক্যারিয়ারে প্রথমবার হ্যাটট্রিক করা শান্তি মার্ডিও দারুণ কিছুর আশায়, ‘এই টুর্নামেন্ট থেকে আমি অনেক কিছু শিখেছি। জীবনে প্রথমবার হ্যাটট্রিক করেছি, ভালো লাগছে। চেষ্টা করব ঋতুপর্ণা আপুর থেকে শিখতে। তাঁর মতো ভালো খেলতে।’