ইন্টার মায়ামি ফরোয়ার্ড লিওনেল মেসি
ইন্টার মায়ামি ফরোয়ার্ড লিওনেল মেসি

মেসি এখন পর্যন্ত জিততে পারেননি কোন কোন শিরোপা

লিওনেল মেসির ক্যারিয়ারে ট্রফির অভাব নেই। ক্লাব ও জাতীয় দল মিলিয়ে জিতেছেন ৪৬টি ট্রফি। ফুটবল ইতিহাসে তাঁর চেয়ে বেশি ট্রফি আর কেউ জিততে পারেননি। কিন্তু যদি প্রশ্ন ওঠে, এমন কোনো ট্রফি কি আছে—যে টুর্নামেন্টে অংশ নিয়ে মেসি ট্রফিটি জিততে পারেননি?

প্রশ্নটি উঠছে ইন্টার মায়ামি গতকাল মেজর লিগ সকারে (এমএলএস) প্লে অফে ইস্টার্ন কনফারেন্স ফাইনাল জয়ের পর। নিউইয়র্ক সিটি এফসিকে ৫–১ গোলে হারিয়ে এমএলএস কাপের ফাইনাল নিশ্চিত করে মেসির দল মায়ামি। ওয়েস্টার্ন কনফারেন্সের ফাইনাল জিতে অন্য দিক থেকে এমএলএস কাপের ফাইনালে উঠেছে ভ্যাঙ্কুভার হোয়াইটক্যাপস। বাংলাদেশ সময় ৭ ডিসেম্বর এমএলএস কাপের ফাইনাল মায়ামি জিততে পারলে প্রথমবারের মতো লিগ জয়ও নিশ্চিত হবে তাদের। এমএলএসের নিয়ম অনুযায়ী, এমএলএস কাপজয়ীরাই লিগ চ্যাম্পিয়ন।

মায়ামির হয়ে লিগ জয়ের সুযোগ মেসির সামনে

পিএসজি থেকে ২০২৩ সালে মেসিকে যুক্তরাষ্ট্র উড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার এটাই মূল কারণ ছিল মায়ামির। মেসিকে দিয়ে লিগ জিতে ফুটবলের বাজারে নিজেদের অবস্থানটা সুসংহত করতে চায় তারা। আর মেসির প্রাপ্তি অন্য জায়গায়। এর আগে দুটি দেশের ঘরোয়া ফুটবলে কাটানো ক্যারিয়ারে দুটি জায়গাতেই লিগ জিতেছেন। এখন যুক্তরাষ্ট্রেও লিগ জয়ের সুযোগ মেসির সামনে। স্বাভাবিক কারণেই তাই প্রশ্নটি ওঠেই, ৩৮ বছর বয়সে পা রাখা মেসির ক্যারিয়ারে কোনো অপ্রাপ্তি কি আছে?

এমএলএস কাপের কথা বলতে পারেন। মেসি মায়ামির হয়ে সাপোটার্স শিল্ড ও লিগস কাপের মতো ছোট ট্রফি জিতলেও বড় এই শিরোপাটি মেসি এখনো জিততে পারেননি। কিন্তু এটাও সত্য—মেসি তো সেই সুযোগই এর আগে পাননি। কারণ, মায়ামি এই প্রথমবারের মতো উঠেছে এমএলএস কাপের ফাইনালে। তাই ট্রফি জয় বিচারে মেসির ক্যারিয়ারে কোনো অপূর্ণতা আছে কি না, সেটা খতিয়ে দেখার শুধু একটাই পথ: মেসি যেসব মোটামুটি বড় মাপের টুর্নামেন্টে অংশ নিয়েও শিরোপা জিততে পারেননি, সেটা খুঁজে বের করা।

পিএসজির হয়ে ফ্রেঞ্চ কাপ জিততে পারেননি মেসি

বার্সেলোনার মূল দলে ১৭ বছর খেলেছেন মেসি। শিরোপা জিতেছেন ৩৪টি। বার্সার হয়ে অংশ নেওয়া সব টুর্নামেন্টেই শিরোপা জিতেছেন মেসি। লিগ জিতেছেন ১০ বার, চ্যাম্পিয়নস লিগ ৪ বার, ৭ বার স্প্যানিশ সুপার কাপ ও ৭ বার কোপা দেল রে জিতেছেন, ৩ বার করে জিতেছেন ক্লাব বিশ্বকাপ ও ইউরোপিয়ান সুপার কাপ।

বার্সা ছেড়ে ২০২১ সালে পিএসজিতে যোগ দেন মেসি। সেখানে লিগ জিতেছেন দুবার। চ্যাম্পিয়নস লিগ প্যারিসের ক্লাবটির হয়ে জিততে না পারলেও বার্সার হয়ে যেহেতু ট্রফিটি জিতেছেন, তাই জিততে না পারার বিবেচনায় এটা বাদ পড়ে। মেসি দুবার ফ্রেঞ্চ সুপার কাপও জিতেছেন পিএসজির হয়ে। জিততে পারেননি শুধু ফ্রান্সের বার্ষিক কাপ প্রতিযোগিতা ফ্রেঞ্চ কাপ। ২০২১–২২ এবং ২০২২–২৩ মৌসুমে ফ্রেঞ্চ কাপে দুটি ম্যাচ খেলে পিএসজিকে শিরোপা জেতাতে পারেননি মেসি।

২০২১–২২ মৌসুমে ফ্রেঞ্চ কাপের শেষ ষোলোয় নিসের কাছে টাইব্রেকারে ৬–৫ গোলে হেরে বিদায় নেয় পিএসজি। নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময়ে ম্যাচটি ১–১ গোলে অমীমাংসিত ছিল। মেসি এই ম্যাচে পুরো সময় মাঠে ছিলেন। ২০২২–২৩ মৌসুমে ফ্রেঞ্চ কাপে একই মঞ্চে (শেষ ষোলো) মার্শেইয়ের কাছে ২–১ গোলে হেরে বিদায় নেয় পিএসজি। মেসি এই ম্যাচেও পুরো সময় মাঠে ছিলেন।

আর্জেন্টিনার হয়ে যা যা জেতা সম্ভব—সবই জিতেছেন মেসি

মেসির আর্জেন্টিনা ক্যারিয়ারে কোনো অপ্রাপ্তি নেই। একসময় বিশ্বকাপ জিততে না পারার অপ্রাপ্তি ছিল। ২০২২ কাতার বিশ্বকাপেই তা ঘুচেছে। কোপা আমেরিকা জিতেছেন একাধিকবার। জাতীয় দলে দক্ষিণ আমেরিকার দেশটির হয়ে এ দুটোই মূলত বড় শিরোপা। এর বাইরে ২০২২ সালে ইতালিকে হারিয়ে জিতেছেন ‘ফিনালিসিমা’, আর্জেন্টিনা অনূর্ধ্ব–২৩ দলের হয়ে জিতেছেন অলিম্পিকে সোনা এবং অনূর্ধ্ব–২০ দলের হয়ে বিশ্বকাপ।