রিয়াল মাদ্রিদ বনাম ম্যানচেস্টার সিটি—চ্যাম্পিয়নস লিগে এ ম্যাচ যেন একটা বার্ষিক উৎসবের মতোই হয়ে গেছে। প্রতি মৌসুমে দুই দলের দেখা হবেই।
সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে আজ আবার মুখোমুখি হচ্ছে ইউরোপের এই দুই পরাশক্তি। এটা তাদের ১৫তম লড়াই। ২০১২-১৩ মৌসুমে দুই দলের প্রথম সাক্ষাতের পর থেকে চ্যাম্পিয়নস লিগে আর কোনো দল এত বেশিবার মুখোমুখি হয়নি।
তবে এবারের লড়াইটা নানা কারণেই একটু অন্য রকম। এই প্রথম মুখোমুখি হচ্ছেন ম্যানচেস্টার সিটির কোচ পেপ গার্দিওলা ও রিয়াল মাদ্রিদের কোচ জাবি আলোনসো। একসময় বায়ার্ন মিউনিখে যার অধীন খেলেছেন, সেই কোচকে এবার ডাগআউটে প্রতিপক্ষ হিসেবে পাওয়া নিশ্চয়ই আলোনসোর জন্য বিশেষ কিছু।
বার্নাব্যুর আজকের ম্যাচ অবশ্য শুধু এ কারণেই বিশেষ নয়। এটা যে কিলিয়ান এমবাপ্পে ও আর্লিং হলান্ডেরও লড়াই! এ সময়ে বিশ্বের সেরা দুই ফরোয়ার্ড। ২০১৯ সালে হলান্ডের চ্যাম্পিয়নস লিগে অভিষেকের পর এই টুর্নামেন্টে এ নিয়ে তৃতীয়বার মুখোমুখি হচ্ছেন তাঁরা। এটাই যে শেষ দেখা নয়, তা–ও নিশ্চিত।
আগামী ২৬ জুন যুক্তরাষ্ট্রের ফক্সবরোতে বিশ্বকাপের ম্যাচে মুখোমুখি হবে ফ্রান্স-নরওয়ে। তার মানে তখন আরও একবার দেখা যাবে এমবাপ্পে-হলান্ড লড়াই। বিশ্বকাপের ড্রয়ের পর থেকেই এ নিয়ে চলছে তুমুল আলোচনা। অনেকের চোখে গ্রুপ পর্বের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ম্যাচও হতে যাচ্ছে সেটাই। কেমন হতে পারে সেই লড়াই, তার একটা মহড়া অন্তত হয়ে যাবে আজ বার্নাব্যুতে।
এমবাপ্পে-হলান্ডের প্রথম লড়াইটি হয়েছিল ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে, চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ ষোলোতে। সদ্য বরুসিয়া ডর্টমুন্ডে যোগ দেওয়া হলান্ড প্রথম লেগে পিএসজির বিপক্ষে জোড়া গোল করে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন। নজর কেড়েছিলেন গোলের পর পা ক্রস করে ধ্যানে বসার মতো ভঙ্গি করে, যেটা এখন বিখ্যাত ‘জেন’ উদ্যাপন হিসেবে। সেই ম্যাচে এমবাপ্পের পিএসজিকে ২-১ গোলে হারিয়েছিল হলান্ডের ডর্টমুন্ড।
গত মৌসুমেও হলান্ড-এমবাপ্পের দেখা হয়েছিল ফেব্রুয়ারিতে। নকআউট প্লে-অফে দুই লেগ মিলিয়ে এমবাপ্পে করেছিলেন ৪ গোল, দ্বিতীয় লেগে হ্যাটট্রিকসহ। প্রথম লেগে হলান্ড ২ গোল করলেও সিটি হেরেছিল দুই লেগেই।
গত মাসে অলিম্পিয়াকোসের বিপক্ষে ৪ গোলের পর এবারের চ্যাম্পিয়নস লিগে এমবাপ্পেই এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ গোলদাতা। ৫ ম্যাচে ৯ গোল তাঁর। হলান্ড এখন পর্যন্ত চ্যাম্পিয়নস লিগে করেছেন ৫ ম্যাচে ৫ গোল। সিটি হয়ে এই মৌসুমে সব মিলিয়ে তাঁর গোল ২০টি। ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগের খেলোয়াড়দের মধ্যে এই মৌসুমে তাঁর চেয়ে বেশি গোল শুধু এমবাপ্পে (২৫) ও হ্যারি কেইনের (২৮)।
আজ হলান্ডের সামনে সুযোগ এমবাপ্পের আরেকটু কাছে চলে আসার, ওদিকে এমবাপ্পের সুযোগ থাকবে হলান্ডকে পেছনে রেখে আরও এগিয়ে যাওয়ার।
শেষ হাসিটা কে হাসেন, এখন সেটাই দেখার অপেক্ষা।