চ্যাম্পিয়নস লিগে এ যেন অবিশ্বাস্য এক রাত। ৪৩টি গোল, ৫টি লাল কার্ড এবং ৬ পেনাল্টি (যার মধ্যে ৫টি গোল হয়েছে) মিলিয়ে এমন রাত খুব কমই আসে। ফুটবলপ্রেমীরা সারা বছর এমন কিছুর অপেক্ষাতেই থাকেন।
মঙ্গলবার রাতে সবচেয়ে বেশি গোল পিএসজি–লেভারকুসেনের ম্যাচে। ৯ গোলের এই ম্যাচে পিএসজি জিতেছে ৭–২ গোলে। দুই দলই একটি করে লাল কার্ড দেখেছে, আর লেভারকুসেনের আলেহান্দ্রো গ্রিমালদো পেনাল্টি থেকে গোল মিস করেন। নেদারল্যান্ডসের পিএসভি আইন্দহফেন শুরুতে পিছিয়ে গিয়েও দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে ইতালির চ্যাম্পিয়ন নাপোলিকে ৬–২ গোলে হারিয়েছে।
আর্সেনাল, নিউক্যাসল ও ম্যানচেস্টার সিটিও পেয়েছে দাপুটে জয়। সিটির তারকা ফরোয়ার্ড আর্লিং হলান্ড টানা ১২তম ম্যাচে গোল করে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর রেকর্ড ছুঁয়েছেন। এই রাতে গোলবন্যার শুরুটা করেছিল বার্সেলোনা। অলিম্পিয়াকোসকে ৬–১ গোলে উড়িয়ে দেয় কাতালান ক্লাবটি।
এই রাতে লাল কার্ড দেখেছেন অলিম্পিয়াকোসের সান্তিয়াগো হেজে, লেভারকুসেনের রবার্ট আনড্র্রিক, পিএসজির ইলিয়া জাবারনি, নাপোলির লরেৎসো লুক্কা এবং পাফোসের জোয়াও কোরেইয়া। গোল আর নাটকীয়তায় ভরপুর এই রাতটিকে পরিসংখ্যানের আলোকে বিশ্লেষণ করা যাক।
চ্যাম্পিয়নস লিগে এর আগে মাত্র দুবার এক রাতে এত বেশি গোলের দেখা মিলেছিল। গত মৌসুমে লিগ পর্বের শেষ রাউন্ডে রেকর্ড ৬৪টি গোল হয়েছিল। তবে সেদিন একসঙ্গে ১৮টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়, ফলে গড়ে প্রতি ম্যাচে গোলের হার ছিল তুলনামূলক কম (৩.৫৫)। এরপর দ্বিতীয় স্থানে আছে ১৯৯৭ সালের ১ অক্টোবরের রাতটি। সেদিন ১২টি ম্যাচে ৩.৬৬ গড়ে মোট ৪৪ গোল হয়েছিল।
আর গতকাল রাতে ৯ ম্যাচে গোলসংখ্যা ৪৩টি। গড়ে প্রতি ম্যাচে গোলের হার ছিল ৪.৭৮। অর্থাৎ মোট গোলে তিন নম্বরে থাকলেও ম্যাচপ্রতি গোল হিসাব করলে গতকাল রাতটি থাকবে দুই নম্বরে। এর চেয়ে ভালো গোলের গড় হয়েছিল মাত্র একবার। ১১ বছর আগে, ২০১৪ সালের ২১ অক্টোবর। সেদিন ৮টি ম্যাচে হয়েছিল ৪০টি গোল, অর্থাৎ প্রতি ম্যাচে গড়ে ৫টি করে।
মঙ্গলবারের ম্যাচগুলোতে সবচেয়ে বেশি গোল করেছে ইংলিশ ক্লাবগুলো—সম্মিলিতভাবে মোট ৯ গোল করেছে। এর পরেই আছে ফ্রান্স, যেখানে এককভাবে শুধু পিএসজিই করেছে ৭ গোল। মাত্র চারটি দল গোলশূন্য ছিল বেলজিয়ামের ইউনিয়ন সাঁ-জিলোয়াঁ, পর্তুগালের বেনফিকা, কাজাখস্তানের কাইরাত এবং সাইপ্রাসের পাফোস।
দেশ হিসেবে ইংল্যান্ডের ক্লাবগুলো ওপরে থাকলেও খেলোয়াড়দের হিসেবে ইংলিশদের অবস্থান দুইয়ে। ইংল্যান্ডের খেলোয়াড়েরা সব মিলিয়ে গোল করেছেন পাঁচটি। বার্সেলোনার মার্কাস রাশফোর্ড ও নিউক্যাসলের হার্ভি বার্নস দু’জনই করেন জোড়া গোল এবং একটি গোল করেছেন দলটির অ্যান্থনি গর্ডন। এই তালিকায় ইংল্যান্ডের ওপরে আছে স্পেন। স্প্যানিশ ফুটবলাররা সব মিলিয়ে করেছে ছয় গোল। এর অর্ধেকই করেছেন বার্সেলোনার হয়ে হ্যাটট্রিক করা ফারমিন লোপেজ।