বর্ষসেরা নারী ক্রীড়াবিদের পুরস্কারবিজয়ী তহুরা খাতুন
বর্ষসেরা নারী ক্রীড়াবিদের পুরস্কারবিজয়ী তহুরা খাতুন

বর্ষসেরা নারী ক্রীড়াবিদ

পুরস্কার হাতে স্মৃতিকাতর তহুরা

২০১৮ সালটা তহুরার জন্য খুবই স্মরণীয়। সেবারই প্রথম জাতীয় নারী ফুটবল দলের জার্সি গায়ে জড়িয়েছিলেন এই ফরোয়ার্ড। ঠিক সেই বছর সিটি গ্রুপ–প্রথম আলো বর্ষসেরা নারী ক্রীড়াবিদও হয়েছিলেন তহুরা।

শনিবার আরও একবার একই মঞ্চে দাঁড়িয়ে নিয়েছেন নিজের দ্বিতীয় বর্ষসেরা নারী ক্রীড়াবিদের পুরস্কার। গতকাল ২০২৪ সালের জন্যও দ্বিতীয়বারের মতো সেই পুরস্কার নিতে এসে খানিকটা স্মৃতিকাতরই হয়ে পড়লেন তিনি।

২০১৮ সালে যখন প্রথমবার বর্ষসেরা নারী ক্রীড়াবিদ হয়েছিলেন, তখন টুর্নামেন্টে থাকার কারণে নিজে পুরস্কার নিতে আসতে পারেননি তহুরা। তহুরার হয়ে পুরস্কার নিয়েছিলেন তাঁর বাবা। কাল পুরস্কার হাতে সে দিনের স্মৃতিতে ফিরে গেলেন, বললেন এবারের রোমাঞ্চের কথাও, ‘২০১৮ সালে যখন এই পুরস্কার পাই, তখন এত বেশি বুঝতাম না পুরস্কারটা কী! তখন টুর্নামেন্ট থাকায় আসতে পারিনি। আমার বাবা এসেছিলেন, নিজে না আসতে পারায় মন খারাপ হয়েছিল। এবার আবার পুরস্কার পেলাম। প্রথম আলোকে ধন্যবাদ। এই আয়োজনের সঙ্গে যাঁরা সম্পৃক্ত তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা।’

বর্ষসেরা নারী ক্রীড়াবিদ হয়েছেন তহুরা খাতুনের হাতে পুরস্কার তুলে দেন মোল্লা সাবিরা

২০১৮ থেকে ২০২৫; সাত বছরের ক্যারিয়ারে তহুরাও এগিয়েছেন অনেকটা। গত মাসে মিয়ানমারে এশিয়ান বাছাইয়ে বল পায়ে দ্যুতি ছড়ান। তার আগে গত বছরটা ছিল দারুণ ঝলমলে। সাফ উইমেন্স চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশ পায় তাদের দ্বিতীয় শিরোপা। আর সেই টুর্নামেন্টে দেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৫ গোল করেন তহুরা। যার মধ্যে ছিল গ্রুপ পর্বে ভারতের বিপক্ষে জোড়া গোল এবং সেমিফাইনালে ভুটানের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক।

ময়মনসিংহের মেয়ে তহুরা। বয়সভিত্তিক দলে আলো ছড়িয়ে জাতীয় দলে আসা এই তারকার পছন্দ লিওনেল মেসিকে। যদিও সতীর্থরা তাঁকে মেসি বলে ডাকলে শুরুর দিকে তহুরার ভালো লাগত না। পরে যখন জানলেন মেসি বিশ্বমানের ফুটবলার, তখন ভালো লাগা শুরু হয়।

এখনো মেসিই তহুরার পছন্দের ফুটবলার। সেরা নারী ক্রীড়াবিদের পুরস্কার হাতে সেই কথাই বললেন তহুরা, ‘যখন আমি ছোট ছিলাম, তখন আমাকে টিমমেটরা মেসি বলে ডাকত। শুরুর দিকে একটু রাগ লাগত। কিন্তু যখন জানলাম মেসি অনেক ভালো খেলোয়াড়, বিশ্বমানের ফুটবলার। তখন মেসি ডাক শুনতে ভালো লাগে।’

বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দলের আপাতত কোনো খেলা নেই। তহুরা বর্তমানে ভুটানের ক্লাব রয়্যাল থিম্পু কলেজ এফসির হয়ে খেলছেন। সেখান থেকে পুরস্কার নিতে ঢাকায় এসে একটু আক্ষেপ করলেন দেশের লিগ নিয়েও, ‘অনেকে বলেন, আমরা ভুটানে কেন লিগ খেলতে যাই। আমাদের দেশে অনেক বড় বড় ক্লাব আছে, তারা তো এগিয়ে আসে না। আমরা কী করব…তাই ওখানে গিয়ে খেলি। যে ক্লাবগুলো আছে সেগুলোকে তো টেনেও আনা যায় না। তখন আমাদেরও ভুটানে না গিয়ে কিছু করার থাকে না।’