
কেউ ব্রাজিল, কেউ ফ্রান্স, কেউ আবার এসেছেন ক্যামেরুন থেকে। এভাবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ১৩ জন ফুটবলার হংকং জাতীয় দলের হয়ে মাঠ মাতাচ্ছেন। তাঁদের জন্ম ও বেড়ে ওঠা বিভিন্ন দেশে হলেও ফিফার নাগরিকত্ব ও যোগ্যতা নীতি অনুযায়ী তাঁরা এখন হংকংয়ের নাগরিক। এশিয়ান কাপ বাছাই খেলতে গত সোমবার রাতে ঢাকায় আসা হংকং জাতীয় ফুটবল দলের ২৫ ফুটবলারের ১১ জনই বিভিন্ন দেশে বেড়ে ওঠা ফুটবলার।
ওই ফুটবলারদের মধ্যে পাঁচজন ব্রাজিলিয়ান—ডিফেন্ডার লুইস এদুয়ার্দো, মিডফিল্ডার ফার্নান্দো পেদ্রেইরা, ফরোয়ার্ড এভারটন কামারগো, জুনিনিয়ো ও স্টেফান পেরেইরা। আছেন ইউক্রেনিয়ান গোলরক্ষক ওলেক্সি শ্লিয়াকোটিন, রক্ষণভাগে স্কটিশ লিওন জোন্স, জাপানের ডিফেন্ডার শিনইচি চ্যান, মাঝমাঠে ক্যামেরুনের মহামা আওয়াল, ফ্রান্সের মিডফিল্ডার রাফায়েল মারকিস ও আক্রমণভাগে স্প্যানিশ মানোলো ব্লেদা।
৯ অক্টোবর এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে ঢাকার জাতীয় স্টেডিয়ামে স্বাগতিক বাংলাদেশের মুখোমুখি হবে হংকং। এরপর ১৪ অক্টোবর একই প্রতিযোগিতার ফিরতি লেগে বাংলাদেশ খেলবে হংকংয়ের মাটিতে। দুই ম্যাচে প্রতিপক্ষের এই প্রবাসীরাই হতে পারেন হামজা চৌধুরী–জামাল ভূঁইয়াদের সামনে বড় বাধা।
২০২৩ সালে হংকং জাতীয় দলে অভিষেক হয় ব্রাজিলিয়ান বংশোদ্ভূত কামারগোর। এর পর থেকে এখন পর্যন্ত দেশের হয়ে ১৯ ম্যাচে ১০ গোল ও ১৩ গোলে সহায়তা করেছেন। তাঁর ড্রিবলিং বেশ ভালো। আক্রমণগতির ঝড় তুলতে পারেন কামারগো। প্রতিপক্ষ গোলকিপারের চোখ ফাঁকি দিয়ে গোল করতে পারেন । শুধু গোল নয়, তাঁর খেলা তৈরি করার দক্ষতাও দারুণ। উইং থেকে রক্ষণ ভাঙার কাজটাও নিখুঁতভাবে করেন ৩৪ বছর বয়সী এই ফুটবলার।
আরেক উইঙ্গার আওয়াল কাউন্টার অ্যাটাক থেকে গোল করে গড়ে দিতে পারেন ম্যাচের ভাগ্য। এ ছাড়া লম্বা শট এবং ক্রসে আক্রমণ তৈরিতেও পারদর্শী তিনি। আওয়াল বাংলাদেশকে সমীহ করলেও জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। বাংলাদেশে আসার আগে হংকংভিত্তিক ইংরেজি সংবাদমাধ্যম সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টকে আওয়াল বলেন, ‘শুনেছি, বাংলাদেশে পারফর্ম করা খুব কঠিন, কিন্তু আমরা এবার শক্তিশালী দল এবং প্রস্তুত। আমরা সেখানে পূর্ণ শক্তি নিয়েই যাব এবং জয়ের জন্য সবকিছু করব...এশিয়ান কাপে যোগ্যতা অর্জনের জন্য আমাদের পয়েন্ট প্রয়োজন।’
আক্রমণভাগের আরেক প্রবাসী ফুটবলার জুনিনিয়োও বাংলাদেশকে হারাতে প্রস্তুত, ‘হংকংয়ের হয়ে খেলা প্রতিটা ম্যাচই গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশকে দুবার হারাতে পারলে তা আমাদের এগিয়ে যাওয়ার জন্য হবে দারুণ পদক্ষেপ।’
বাংলাদেশ দলেও প্রবাসী ফুটবলার কম নয়, সব মিলিয়ে বর্তমান দলে সাতজন। সর্বশেষ যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী জায়ান আহমেদকে দলে ডেকেছেন কোচ হাভিয়ের কাবরেরা। প্রথম বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ফুটবলার হিসেবে আসেন জামাল ভূঁইয়া। ২০১৩ সালে বাংলাদেশ জাতীয় দলে অভিষেক হয় ডেনমার্কে জন্ম নেওয়া এই ফুটবলারের। এরপর তারিক কাজী, শাহ কাজেম, হামজা চৌধুরী, ফাহামিদুল ইসলাম, শমিত সোমের মতো তারকারা লাল-সবুজ জার্সিতে খেলেছেন।