সাড়ে চার বছরের জেল হয়ে গেল দানি আলভেজের। ঝলমলে ফুটবল ক্যারিয়ারে বিশ্বকাপ ছাড়া মোটামুটি সব শিরোপাই জেতা ব্রাজিলিয়ান তারকা ধর্ষণের অভিযোগে শাস্তি পেলেন স্পেনের আদালতে। ক্লাব ও আন্তর্জাতিক ফুটবল মিলিয়ে মোট ৪৩টি শিরোপা জেতা আলভেজের ‘অন্ধকার অধ্যায়ের’ ঘটনার শুরু ২০২২ সালের ডিসেম্বরে বার্সেলোনার এক নৈশক্লাবে। সেই ডিসেম্বরের শুরুতেও ব্রাজিল দলের সঙ্গে বিশ্বকাপ খেলতে কাতারে ছিলেন ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সেরা এই রাইটব্যাক। এরপর কী দ্রুতই না বদলে গেল আলভেজের জীবন—
২ জানুয়ারি ২০২৩
স্পেনের বার্সেলোনার আদালতে দানি আলভেজের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের। এক নারী অভিযোগ করেন, ৩০ ডিসেম্বর বার্সেলোনার এক নৈশক্লাবে তাঁকে ধর্ষণ করেছেন ব্রাজিলিয়ান তারকা।
১০ জানুয়ারি ২০২৩
দানি আলভেজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে আইনি প্রক্রিয়া শুরু বার্সেলোনার আদালতে।
২০ জানুয়ারি ২০২৩
শাশুড়ির অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অংশ নিতে মেক্সিকো থেকে স্পেনে যাওয়া দানি আলভেজ আইনজীবীর পরামর্শে বিবৃতি দিতে বার্সেলোনা পুলিশের কাছে যান। পুলিশ গ্রেপ্তার করে ব্রাজিলিয়ান তারকাকে। পরে বার্সার এক আদালত আলভেজের জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে জেলে পাঠানোর নির্দেশ দেন। মেক্সিকান ক্লাব পুমাস আলভেজের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে।
২৩ জানুয়ারি ২০২৩
স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম কাদেনা এসইআর জানায়, তিন রকম জবানবন্দি দিয়েছেন দানি আলভেজ। এক—আলভেজ বলেছেন, অভিযোগকারী নারীকে তিনি চেনেন না। দুই—আলভেজ বলেছেন, অভিযোগকারী নারীর সঙ্গে তাঁর দেখা হয়েছে, কিন্তু কিছু ঘটেনি। তিন—আলভেজ বলেছেন, অভিযোগকারী নারীই তাঁর গায়ে ঢলে পড়েছেন। জবানবন্দিতে মিল না থাকায় তাঁকে নতুন করে জবানবন্দি দিতে বলা হয়।
৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
চতুর্থবারের মতো ভিন্ন রকমের জবানবন্দি দিলেন আলভেজ। প্রথমবারের মতো সেই নারীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপনের কথা স্বীকার করেন।
২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
দানি আলভেজকে বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত কারাগারে আটক রাখার সিদ্ধান্ত নেন বার্সেলোনার প্রাদেশিক আদালত। অভিযুক্ত আলভেজের স্পেন ছেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকার কারণে এ সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছে বলে জানান আদালত।
১৯ মার্চ ২০২৩
আলভেজের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদের ঘোষণা দেন তাঁর স্ত্রী হোয়ানা সাঞ্জ।
Also Read: এবার লিভারপুল–সিটি–আর্সেনালের ত্রিমুখী লড়াই
২১ জুন ২০২৩
জেলে বসেই স্প্যানিশ সাংবাদিক মায়কা নাভারোকে সাক্ষাৎকার দেন আলভেজ। যেখানে তিনি ধর্ষণের অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযোগকারী সেই নারীকে ক্ষমা করে দেওয়ার কথা বলেন। পাশাপাশি নিজের স্ত্রীর কাছে ক্ষমা চেয়েছেন।
২৩ নভেম্বর ২০২৩
দানি আলভেজের ৯ বছর কারাবাসের শাস্তি দাবি করেন স্পেনের কৌঁসুলিরা। ভুক্তভোগীর জন্য ১ লাখ ৫০ হাজার ইউরো ক্ষতিপূরণও দাবি করেন তাঁরা।
৫-৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
বার্সেলোনার আদালতে আলভেজের বিচারকাজ চলে। ভুক্তভোগী তরুণী তাঁর পরিচয় গোপন রাখতে পর্দার আড়ালে থেকে এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে সাক্ষ্য দেন। আলভেজ তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তবে আলভেজ অভিযোগ করা তরুণী সম্পর্কে বার্সেলোনার আদালতে বলেছেন, ‘যদি সে চলে যেতে চাইত, তাহলে যেতেই পারত। কারণ, সে সেখানে থাকতে বাধ্য নয়।’
২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
ধর্ষণের দায়ে আলভেজের সাড়ে চার বছরের জেল। এ ছাড়া ভুক্তভোগীকে দেড় লাখ ইউরো ক্ষতিপূরণ দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।