
থাইল্যান্ডের কাছে প্রীতি ম্যাচে ৩-০ গোলে হেরেছে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। হারতেই পারে। কারণ, খেলাটা হয়েছে থাইল্যান্ডের থনবুরি বিশ্ববিদ্যালয় মাঠে। থাইল্যান্ড বাংলাদেশের চেয়ে ৫১ ধাপ এগিয়ে। ফলে এই হারে ভেঙে পড়ার কিছু নেই। বরং আগামী মার্চে এশিয়ান কাপের চূড়ান্ত পর্বের জন্য ভালো শিক্ষা হতে পারে।
কিন্তু ম্যাচ শেষে বেজায় ক্ষুব্ধ বাংলাদেশ কোচ পিটার বাটলার। প্রথমত, তিনি একটা বিশ্ববিদ্যালয় মাঠে এমন ম্যাচ আয়োজন নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন, ‘আমি জানি না এটা টায়ার ওয়ান প্রীতি ম্যাচ হিসেবে ধরা যাবে কি না, কারণ আমরা একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠে খেলেছি, যেখানে (ম্যাচ খেলার মতো) যথেষ্ট আলো ছিল না।’
এরপরই তিনি ক্ষোভ উগরে দেন দলের কয়েকজন খেলোয়াড়ের ওপর, ‘আমার মতে, এই ম্যাচ থেকে আমরা অনেক ইতিবাচক বিষয় নিয়েছি। কিন্তু আমি মনে করি কয়েকজন মেয়ে ভুল মনোভাব নিয়ে এসেছিল। আমি এই ঢিলেঢালা মনোভাব সহ্য করব না। কেউ যদি আমার জন্য খেলতে চায়, দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে চায়, তারা এমন মনোভাব নিয়ে আসতে পারবে না, যা জাতীয় দলের জন্য অনুপযুক্ত।’
বাটলার আরও বলেন, ‘ম্যাচটি জাতীয় দলের ম্যাচের মতো মনে হয়নি, এটা এমন একটি ম্যাচের মতো মনে হয়েছিল যেখানে উন্নতি দরকার। আমি মনে করি আমরা যখন এমন ম্যাচ আয়োজন করি, তখন আমাদের অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে এবং নিশ্চিত করতে হবে সবকিছু সঠিকভাবে হচ্ছে।’
বাংলাদেশ দল জিতুক বা হারুক, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো এটা একটি শেখার সুযোগ এবং সম্মানের ব্যাপার। এমনটা জানিয়ে বাংলাদেশ কোচ কয়েকজন খেলোয়াড়ের নাম উচ্চারণ করেন। সেই খেলোয়াড়েরা সবাই তরুণ। বাটলার বলেন, ‘আমরা অনেক তরুণ মেয়েকে সুযোগ দিয়েছি—শিখা, নবিরন, জয়নব, সাগরিকা, মুনকি। রিপা, হালিমাদেরও আমরা সুযোগ দিয়েছি।’
হারের মধ্যেও কখনো কখনো বেশি শেখা যায়, এই আপ্তবাক্য জপে বাটলারের সংযোজন, ‘আমি এমন খেলোয়াড়দের খেলাতে আনন্দ পাই যারা পরিচিত নাম নয়, কিন্তু সঠিক মনোভাব নিয়ে আসে।’ এরপর তাঁর সংযোজন, ‘যারা কঠোর পরিশ্রম করতে চায় এবং নিজেকে উন্নত করতে চায়, তাদের আমি খেলতে দেব। যারা আমাকে পরীক্ষা করতে চায়, করুক। আগেও হয়েছে এবং আবার হলে আমি দৃঢ় থাকব। আমি কখনোই অসম্মান বা খারাপ আচরণ সহ্য করব না।’
কাদের উদ্দেশ্য করে বাটলার তোপ দেগেছেন, তা হয়তো অনুমান করা যায় তাঁর শেষের কথাগুলোয়। এ বছর জানুয়ারিতে ১৮ জন খেলোয়াড় বাটলারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিলেন। বিদ্রোহীদের মধ্যে ঋতুপর্ণা চাকমা, মনিকা চাকমা, রুপনা চাকমা, তহুরা খাতুন, শামসুন্নহার জুনিয়র-সিনিয়র, মারিয়া মান্দারা আজ একাদশে ছিলেন।