পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) আর্থিক অবস্থা এমনিতেই খুব একটা ভালো নয়। এ বছরের এশিয়া কাপ টি-টোয়েন্টি আসর অনিশ্চয়তার মধ্যে ঝুলে থাকায় আরও বড় ধরনের আর্থিক ধাক্কা খাওয়ার শঙ্কায় আছে পিসিবি।
বোর্ডের বাজেট অনুযায়ী চলতি অর্থবছরে আইসিসি ও এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল (এসিসি) থেকে প্রায় ৮৮০ কোটি রুপি রাজস্ব আসার কথা, বাংলাদেশের মুদ্রায় যা প্রায় ৩৭৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে কেবল আইসিসি থেকেই আসার কথা ২ কোটি ৫৯ লাখ ডলার, যা পাকিস্তানি মুদ্রায় প্রায় ৭৭০ কোটি রুপি (প্রায় ৩২৮ কোটি টাকা)। এশিয়া কাপ থেকে আরও ১১৬ কোটি রুপি (প্রায় ৫০ কোটি টাকা) ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক ক্রিকেট আয়োজনে ৭৭ লাখ রুপি পাওয়ার আশা ছিল।
পিসিবির এক নির্ভরযোগ্য সূত্র ভারতীয় বার্তা সংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছে বৈশ্বিক ও মহাদেশীয় টুর্নামেন্ট কতটা গুরুত্বপূর্ণ তাদের জন্য, ‘আইসিসি আর এশিয়া কাপ—এই দুই উৎস থেকে রাজস্ব আসা পাকিস্তান ক্রিকেটের আর্থিক স্বাস্থ্যের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’
তবে আগামী সেপ্টেম্বরে নির্ধারিত সময়ে এশিয়া কাপ হবে কি না, তা নিয়ে এখন চরম অনিশ্চয়তা। হলেও ভেন্যু বদলে যেতে পারে। প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্কের টানাপোড়েনের প্রভাবই পড়েছে এশিয়া কাপে। এ সপ্তাহেই এশিয়া কাপের সবকিছু চূড়ান্ত করতে ঢাকায় এসিসির বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। ভারত ও আরও কয়েকটি দেশ বাংলাদেশে আসতে আপত্তি জানানোয় অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে সেই বৈঠকও।
এমন সময় পিসিবি চেয়ারম্যান ও দেশটির কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নাকভি গত সপ্তাহে সিঙ্গাপুরে আইসিসি মিটিংয়ে যাননি, যোগ দিয়েছিলেন ভার্চ্যুয়ালি। পিসিবির সিইও সুমায়ের আহমেদ সরাসরি মিটিংয়ে গিয়েও ভারত, শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তানসহ অন্যান্য বোর্ডের কাছ থেকে এসিসির ২৪ জুলাই ঢাকায় ডাকা বৈঠকে যোগ দেওয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক সাড়া পাননি।
পিসিবির এক কর্মকর্তা জানান, ঢাকায় বৈঠক ডাকার বিষয়টিতে ভারত, শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান, ওমানসহ বেশ কয়েকটি সদস্য বোর্ডই আপত্তি জানায়। ফলে সেপ্টেম্বরে নির্ধারিত সময়ে এশিয়া কাপ হওয়া নিয়েও শঙ্কা তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে বিসিসিআই ঢাকায় প্রতিনিধি পাঠাতে রাজি নয়।
এসিসির চেয়ারম্যান এখন নাকভিই। মূলত ভারতেই হওয়ার কথা ছিল সেপ্টেম্বরে এশিয়া কাপের আসর। কিন্তু কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত-পাকিস্তান অচলাবস্থার জেরে টুর্নামেন্ট সংযুক্ত আরব আমিরাতে সরিয়ে নেওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
এদিকে চলতি অর্থবছরের বাজেটে পিসিবি পরবর্তী পাকিস্তান সুপার লিগ থেকে ২৫০ কোটি রুপি আয়ের হিসাবও ধরে রেখেছে। পুরো বাজেট ধরা হয়েছে প্রায় ১ হাজার ৮৮০ কোটি রুপি (প্রায় ৮৫৯ কোটি টাকা)।
পিসিবির প্রত্যাশিত আয়ের তালিকায় এশিয়া কাপ থেকে অর্থ না পেলে তাদের আর্থিক চাপ আরও বেড়ে যাবে বলেই আশঙ্কা।
শুধু কি পাকিস্তান, এশিয়া কাপ শেষ পর্যন্ত না হলে পাকিস্তানের মতোই রাজস্ব হারাবে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কাও।